কলকাতা: পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হানার পর থেকেই দেশের বিভিন্নপ্রান্তের মানুষের মুখ থেকে ক্রমাগত বেরিয়ে আসছে খুব পরিচিত কয়েকটি কথাই। যেমন- যুদ্ধ চাই। যেমন- প্রতিশোধ চাই। যেমন- যতজন সেনা শহিদ হয়েছেন, তা দ্বিগুণ লোককে মারা হোক শত্রুপক্ষের… কিন্তু, যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও সংবেদনশীল নাগরিক মাত্রই জানেন, এমন পন্থা কোনও গণতন্ত্রেই কাম্য হতে পারে না। চোখের বদলে চোখ নেওয়ার ভয়াল খেলাটি শেষমেশ কিছু অনিবার্য রক্ত ও অতিরিক্ত হিংসা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না শেষমেশ। সেই কারণেই, শুনতে যতই একঘেয়ে শুনতে লাগুক না কেন, ‘শান্তি চাই'-এর উচ্চারণটির কোনও বিকল্প কখনওই নেই।
একটি অংশের রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন ঘৃণা ছড়াচ্ছে: মমতা
সেই শান্তির দাবি নিয়েই বুধবার মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরোধী মিছিল শুরু করে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর। এছাড়া, সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা ছিল ওই মিছিলটির অন্যতম সুর। বহু পুলিশ মোতায়েন ছিল মিছিল যাওয়ার এই প্রায় তিন কিমি রাস্তা জুড়ে। প্ল্যাকার্ড হাতে ও গলায় কণ্ঠস্বরে তীব্র স্লোগান নিয়ে ধর্মতলার দিকে যাচ্ছিল এপিডিআর-এর ওই মিছিল।
বিপত্তিটা হয় মধ্য কলকাতার জানবাজারের সামনে। অভিযোগ, জানবাজার পেরোনোর সময়ই জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে কয়েকজন যুবক এপিডিআর-এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে পথ আটকায় তাঁদের। তারপর তাঁদের পাকিস্তানে চলে যেতেও বলা হয়।
ফেসবুকে কাশ্মীরিদের নিয়ে কথা বলার 'শাস্তি', ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হল কলকাতার ছাত্রীকে
এর ফলে দু'পক্ষের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপর বচসা হওয়ার পর তুমুল ধস্তাধস্তিও হয়। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশকর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। এপিডিআর-এর অভিযোগ, এই হামলা চালিয়েছে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।
এপিডিআর কর্মী সুজাত ভদ্র সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, “একটা কথা জানিয়ে রাখি স্পষ্টভাবে। আমরা এই সরকারকে (কেন্দ্রের) বিন্দুমাত্র ভয় পাই না। একটি গণতান্ত্রিক দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসাবে আমাদের সম্পূর্ণ অধিকার আছে নিজেদের বক্তব্য প্রকাশ করার। অধিকার আছে নিজেদের চিন্তাভাবনাগুলিকে ছড়িয়ে দেওয়ার। তা করতে যদি আমাদের বাধা দেওয়া হয়, তাহলে তো তা আমরা মানব না। আশা করব, পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করবে। এবং, দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে উপযুক্ত ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে”।