COVID-19 Pandemic: করোনা আক্রান্তের বিচারে আমেরিকা ও ব্রাজিলের পরেই তৃতীয়তে রয়েছে ভারত
হাইলাইটস
- ভারতে করোনা সংক্রমণ লাগাতার বেড়ে চলেছে
- সংক্রমণের বিচারে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে ভারত
- তবে চিকিৎসা সহায়তায় বহু মানুষ সুস্থও হয়ে উঠছেন এদেশে
নয়া দিল্লি:
শনিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক দেশের যে করোনা চিত্র (COVID-19 Pandemic) তুলে ধরেছে তা দেখে শিউরে উঠতে হয়। পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪,৮৮৪ জন নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে ভারতে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট ১০.৩৮ লক্ষ জন আক্রান্ত হয়েছে এই রোগে (Coronavirus)। শুধু শুক্রবারই সারা দেশে ৬৭১১ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা ভাইরাস। এর ফলে এদেশে কোভিড-১৯ এর কারণে মৃতের সংখ্যা (Coronavirus Deaths India) বেড়ে ২৬,২৭৩ এ পৌঁছেছে । শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশে করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২.৯৩ শতাংশে। করোনা আক্রান্তের বিচারে বিশ্বের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলের পরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।
দেখে নিন দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ১০ টি তথ্য:
শুক্রবার মহারাষ্ট্রে নতুন করে আরও ৮,৩০৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মুম্বইয়েই নতুন ১,২১৪ জন করোনা রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। দেশের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই রাজ্যের মধ্যে এখন থানে এলাকায় খুব দ্রুতহারে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সেখানে ৩,৮৮৪ জন মানুষ এই মারণ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ অত্যন্ত দ্রুতহারে ছড়াচ্ছে। শহর কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৩ জন নতুন রোগীর সন্ধান মিলেছে। গোটা রাজ্যে একদিনে মোট ১,৮৯৪ জন করোনা পজিটিভ হিসাবে ধরা পড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুও, শুক্রবার মোট ২৬ জনের প্রাণ কেড়েছে কোভিড- ১৯ ভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে যথেষ্ট উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্য সরকারের। সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে দেশের অন্য ৬টি শহর অর্থাৎ দিল্লি, চেন্নাই, আমেদাবাদ, মুম্বই, পুনে এবং নাগপুরে থেকে কলকাতায় বিমান অবতরণের নিষেধাজ্ঞা ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, তাঁর রাজ্যে গোষ্ঠী সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের কয়েকটি উপকূলীয় অঞ্চলে ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিনারাই বিজয়ন। তাই নতুন করে বহু এলাকায় কড়া লকডাউন জারি করা হয়েছে। তবে তিনি একথাও জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার কোভিড-১৯ সংক্রমণের দ্রুত বৃদ্ধি রুখতে সবরকমের চেষ্টা চালাচ্ছে।
শুক্রবার অন্ধ্রপ্রদেশে কোভিড -১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৪০,০০০ পেরিয়ে গেছে। কারণ গত ২৪ ঘণ্টায় সেরাজ্যে ২,০৬২ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস বাসা বেঁধেছে বলে প্রমাণ মিলেছে। ফলে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪০,৬৪৬ জন। এর মধ্যে এখনও করোনায় ভুগছেন ১৯,৮১৪ জন এবং ২০,২৯৮ জনকে সুস্থু বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। তিনি বলেছেন, সংক্রমণ যদি এই হারে বাড়তে থাকে তবে আগামী ১০ অগাস্টের মধ্যে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লক্ষ পেরিয়ে যাবে। এখনও পর্যন্ত ভারতে ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে।
গোয়া সরকার ১০ অগাস্ট পর্যন্ত রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত 'জনতা কারফিউ' ঘোষণা করেছে এবং শুক্র, শনি ও রবিবার তিন দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন যে, বহু মানুষ "পার্টি করছেন, যখন তখন রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন"। সেই সব রুখতেই "সচেতনতা এবং সংবেদনশীলতা" বাড়াতে এই পদক্ষেপ।
করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ২৩ মার্চ থেকে ভারতে আন্তর্জাতিক যাত্রী বিমানগুলোর ওঠানামা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। যদিও পরে ২৫ মে থেকে কিছু অভ্যন্তরীণ বিমান ফের চালু হয়েছে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী বৃহস্পতিবার বলেন যে, ভারত ফ্রান্স এবং আমেরিকার সঙ্গে বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা চালুর লক্ষ্যে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে জার্মানি এবং ব্রিটেনের সঙ্গেও একই রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, এপ্রিলের শুরুতে যেভাবে কোভিড-১৯ সংক্রমণ দৈনিক হারে বাড়ছিল তা এখন অনেকটাই কমেছে। এপ্রিলের শুরুতে ওই হার ছিল ৩১.২৮ শতাংশ, সেখান থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি এই হার ৩.৪৯ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৩ মিলিয়নে পৌঁছে গেছে এবং সেখানে মোট ১,৩৮,২০১ জন মারা গেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চিন থেকে সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। সব মিলিয়ে ৫.৮৯ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। বিশ্বের অন্তত ১.৩৮ কোটি মানুষ অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের কবলে পড়েছেন।
Post a comment