বিজ্ঞানের যুগেও এখনও গ্রামে গ্রামে অশিক্ষার অন্ধকার, এখনও ঝাড়ফুঁক-জাদুটোনার দুনিয়ায় বাস করেন বহু মানুষ। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ মালদহে (West Bengal Malda District) দুই শিশুর মৃত্যু! পুলিশ জানিয়েছে, গ্রামের স্থানীয় এক জঙ্গলে শুক্রবার বিকেলে খেলতে যায় কয়েকটি শিশু। খেলা শেষে বাড়ি ফেরার পর হঠাৎই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে তাঁরা। কিছুক্ষণ পরে ওই শিশুরা ধীরে ধীরে অজ্ঞান হয়ে যায়। কিন্তু সেই সময় তাঁদের হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে বাড়িতে ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক (Sorcery Practices) করায় শিশুদের বাবা-মা। ফলে অবস্থা আরও গুরুতর হয়, সুস্থ হওয়া তো দূর অস্ত, একটু পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ২ শিশু। অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য ২ শিশুকে, বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে তাঁরা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে যে, জঙ্গলের মধ্যে কোনও বিষাক্ত ফল খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা।
ছাত্রীদের ঋতুস্রাব হয়েছে কিনা পোশাক খুলে তার প্রমাণ দিতে হল গুজরাটের কলেজে!
শুক্রবার রাতে মালদহের গাজোল থানা এলাকার একটি গ্রামে ওই ঝাড়ফুঁকের ঘটনা ঘটে যা অকালে প্রাণ কেড়ে নিল ২ শিশুর। গোটা ঘটনাটি কীভাবে ঘটল তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
"নিহত দু'টি ছেলের বয়স যথাক্রমে ৫ ও ৭ বছর এবং ৩ ও ৬ বছর বয়সী দুটি মেয়েকে বর্তমানে মালদহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং মৃত্যুর কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি", বলেন মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া।
Coronavirus: আক্রান্তদের সঙ্গে জাহাজে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারের চেষ্টা
ঘটনার পর স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস শনিবার ওই গ্রামে যান। শিশুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুদেরও দেখতে যান তিনি। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "কুসংস্কার থেকেই এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। না হলে এমন হতে পারে! শিশুদুটি প্রাণে বেঁচে যেতে পারত যদি ওঁদের বাবা-মায়েরা ওঝার কাছে না নিয়ে গিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেন। আমি গ্রামবাসীদের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেছি, ওনাদের বুঝিয়েছি এই ধরনের কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাস থেকে সরে আসার জন্যে"।
ওই গ্রামে একটি বিশেষ চিকিৎসক দলও পাঠানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানিয়েছেন।