Varanasi: বারাণসী আসলে একখণ্ড আদি ভারতবর্ষ
বারাণসী (Varanasi) না গেলে আসলে ভারতবর্ষকে ঠিক চেনা হয় না। ভারতের প্রাচীনতম শহর, ভারতের এক সনাতন ঐতিহ্য, এক নিটোল বিশ্বাস আর আস্থার শহর এই বারাণসী। গঙ্গার তীরে এই শহরে একা ঘুরে বেড়ানো যায়, ঘুরে বেড়ানো যায় দল বেঁধে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গঙ্গার ঘাটে বসে শহরকে, মানুষকে অনুভব করতে চাইলে ছুটি জোগাড় করেই বেরিয়ে পড়ুন বারাণসী। সরু রাস্তা ধরে ধরে পর্যটক এবং তীর্থযাত্রীদের মধ্য দিয়ে নিজের মতো পথ তৈরি করে শহর চেনার উন্মাদনাই আলাদা। বেনারসী শাড়ি, জটিল নকশার কার্পেট, গহনা, মালাই জিলিপি, কিংবদন্তি বেনারসী পান থেকে শুরু করে নিভৃতে নদীর তীরে পরাবাস্তব এক সূর্যাস্ত বা সূর্যোদয়। বারাণসী আসলে একখণ্ড আদি ভারতবর্ষ।
বারাণসীতে ভ্রমণের পরিকল্পনায় চারটে বিষয় মাথায় রাখতেই হবে আপনাকে:
পরীক্ষার পর ছোট্ট ট্রিপ? স্বল্প বাজেটে-অল্প ছুটিতে গন্তব্য হোক আনকোরা সৈকত চাঁদিপুর
১. মন্দির
পবিত্র শহর বারাণসী কাশী নামেও পরিচিত। এই শহরের প্রতিটি কোণে কোণে অসংখ্য মন্দির। এখানে বেশ কিছু মন্দির রয়েছে, বিশেষত গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন যার ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যের দিক থেকেও অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। নাগারা ঘরানার নকশা চোখ টানবেই আপনার। সমস্ত মন্দিরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। এর সোনালি গম্বুজগুলির জন্য এই মন্দির স্বর্ণ মন্দির হিসাবেও পরিচিত। সময় হাতে নিয়ে অবশ্যই ঘুরে আসুন দুর্গা মন্দির।
২. ঘাট
মোট ৮৪ টি ঘাট রয়েছে বারাণসীর গঙ্গার ধারে। ভক্তদের বিশ্বাস পবিত্র গঙ্গাজলে স্নান যাবতীয় জাগতিক পাপকে ধুয়েমুছে দেয় ও মুক্তিলাভ করতে সাহায্য করতে পারে। ঘাটের ভিড় এড়িয়ে সারাজীবনের স্মরণীয় অভিজ্ঞতা পেতে চাইলে কাকভোরে পৌঁছে যান ঘাটে। গঙ্গায় সকালের নৌকা বাইচ এবং সন্ধ্যায় দশাশ্বমেধ ঘাটে দর্শনীয় আরতি দেখা না হলে বারাণসী ভ্রমণ সার্থক হয় না। অন্যান্য জনপ্রিয় ঘাটের মধ্যে রয়েছে আসসি ঘাট এবং মণিকর্ণিকা ঘাট।
দশাশ্বমেধ ঘাটে আরতির অনুষ্ঠান
৩. সারনাথ ভ্রমণ
যদি ভিড় থেকে দূরে যেতে চান বা শান্তি চান তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসতেই হবে সারনাথ। বারাণসী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ তীর্থস্থানটি। বলা হয় যে, ভগবান বুদ্ধ জ্ঞানার্জনের পরে প্রথম বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা দিয়েছিলেন এখান থেকেই। চারপাশে অনেকগুলি সুন্দর স্তূপ এবং মন্দির রয়েছে, একবার সারনাথ না ঘুরলে বারাণসী ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয়না।
৪. রামনগর দুর্গ
গঙ্গা নদী এবং ঘাটের দুরন্ত ভিউ পেতে হলে মোগল ঘরানায় তৈরি এই দুর্গটি সম্ভবত সেরা জায়গা। ১৭৫০ এর দশকে রাজা বলবন্ত সিং এই দুর্গ নির্মাণ করেন। বেলেপাথরের এই বিশাল স্থাপত্য এখনও বেশ আকর্ষণী। যদিও বাইরে থেকে বেশ জরাজীর্ণ চেহারাও ধরা পড়বেই চোখে। দশেরার সময় সুন্দর করে সাজানো হয় এই ফোর্ট। বিশেষত রামলীলা বড় করে অনুষ্ঠিত হয় এখানে। দুর্গে যেতে হলে সকাল সকাল ঘাট থেকে নৌকা করে গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণ করে এসে পৌঁছাতে পারেন এই স্থাপত্যে। শহর থেকে সড়ক পথে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে রামনগর দুর্গ।