টুইটারে 'কুরুচিকর পোস্ট' করায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক
হাইলাইটস
- যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে ট্যুইট করে গ্রেফতার হয়েছেন প্রশান্ত কানোজিয়া
- স্ত্রী জানিয়েছেন, আজও প্রশান্তকে লখনৌয়ের জেলেই রাখা হবে
- বিকোধী দলের মতে, যোগী আদিত্যের এই পদক্ষেপ "অনৈতিক"
নিউ দিল্লি: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে কুরুচিকর পোস্ট করায় গতকাল দিল্লি থেকে গ্রেফতার হয়েছেন সাংবাদিক প্রশান্ত কানোজিয়া (Prashant Kanojia)। আজ তাই নিয়ে এনডিটিভি-র (NDTV) কাছে মুখ খুললেন তাঁর স্ত্রী জগীশা অরোরা (Jagisha Arora)। শনিবার সকালে এক বন্ধুর ফোনে ঘুম ভাঙে কানোজিয়া দম্পতির। ফোনে তিনি বলেন, সাদা পোশাকের দুই ব্যক্তি সকালে থেকেই প্রশান্তের নাম ধরে এলাকায় খোঁজ খবর করছে I
এরপরেই দুপুরে সাদা পোশাকের দুই ব্যক্তি এসে আটক করে প্রশান্তকে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় তাঁকে।
প্রশান্তের স্ত্রীর কথায়, "ভালো করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে গেল পুরো ব্যাপারটা। বাড়ির নীচে ওদের সঙ্গে কথা বলার পর মিনিট পাঁচেক পরে প্রশান্ত ওপরে এসে বলেন, পোশাক পাল্টে তাঁকে যেতে হবে অচেনা ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে।"
দিল্লি পশ্চিমের বিনোদ নগরের বাড়ি থেকে দুই ব্যক্তি প্রশান্তকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। প্রশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ট্যুইটারে আপত্তিজনক মন্তব্য পোস্ট করেছেন যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে লখনৌয়ের হজরতগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সাব ইন্সপেক্টর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ২৬ বছরের সাংবাদিক গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। প্রশান্তের বিরুদ্ধে এই সাব ইন্সপেক্টরের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কানোজিয়া একটি ভিডিও টুইটার ও ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সেই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছিল, এক মহিলা যোগী আদিত্যনাথের অফিসের সামনে সংবাদমাধ্যমের সামনে জানাচ্ছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন।
আপাতত তিনি লখনৌ জেলেই বন্দি।
জগীশা এবিষয়ে জানান, "লখনৌ থানার পুলিশ গতকাল রাত সাড়ে দশটার সময় ফোনে প্রশান্তের সঙ্গে কথা বলিয়েছেন। প্রশান্ত জানিয়েছেন, জেলে কোনও অসুবিধে হচ্ছে না তাঁর। জগীশাকেও তিনি নিশ্চিন্তে থাকার পরামর্শ দেন।"
একই সঙ্গে তিনি জানান, ছেলের গ্রেফতারির খবর পাওয়ার পরেই ভেঙে পড়েছেন প্রশান্তের মা-বাবা। তাঁদেরকে তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, খুব তাড়াতাড়ি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে আগের মতো।
এদিকে পুরোঘটনাকেই অনৈতিক এবং আইবিরোধী বলে ব্যাখ্যা করেছেন কংগ্রেস নেতা এবং প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর কথা, পুরো ঘটনাই সাজানো। আইনের অপপ্রয়োগ করছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।এভাবেও কারওর বাক-স্বাধীনতা বা স্বাধীন মত প্রকাশের ক্ষমতাকে দাবিয়ে রাখা যায় না। আলিবাগ হাই কোর্টের কাছে তাই তাঁর অনুরোধ, পুরো বিষয়টির খুঁটিনাটি জেনে তারপর যেন রায় দেন বিচারক।
গতকাল, প্রশান্তকে গ্রেফতারের প্রতিবাজ জানিয়ে তাঁর পরিবারককে সমবেদনা জানায় দ্য অডিটর গিল্ড (The Editor Guild) । তাঁদের দাবি, বিষয়টি খতিয়ে না দেখেই এই পদক্ষেপ উত্তরপ্রদেশ সরকারের। এভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন যোগী আদিত্যনাথ।