This Article is From Mar 01, 2019

অভিনন্দন বর্তমান, ভারত-পাক সম্ভাব্য যুদ্ধ আটকে দিলেন যিনি

বিমানে আগুন লাগার পর তিনি প্যারাশুটে করে বিমান থেকে ঝাঁপ দেশ। মাটি স্পর্শ করার পর একদল জনতা ঘিরে ধরে তাঁকে। তখন তিনি তাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে পারেন যে, সেটি আসলে পাক ভূখণ্ড। বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পিছনদিকে দৌড়তে থাকেন তিনি।

অভিনন্দন বর্তমান, ভারত-পাক সম্ভাব্য যুদ্ধ আটকে দিলেন যিনি

বৃহস্পতিবারই অভিনন্দন বর্তমানকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করে পাকিস্তান।

শত্রুপক্ষের ভূখণ্ডে তিনি প্যারাশুটে করে নেমে গিয়েছিলেন। নামার পরেই ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের পিছু হঠানোর জন্য হাওয়ায় গুলি চালান। তারপর ঝাঁপ দেন কাছের একটি পুকুরে এবং তাঁর সঙ্গে থাকা সমস্ত তথ্যপ্রমাণ খেয়ে ফেলে নষ্ট করে দেন। তিনি, ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। যে নামটি এখন এই একশো ত্রিশ কোটির প্রতিটি ঘরে নিজের মতো ঘুরপাক খাচ্ছে। বুধবার তাঁর বিমানটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ভারতীয় বায়ুসেনার এই পাইলট ঠিক এই কাজগুলো করেছিলেন বলেই জানিয়েছে সূত্র। আর, এ নিয়ে তর্কের উত্থাপনের সুযোগ থাকলেও, কথাটি নিশ্চিতভাবেই প্রায় বলা যায় যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমশ টেনশনের আগুন বেড়ে গিয়ে গত কয়েকদশকের মধ্যে খারাপতম যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা তাঁর জন্যেই যেন মিটে গেল।

শুক্রবার রাত ন'টার পর তাঁকে ওয়াঘা সূমান্ত পার করিয়ে দিয়ে ভারতীয় সেনার হাতে তুলে দেওয়া হল পাকিস্তানের পক্ষ থেকে। ওয়াঘা সীমান্তে অভিনন্দনকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য জাতীয় পতাকা ও মালা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অজস্র দেশবাসী।

এক দেশনায়কের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা…

গত ৫০ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার ভারত ও পাকিস্তানি বায়ুসেনার মধ্যে আকাশপথে প্রবল সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই সময়ই পাকিস্তানি সেনার হাতে ধরা পড়েন তিনি। তবে, তার আগে কিছু ঘটনা ঘটে। যার অল্প উল্লেখ করা হয়েছে প্রথম কয়েকটি বাক্যেই।

যেন কোনও সিনেমার দৃশ্য!

দু'দেশের বায়ুসেনার মধ্যে লড়াই চলাকালীন পাকিস্তানের একটি অত্যাধুনিক এফ-১৬ বিমান ধ্বংস করেন অভিনন্দন। তারপর ধ্বংস হয়ে যায় তাঁর বিমানটিও। বিমানে আগুন লাগার পর তিনি প্যারাশুটে করে বিমান থেকে ঝাঁপ দেশ। মাটি স্পর্শ করার পর একদল জনতা ঘিরে ধরে তাঁকে। তখন তিনি তাদের কাছে প্রশ্ন করে জানতে পারেন যে, সেটি আসলে পাক ভূখণ্ড। বুঝতে পেরেই সঙ্গে সঙ্গে পিছনদিকে দৌড়তে থাকেন তিনি। ক্রুদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দাদের দলটিকে পিছনে হঠানোর জন্য হাওয়ায় ছুড়তে থাকেন গুলি। কিন্তু তাড়া পিছু না হঠে গিয়ে তাঁকে তাড়া করে সবাই মিলে। তিনি ওই সময়ই বেগতিক দেখে ঝাঁপ দেন পুকুরে এবং তাঁর সঙ্গে থাকা সেনাবাহিনীর বহু গোপন তথ্য খেয়ে ফেলেন এবং নষ্ট করে দেন।

বৃহস্পতিবারই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছিলেন, ছেড়ে দেওয়া হবে অভিনন্দন বর্তমানকে। সেই খবর শোনার পর আনন্দে ফেটে পড়ে গোটা দেশ।

অমৃতসর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আটারিতে এই নায়ককে স্বাগত জানাতে আজ ভোর ছ'টা থেকেই ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

বন্ধুদের সঙ্গে আট্টারিতে এসেছেন অমৃতসরের বাসিন্দা জিতেন্দর। তিনি বলেন, “আমরা এখানে এসেছি আমাদের দেশের নায়ককে ঘরে স্বাগত জানাতে। আমরা আমাদের এই নায়ককে স্বাগত জানাই। তিনি বিমানবাহিনীর যুদ্ধে প্রভূত সাহস দেখিয়েছিলেন এবং পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ার পরেও একটুও বিচলিত হননি।" 

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চেন্নাই থেকে নয়াদিল্লি বিমানে রওনা হয়েছে উইং কমান্ডার অভিনন্দনের বাবা-মা, এয়ার মার্শাল এস বর্তমান (অবসরপ্রাপ্ত) এবং মা শোভা বর্তমান, যিনি পেশায় চিকিৎসক। বিমানবন্দরে সাধারণ মানুষ তাঁদের অভিবাদন জানান। ছেলেকে ফিরে আসার সময় তাঁরাও আটারিতে থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ), যা জেসিপি এবং ৫৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পাঞ্জাব ও পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত উচ্চ সতর্কতার ভিত্তিতে পাহারা দেয়, পাঞ্জাব পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা শুক্রবার সকালে থেকেই এই এলাকায় অতিরিক্ত কর্মীদের নিযুক্ত করেছে। অমৃতসর বিমানবন্দর থেকে নয়া দিল্লিতে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার আগে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে সর্বক্ষণ থাকবেন।

ঢোল কাঁধে হাজির হয়েছেন মনজিত সিং, তিনি বলেন, “বিভিন্ন সেলিব্রিটি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আট্টারি সীমান্তে আসেন। কিন্তু আজ, একজন সত্যিকারের নায়ক ফিরে আসছেন। আমরা তাঁকে ঢোল ও ভাংড়া দিয়ে বিশাল বড় অভ্যর্থনা জানাব।”



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.