মেলিনা, ডোনাল্ড ট্রাম্প, হোয়াইট হাউস
Washington:
একসঙ্গে থাকলেও দুজনের জীবনটি এতটাই আলাদা, যেন, দুটো পৃথক গোলার্ধ। ভোর সাড়ে পাঁচটায় ওঠার পর ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিন শুরু হয় কেবল শো আর টুইটার দিয়ে। আর, তাঁর স্ত্রী মেলানির দিন শুরুর সঙ্গে বিশ্বের আর পাঁচজন সাধারণ মহিলার দিনের শুরুর সময়টার তেমন কোনও পার্থক্য নেই। তিনি ১২ বছরের ছেলেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করেন। তার ব্যাগে বই-খাতা-টিফিন ভরে দেন।
স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তাঁর সঙ্গে পর্নস্টার স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সম্পর্কের জলঘোলা নিয়ে রীতিমতো বিপাকে, মেলানি সেখানে একদম চুপ। তিনি বেঁচে থাকেন নিজের মতো করে। গত সোমবার হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকেছিলেন তিনি। শেষ কয়েকমাসের ভিতর অন্তর সরকারিভাবে এটিই তাঁর প্রথমবার জনসমক্ষে আসা।
মেলানির ব্যক্তিগত জীবন এখন পুরোটাই সন্তান-নির্ভর। সারাক্ষণ নিজের সন্তান ব্যারনকে নিয়েই থাকেন এখন উনি। সম্ভবত, সামনের বেশ কয়েকটা বছর হোয়াইট হাউজে এভাবেই তিনি নিজের মতো করে থাকবেন'। জানিয়েছেন মেলানির মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিজহাম। ট্রাম্পের রাজত্বের দেড় বছর হতে চলল। তাঁর ছায়া থেকে নিজেকে বের করে এনে একেবারে নতুন একটি অস্তিত্ব তৈরির কাজে এতটাই সচেষ্ট মেলানি যে, কয়েকদিন আগে প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি বারবারা বুশের অন্ত্যেষ্টক্রিয়াতে নিজে কাই গিয়েছিলেন।
বিতর্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প হল প্রায় লরেল-হার্ডির মতোই চিরন্তন একটি জুটি। একজনকে ছাড়া আরেকজন যেন সম্পূর্ণ অন্ধকার। ট্রাম্পের ব্যক্তিগত জীবনও সেই অন্ধকারের করাল হাঁ-টির থেকে মুক্ত নয়। হোয়াইট হাউজে আসার পর এতদিন হয়ে গেল, স্ত্রী আর পুত্রের সঙ্গে তাঁকে দেখা যায় না কখনওই। অথচ, তাঁর ঠিক আগে যিনি ছিলেন, ওবামা, তিনি আবার ঠিক ততটাই পরিবারের সঙ্গে পছন্দ করতেন।
স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে তাঁর ছুটি কাটানোর ছবি সর্বসমক্ষে চলে আসত বারবার। ট্রাম্প ঠিক এর উলটো। ছুটি পেলেই তিনি আড্ডা মারতে চলে যান বড়ো কোনও বিজনেস টাইকুনের সঙ্গে। মেলানি থাকেন তাঁর নিজের কাজ ও সন্তানকে নিয়ে।
আজ থেকে ২২ বছর আগে আমেরিকাতে আসা স্লোভানিয়ার মডেলটি চরমতম আলোটির ভিতর থেকেও নিজের মতো করে খুঁজে নিচ্ছেন নিজের একটি কোণ। ইদানীং, নিজেকে মূলত ব্যস্ত রাখেন ফ্যাশন ডিজাইনিং ও সমাজসেবার কাজে। তাঁর কাছের মানুষেরা বলেন- ব্রিটেনের যেমন ডায়না, আমেরিকার জন্য তিনি ঠিক তেমনই। ৭১ বছরের প্রবল ক্ষমতাশালী স্বামীর জীবনে কেবলমাত্র একটি হাইফেন হয়ে টিকে থাকতে চান না ৪৮ বছরের মেলানি ট্রাম্প।