প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেকে চিঠি লিখে শিশুমৃত্যু নিয়ে তার বক্তব্য জানায় বারো বছরের মেয়েটি।
হাইলাইটস
- ৩০ জানুয়ারি মারা গিয়েছে শাহিনবাগের এক প্রতিবাদীর ছোট্ট ছেলে
- সেই মৃত্যু নিয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখল বারো বছরের এক মেয়ে
- তার দাবি, ওই শিশুমৃত্যুর জন্য তার অভিভাবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক
নয়াদিল্লি: চার মাসের ছোট্ট ছেলেটাকে শাহিনবাগের (Shaheen Bagh) সিএএ-বিরোধী অবস্থান বিক্ষোভে প্রতিদিনই নিয়ে আসত তার বাবা আর্শাদ ও মা নাজিয়া। হাস্যমুখ শিশুটিকে ভালবাসত সবাই। কিন্তু ৩০ জানুয়ারি তাকে শেষবারের মতো দেখতে পায় সবাই। দিল্লির ভয়ঙ্কর শীতের করাল থাবা তারপরই কেড়ে নেয় চার মাসের মহম্মদ জাহানের প্রাণ (Shaheen Bagh Baby's Death)। সন্তানহারা মা নাজিয়া NDTV-কে বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা আমাদের অন্য দুই সন্তানের বলিদান দিতেও প্রস্তুত। আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।'' তাঁর এমন কথা শুনে চমকে উঠেছিল ১২ বছরের সাহসিকতার পুরস্কার বিজয়ী এক বালিকা। সে প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেকে চিঠি লিখে জানায়, বিক্ষোভ অবস্থানে শিশুদের নিয়ে আসা বন্ধ করার পিটিশন দিতে চায় সে। তার আরও দাবি, এই নিয়ে তদন্ত হোক এবং ওই অভিভাবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
জেন গুণরতন সাদাভার্তে নামের সেই বালিকা মুম্বইয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সে জানিয়েছে, ওই ছোট্ট শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ছোট শিশুরা জানেও না প্রতিবাদ কী। তার কথায়, ‘‘আমি দেখলাম এক চার মাসের শিশু মারা গিয়েছে, তাও মর্মান্তিক ভাবে। এতে ওর স্বাভাবিক ন্যায়বিচার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ওর বেঁচে থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং মানবাধিকারও লঙ্ঘিত হচ্ছে। আমি চিঠিতে প্রধান বিচারপতিকে পিটিশন জমা দিয়েছি।''
মহম্মদ জাহানের বাবা-মা জানাচ্ছে, সে কখনওই এর আগে অসুস্থে হয়ে পড়েনি। নাজিয়া জানাচ্ছেন, ‘‘১৮ ডিসেম্বর থেকে আমরা ওকে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু সেই রাতে আমরা দেখি ও ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে। শাহিনবাগ থেকে ঘরে ফিরে আমি ওর শরীরে তেল মালিশ করে ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিই। সকালে ও আর জেগে ওঠেনি।''
শিশুটির বাবা আর্শাদ ই-রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা একটা কারণের জন্য করা হচ্ছে এবং আমার কখনও মনে হয়নি ওকে নিয়ে আসাটা ভুল হচ্ছে। আমি নাজিয়াকে বলতাম বাড়িতে ওকে রেখে এলে ও অশান্ত হয়ে উঠবে। দুধ চাইবে। তার চাইতে ওকে সঙ্গে নিয়ে আসাই ভাল।''
শয়ে শয়ে মানুষ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শাহিনবাগে অবস্থান বিক্ষোভে উপস্থিত থাকছেন মাসাধিক কাল ধরে।