Coronavirus in India: দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাগাতার বেড়ে চলেছে
হাইলাইটস
- কেন্দ্রীয় স্বাস্থমন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত ১২,৩৮০ জন
- গত ২৪ ঘণ্টায় ওই ভাইরাস প্রাণ কেড়েছে ৩৭ জনের
- ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪১৪ জনের
নয়া দিল্লি: ভারতে (Coronavirus in India) একের পর এক মানুষের প্রাণ নিচ্ছে করোনা ভাইরাস। এদেশে করোনার (Coronavirus) শিকার মোট ৪১৪, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১২,৩৮০। ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে দেশের ৬৪০টি জেলার মধ্যে ১৭০টি জেলাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে দেশের ৬টি মেট্রো শহর এবং আরও অনেকগুলো বড় শহর। “অতি সংক্রমিত” এলাকার তালিকায় রয়েছে মোট ১২৩টি জেলা, তার মধ্যে দিল্লির ৯টি জেলা রয়েছে। তালিকায় রয়েছে কলকাতা, মুম্বই, বেঙ্গালুরু গ্রামীণ, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, জয়পুর, এবং আগ্রার বিভিন্ন অংশ। দেশ বা রাজ্যের ৮০ শতংশ সংক্রমিত জেলা বা শহরকে “হটস্পট এলাকা” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যে সমস্ত জায়গায় বেশি সংখ্যক সংক্রমণ ছড়িয়েছে, অর্থাৎ ৪ দিনের কম সময়ে দ্বিগুণ হয়েছে সংক্রমণের হার, সেগুলি এই তালিকায়।
৬টি মেট্রো শহরের মধ্যে রয়েছে দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদ, এগুলিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশি।
সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন সংক্রমণ ওই জেলাগুলির বাইরে না ছড়াতে পারে সেদিকে নজর রাখতে। ওই সব হটস্পট অঞ্চলগুলিতে বিশেষ দল থাকবে। সেই দল কেবল COVID- 19 সন্দেহভাজনদেরই নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জার চিহ্ন থাকা ব্যক্তি কিংবা কারও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকলেও তাঁদের করোনা পরীক্ষা করা হবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, হটস্পটগুলিতে আগামী ২৮ দিন পর্যন্ত সমস্ত বিধিনিষেধ জারি থাকবে যতদিন না সমস্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠছে কিংবা নতুন করে কেউ সংক্রমিত হওয়া বন্ধ হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় হটস্পটগুলি ৩ কিমি ব্যাসার্ধে এবং বাফার অঞ্চলে (কমলা জোন) ৭ কিমি ব্যাসার্ধে থাকবে।
রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত আরও ১৭, মোট সংক্রমিত ১৩২ জন
মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, রাজ্য ও জেলা প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই সংক্রমণের উৎসের ব্যাপারে। তবে শহরাঞ্চলে যে এই বিষয়টি খুঁজে বের করা বেশ কঠিন তাও বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
পাশাপাশি রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোথায় কোথায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে সে ব্যাপারে একটি নিয়মিত রিপোর্ট রাখতে। এর উপর ভিত্তি করেই হটস্পটের তালিকা বদল করা হবে। এটি একটি ক্রমাগত পদ্ধতি বলে জানানো হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশ জুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দিলেও কিছু কিছু এলাকায় এই বিধিনিষেধ কিছুটা শীথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিয়েছে ৩ মে পর্যন্ত গণপরিবহণ ব্যবস্থা চালু হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। পাশাপাশি লকডাউন চলাকালীন যে কোনও ধরণের জমায়েত পুরোপুরি নিষিদ্ধ, জানিয়েছে সরকার।
যে যে এলাকায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রায় ছড়ায়নি বললেই চলে, সেখানে সেখানে কিছু কিছু ক্ষেত্রকে লকডাউনের আওতার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে মোদি সরকার স্পষ্টভাবে এটাও বলে দিয়েছে যে, করোনা সংক্রমণপ্রবণ হটস্পটগুলোত লাগু থাকবে লকডাউনের কড়া নিষেধাজ্ঞা, কঠোর নজরদারি চালাবে প্রশাসন।
করোনা নিয়ে কেন্দ্রের লাল তালিকায় ৬টি মেট্রো শহর, এবং অন্যান্য শহর
২০ এপ্রিল থেকে ছাড় দেওয়া হবে আইটি, ই-কমার্স ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিবহণের ক্ষেত্রে। ছাড় থাকছে কৃষিকাজ ও কৃষি বিপণন এবং তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কাজ, নির্দিষ্ট কিছু শিল্প ও ডিজিটাল অর্থনীতিতে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সাধারণ পণ্য, দুটির পরিবহণেই মিলবে ছাড়।
ছাড় থাকছে মাছ, দুধ, দুগ্ধজাত পণ্য, হাঁস-মুরগি পরিবহণ ও বিক্রিতে। চা, কফির উৎপাদন ও সরবরাহ, এবং রবার বাগানের কাজকেও লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে। গ্রামীণ অঞ্চলে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের কাজ এবং গ্রামাঞ্চলে রাস্তা, সেচ প্রকল্প, ভবন, শিল্প প্রকল্প নির্মাণের কাজেও মিলবে ছাড়।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কয়লা, খনিজ, তেল উৎপাদন করা যাবে। আরবিআই, অন্যান্য ব্যাংক, এটিএম, সেবি ও বীমা সংস্থাগুলির কাজও চলবে। পাশাপাশি ই-কমার্স, আইটি এবং আইটি-সংক্রান্ত পরিষেবা, হার্ডওয়্যার, প্রয়োজনীয় পণ্য এবং প্যাকেজিং শিল্পের কাজও শুরু করা যাবে ২০ এপ্রিল থেকে। খোলা রাখা যাবে ডেটা ও কল সেন্টারগুলোও।
অন্যদিকে পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বিমান, রেল ও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বড় শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমগুলোও বন্ধ থাকবে। বন্ধ রাখতে হবে হোটেল সংক্রান্ত ব্যবসা। সিনেমা হল, থিয়েটার, শপিং কমপ্লেক্সগুলোরও ঝাঁপ বন্ধ রাখার নির্দেশ। এছাড়া আপাতত আগামী ৩ মে লকডাউন চলা পর্যন্ত যে কোনও ধরণের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। বন্ধ থাকবে ধর্মীয় স্থানগুলোও।
এদিকে বুধবার দেশের শীর্ষ চিকিৎসা সংস্থা ইন্ডিয়ান মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (ICMR) জানিয়েছে যে চিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে COVID-19 মহামারির উৎস আসলে বাদুড়। তাদের থেকেই ওই রোগ মানুষের দেহে ছড়িয়েছে।
আইসিএমআরের প্রধান বিজ্ঞানী ডঃ রমন আর গঙ্গাখেড়কর বলেছেন, "চিনের একটি গবেষণা অনুসারে, মনে করা হচ্ছে যে এই করোনা ভাইরাস বাদুড়ের মধ্যে থেকেই মানুষের শরীরে এসেছে"। "এমনও একটি সম্ভাবনা রয়েছে যে প্রথমে ওই ভাইরাস বাদুড়ের থেকে প্যাঙ্গোলিনের শরীরে ছড়ায়। যেহেতু চিনে পাঙ্গোলিন খাওয়া হয় তাই মনে করা হচ্ছে সেখান থেকেও এটি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে", বলেন তিনি।