শুভ দিন জন্মদিন শুভ জন্মদিন
২৫ ডিসেম্বর, Bada Din। বহু মহামানব দুনিয়ায় এসেছেন মানব সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করতে। কিন্তু কারোর জন্মদিনে এভাবে এদেশ-বিদেশ মিলেমিশে একাকার হয় না বোধহয়। বিদেশে জন্মেও যীশু খ্রিস্ট ভারতেও সমাদৃত। Christmas Day-র আগে তাই বাড়ি সেজে ওঠে আলোয়, খ্রিস্টমাস ট্রি, তারা, ঘণ্টায়। বেকারির দোকান ম- ম রকমারি পাম কেক, পেস্ট্রি, কুকিজের গন্ধে। মহামানবের জন্মদিন কেক কেটে সাড়ম্বরে পালিত হবে বলে। ২৪ ডিসেন্বর থেকে প্যাকেট বন্দি সেই বিদেশি মিষ্টি ভারতীয় ঘরে ঘরে। অতিথি আপ্যায়নেও। ২৪ ডিসেম্বর যে উৎসবের শুরু, তার শেষ ৫ জানুয়ারিতে। ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে।
সান্তার সঙ্গে রংমিলন্তি, বড়দিনে রেড ভেলভেট পেস্ট্রি
কেন ক্রিস্টমাসে মাতামাতি?
ইতিহাস বলছে, ২৫ ডিসেম্বর বেথেলহেম নগরের এক গো-শালায় কুমারী মা মেরির কোলে জন্মেছিলেন মানব ত্রাতা Jesus Christ। ঈশ্বর পুত্রের আবির্ভাব মানুষের মনে ঈশ্বরপ্রীতি, পারস্পরিক সৌভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা জাগাতে। বিশ্ব থেকে হিংসা মুছতে। আর তার জন্য তিনি ক্রুশ বিদ্ধ হয়ে প্রাণ দিতেও দ্বিধা করেননি। তাঁর অনুগামীরা সমাজে খ্রিস্টান হিসেবে পরে পরিচিত হন। ধর্ম ভাগ হয়ে যায় ক্যাথলিক আর প্রোসেস্টান্টে। যীশুর বাণী সম্বলিত গ্রন্থ পরে বাইবেল নামে পরিচিত হয় বিশ্বে।
কেন ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন
বাইবেলে যীশুর কোনও জন্মতারিখ দেওয়া নেই। তবে ৩৩৬ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ যীশুর জন্মের আগে রোমে প্রথম খ্রিস্টান সম্রাটের আমলে ২৫ ডিসেম্বর প্রথম বড়দিন উদযাপিত হয়েছিল। কয়েক বছর পরে, পোপ জুলিয়াস আনুষ্ঠানিকভাবে অই তারিখকে যীশুর জন্মদিন হিসেবে ঘোষণা করেন।
ক্রিস্টমাস ট্রি
উৎসবে এই গাছ সাজানোর রেওয়াজ কম করে হাজার বছর আগে। উত্তর ইউরোপে তখন ফার গাছকে এভাবে সাজানো হত। ফার গাছ ছাড়াও আলো দিয়ে সাজানো হত চেরি গাছকেও। যাঁরা খুব গরিব, তাঁরা কাঠের টুকরো জড়ো করে ত্রিভুজ আকার দিয়ে তাকে সাজাতেন। আস্তে আস্তে এই চল ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। আলো, মিষ্টি, খেলনা, তারা, ঘণ্টা দিয়ে সাজানো হতে থাক তাকে। ধীরে ধীরে উৎসবের এই ঢেউ এসে লাগে ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বেও। একই ভাবে ২৫ ডিসেম্বরে ক্রিস্টমাস ট্রি সাজানো হয় এখানেও।
পার্টি রঙিন লালিমায়...আপনি মালাইকার সাজে মধ্যমণি
সান্তা আর উপহারের গোপন রহস্য
বহু যুগ আগে প্রচিলত গল্প অনুযায়ী, চতুর্থ শতাব্দীতে এশিয়া মাইনরে সেন্ট নিকোলাস নামে ভীষণ দয়ালু এক ব্যক্তি থাকতেন। খুব কম বয়সে মা-বাবা মারা গিয়েছিলেন তাঁর। প্রচণ্ড ধনী হওয়ায় সবসময় গরিবদের সাহায্য করতেন। গোপনে তাঁদের জন্য উপহার রেখে পালিয়ে আসতেন।
একদিন নিকোলাস জানতে পারেন, এক দরিদ্রের তিন কন্যা আছে। অর্থের অভাবে যাদের বিয়ে হচ্ছে না। শুনেই তিনি সেই মানুষটির বাড়ির ছাদে উঠে চিমনিতে সোনায় ভরা ব্যাগ রেখে আসেন। সেই দিনই ওই গরিব মানুশটি মোজা শুকোতে দিয়েছিলেন চিমনিতে। হঠাৎ ওই মোজা থেকে ঘরের মধ্যে পড়ে যায় সোনায় ভরা ব্যাগ। একবার নয়, তিনবার। শেষবার ওই ব্যক্তি নিকোলাসকে দেখেছিলেন। নিকোলাস যদিও একথা কাউকে জানাতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকেই কেউ কোনও গোপন উপহার পেলেই ভাবতেন, নির্ঘাৎ নিকোলাস দিয়েছেন।
ধীরে ধীরে নিকোলাসের গল্প জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পাশাপাশি, ক্রিস্টমাসে বাচ্চাদের উপহার দেওয়ার রীতি ছিল ইউরোপে। নিকরোলাস হয়ে উঠলেন সেন্ট নিকোলাস বা ফাদার নিকোলাস। যিনি বরফ ঢাকা মেরু প্রদেশের বাসিন্দা। যীশু খ্রিস্টের জন্মদিনে সবার মুখে হাসি ফোটাতে আগের রাতে স্লেজ গাড়ি চেপে পৌঁছে যান ঘরে ঘরে। তাঁর স্লেজ টানে বল্গা হরিণ। আজও ক্রিস্টমাসের আগের রাতে তাই মোজা ঝুলিয়ে রাখে অনেক খুদে। সেন্ট নিকোলাস বা সান্তা ক্লস যদি চুপি চুপি উপহার ভরে দেয় তাদের ঝোলানো মোজায়!
বড়দিনে কী উপহার সাজিয়ে দেবেন সবার হাতে?
কীভাবে উদযাপন করবেন
২৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় উদযাপন। চলে ১২ দিন ধরে। এই উৎসব তাই Twelfth Night নামেও পরিচিত। নতুন বছরের ৫ জানুয়ারি শেষ হয় এই মহোৎসব।খানা-পিনা, উপহার দেওয়ানেওয়া, ঘরবাড়ি সাজানো---এসবের মাধ্যমেই প্রভুকে স্মরণ করেন খ্রিস্টানরা। যেভাবে ধুমধাম করে পালিত হয় হিন্দুদের দুর্গাপুজো। তবে বাঙালি এবং ভারতও এখন অপেক্ষা করে থাকে শীত মাসের এই উৎসবের জন্য। কারণ, শত অশান্তিতেও এই দেশ যে ধর্মনিরপেক্ষ।
Click for more
trending news