নেটিজেনরা প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ভিকিকে।
ঘর ছেড়েছিলেন ১১ বছর বয়সে। লক্ষ্য ছিল দিল্লি (Delhi) গিয়ে একটা নতুন জীবন পাবেন। কিন্তু তা হয়নি। ট্রেনে জল বিক্রি করে ফুটপাথে দিন গুজরান। সেই জায়গা থেকে ‘ফোর্বস এশিয়া'-র (Forbes Asia) ‘৩০ আন্ডার ৩০' তালিকায় নাম তোলা। রূপকথাকে হার মানায় ভিকি রায়ের (Vicky Roy) কাহিনি। ফেসবুক (Facebook) পেজ ‘হিউম্যানস অফ বম্বে'-তে নিজের জীবনের কাহিনি শেয়ার করেছেন ভিকি। আর তা মন জিতেছে হাজারো মানুষের। ছোট্ট ভিকিকে কখনও ধাবায় বাসন ধোয়ার কাজও করতে হয়েছে বেঁচে থাকতে। জীবনধারণ কতটা কঠিন টের পেয়েছিলেন হাড়ে হাড়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক চিকিৎসকের সৌজন্যে এক এনজিও-র সংস্পর্শে আসা।
‘সালাম বালাক' নামের সেই এনজিও-র দৌলতে দৈনিক তিনবেলার খাওয়া, পোশাক ও মাথার উপর ছাদের বন্দোবস্ত হয়। স্কুলেও ভর্তি করানো হয় ভিকিকে। বদলে যায় জীবনের রূপরেখা।
মেয়ের পড়াশোনা কলেজে ফিরিয়ে আনল বাবাকে! মেয়ের জুনিয়র তিনি, সত্যিই?
এই সময়ই এক ব্রিটিশ ফোটোগ্রাফারের সঙ্গে দেখা হয় ভিকির। ভিকি জানাচ্ছেন, ‘‘আমি তাঁর কাজ থেকে মুগ্ধ হয়ে যাই। রাস্তায় বসবাসের ফলে আমি মানবতার এত মাত্রা আমাকে দেখিয়েছিল যা আমি আগে দেখিনি। এবং আমি চাইতাম ওঁর মতো করে ছবিতে সেটা ফুটিয়ে তুলতে।''
১৮ বছর বয়সে ৪৯৯ টাকা দামের একটি ক্যামেরা তাঁকে কিনে দেয় সেই এনজিও। সেই সঙ্গে স্থানীয় এক ফোটোগ্রাফারের কাছে প্রশিক্ষণ। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ভিকিকে।
ভিকি জানাচ্ছেন সেই ফোটোগ্রাফারের সাহায্যে ‘স্ট্রিট ড্রিমস' নামের একটি চিত্র প্রদর্শনী করেন তিনি। সেই থেকেই তাঁর ছবি খ্যাতি পেতে শুরু করে। মানুষ পয়সা সেই সব ছবি কিনতে শুরু করেন। ক্রমে সারা বিশ্ব ঘুরে ফেলেন ভিকি। নিউ ইয়র্ক, লন্ডন, দক্ষিণ আফ্রিকা, সান ফ্রানসিস্কো— একের পর এক জায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে ছবি তুলে।
ভিকি বলছেন, ‘‘কখনও কল্পনা করিনি আমি নিজের ভাগ্যকে বদলে ফেলতে পারব, এতটা।''
তাঁর ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি এমআইটি মিডিয়া ফেলোশিপ পেয়েছেন ২০১৪ সালে। ২০১৬ সালে ‘ফোর্বস এশিয়া ৩০ আন্ডার ৩০' তালিকায় নাম ঢুকে পড়ে তাঁর।
বুধবার সকালে নিজের জীবনের কথা পোস্ট করেন ভিকি। এখনও পর্যন্ত ফেসবুকে লাইক পড়েছে ২১ হাজার। আড়াই হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন তাঁর পোস্ট।
বহু নেটিজেন বহু রকম ভাবে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন ভিকিকে। একজন লিখেছেন, ‘‘এই জন্যই বলে বৃষ্টির পরে সব সময় রোদ্দুর ওঠে।''
আপনার কী মনে হচ্ছে? কমেন্ট সেকশনে জানান।