জিতু ফৌজি ওইদিন গুলি চালিয়ে সন্ধেবেলা কার্গিল পালায় বলে মনে করা হচ্ছে।
বুলন্দশহর, উত্তরপ্রদেশ: উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে পুলিশ ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং-এর মৃত্যুকাণ্ডে এবার নাম জড়িয়ে গেল এক সেনার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, জিতু ফৌজি নামে শ্রীনগরে পোস্টিং-এ থাকা ওই সেনাই সেদিন গুলি চালিয়েছিল কি না। যদিও, এক তদন্তকারী অফিসার এনডিটিভি'র মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন, জিতু ফৌজিই সেদিন গুলি চালিয়েছিল কি না, তা এখনই এত তাড়াহুড়ো করে বলে দেওয়া ঠিক হবে না। তার জন্য আরও একটু সময় প্রয়োজন। তবে সেদিনের ঘটনার যে একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল, তার মধ্যে বহু ভিডিওতেই দেখা গিয়েছে জিতু ফৌজিকে। তার খোঁজে জম্মু ও কাশ্মীরে রওনা দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল। যদিও, জিতু ফৌজির মা রতন কৌর জানান, ওই ভিডিওগুলি দেখে তিনি নিজের ছেলেকে শনাক্ত করতে পারেননি।
তার মা স্বীকার না করলেও তার কাকিমা চন্দ্রাবতী বলছেন অন্য কথা। জিতু যে সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে দাবি করে তিনি জানান, "ও সেদিন ওই ঝামেলা থেকে ফিরে এসে আমাদের বলল 'এবার কেমন নাটকটা হয় দেখো শুধু', তারপর সন্ধেবেলা কার্গিল চলে গেল"। সুবোধ কুমার সিং'কে প্রথমে তীক্ষ্ণ কোনও অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তারপর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। আপাতত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে।
প্রসঙ্গত, গ্রামের ধারে জঙ্গলের বাইরে কে বা কারা ছড়িয়ে রেখেছে গোমাংস, এমন এক 'কথা' কানে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছিল উন্মত্ত জনতার তাণ্ডব। সেই জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে খুন হতে হয় উত্তরপ্রদেশের পুলিশ ইনস্পেকটরকে। সেই খুনের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে চার দিন। এতদিন পর্যন্ত যাকে মূল অভিযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছিল, সেই যোগেশ রাজ এখনও অধরা। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে নিলেও এখন গোপন ডেরা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও পাঠিয়ে নিজেকে 'নির্দোষ' বলে তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর বজরং দলের কর্মী যোগেশ রাজ। আইজি রাম কুমার বলেন, যতক্ষণ না সম্পূর্ণ প্রমাণ হাতে আসছে, ততক্ষণ পুলিশ কোনও কিছু করতে অপারগ।
"আমরা একমাত্র প্রমাণ পেলেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। তাছাড়া নয়। আমাদের ফরেনসিক পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট নয় যে, কে গুলি করেছিল পুলিশ অফিসারকে। কে সুমিত (এই ঘটনায় মৃত দ্বিতীয় ব্যক্তি)'কে গুলি করেছিল, স্পষ্ট নয় সেটাও", এনডিটিভিকে বলেন তিনি।
"কিন্তু সবথেকে বড় প্রশ্ন যা, তা হল, এই গো-হত্যার পিছনে রয়েছে কে বা কারা? কারা রয়েছে এই ষড়যন্ত্রের পিছনে? সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি। যে মানুষটিকে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তাকে ধরার চেয়েও এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া বেশি প্রয়োজন। কারণ, এখনও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনও ফরেনসিক প্রমাণ নেই", বলেন তিনি।