ফেসবুকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হল ওই ছাত্রীকে।
কলকাতা: পুলওয়ামার জঙ্গি হানার পর কাশ্মীরিদের ‘দুরবস্থা' নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন কলকাতার এক টিনএজার। সেই পোস্ট দেওয়ার ‘দোষে' তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হয় ভয়াবহ ট্রোল করা। এবং, দেওয়া হয় ধর্ষণের হুমকিও। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রীটি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলায় জঙ্গি হানার বিরোধিতা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। তাঁর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পোস্টটিতে তিনি কাশ্মীরিদের দৈনন্দিন দুর্দশার কথাও উল্লেখ করেন। তারপরই একের পর এক কমেন্ট পড়তে থাকে তাঁর পোস্টের তলায়। কেউ কেউ তাঁকে পাকিস্তান চলে যাওয়ার ‘পরামর্শ' দেন। অনেকে আবার হুমকি দেয়, ‘এই পোস্টের ফলে ভয়াবহ পরিণতি' ঘটতে পারে, এই মর্মে।
ওই মন্তব্যকারীদের মধ্যেই কেউ কেউ অতি নিকৃষ্ট ভাষায় ধর্ষণেরও হুমকি দেয় তাঁকে বলে অভিযোগ।
একটি অংশের রাজনৈতিক দল এবং সংগঠন ঘৃণা ছড়াচ্ছে: মমতা
ওই ছাত্রীর দাবি, তাঁদের এলাকার স্থানীয় দোকানদার জানিয়েছেন, তাঁর ফেসবুক ছবির সূত্র ধরে তাঁর বাড়ি খোঁজারও চেষ্টা করছিল কয়েকজন।
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, “প্রাথমিকভাবে, হুমকিগুলো পাওয়ার পরই আমি পোস্টটা ডিলিট করে দিই। কিন্তু, যখন জানতে পারলাম, কয়েকজন যুবক আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, তখনই আমি ফেসবুক অ্যাকাউন্টটাও ডিলিট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। গত দু'দিন ধরে আমি স্কুলেও যাচ্ছি না”।
বুধবার দিন এই বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবতী। তিনি জানান, পুলিশ সবরকম সাহায্য দেওয়ার এবং সর্বদা পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে তাঁকে।
ঘটনাটির তদন্ত করে দেখছে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ।
উন্মত্ত ভিড়ের হাতে মার খাওয়া কাশ্মীরের যুবক থাকতে চান এ রাজ্যেই
প্রসঙ্গত, স্কুল ও প্রতিবেশিদের কাছে তাঁর সন্তানরা ‘একঘরে' হয়ে পড়ছেন বলে শহর ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন গত ২২ বছর ধরে কলকাতার বাসিন্দা এক কাশ্মীরি চিকিৎসক, এই খবর আসার দিন দুয়েক পরেই ফের উঠে এল কাশ্মীর ও কাশ্মীরি সংক্রান্ত ইস্যুর পাশে দাঁড়িয়ে ধর্ষণের হুমকি পাওয়া ছাত্রীটির খবর। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি সমস্তরকমভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনওভাবেই এই শহরে কাশ্মীরিরা নিরাপত্তাহীনতা যাতে বোধ না করেন, সেই ব্যাপারেও গতকাল স্বয়ং কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা নিজে বক্তব্য পেশ করেন। তিনি জানান, সমস্ত কাশ্মীরি এই শহরে নিরাপদ।