উল্টো রথযাত্রায় ভক্তের ঢল
কলকাতা: রথযাত্রা নিয়ে অনেক গল্প, অনেক মিথ। পুরাণ বলছে, রথযাত্রার দিন বলরাম এবং সুভদ্রাকে নিয়ে রথে চড়ে বচ্ছরান্তে মামার বাড়ি যান জগতের নাথ জগন্নাথ। যাত্রার এক সপ্তাহ পরে তিনি ফেরেন নিজ স্থানে। দেবের রথে চড়ে এই ফিরে আসাই উল্টোরথ (Ulta Rath Yatra 2019) নামে খ্যাত। পুরীর (Puri) রথাযাত্রার কথা বেশির ভাগ মানুষ জানেন। আজ তাই মাহেশের রথযাত্রার কথা। কথিত আছে, পুরীতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দিন মাহেশের মন্দিরের চুড়োয় নাকি 'নীলকন্ঠ' পাখি বসে থাকে। মাহেশের (Mahesh) রথযাত্রার পেছনেও এক কল্প কাহিনি আছে।
মিথ বলছে, ৫০০ বছর আগে সন্ন্যাসী ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী পুরীতে গিয়েছিলেন নিজের হাতে জগন্নাথ দেবকে ভোগ রেঁধে খাওয়াবেন বলে। কিন্তু সেখানকার সেবকরা তাতে রাজি না হওয়ায় রাগে, শোকে সন্ন্যাসী স্নান-খাওয়া ত্যাগ করেন। তখন একদিন স্বপ্নে তাঁর দেবদর্শন হয়। জগন্নাথ দেব তাঁকে নির্দেশ দেন মাহেশে যেতে। সেখানে গিয়ে এক বৃ্ষ্টিভেজা রাতে ধ্রুবানন্দ ব্রহ্মচারী গঙ্গায় ভাসমান তিনটি নিমগাছের কাঠ পান। এই কাঠ দিয়ে তিনি তৈরি করেন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার মূর্তি। এই মূর্তি আজও পুরীর মন্দিরের মতোই মাহেশে পূজিত হয়। এবং ১২ বছর অন্তর মূর্তিগুলির অঙ্গ মার্জনা করা হয়।
দেখুন, পুরীতে রথের শোভাযাত্রার মধ্যেই মানব করিডোর তৈরি অ্যাম্বুলেন্সের জন্য!
তবে পুরীতে যেখানে তিনটি রথ সাজিয়ে শোভাযাত্রা করে বের করা হয় মাহেশে হয় একটি। প্রথমে এই রথ তৈরি হয়েছিল কাঠের। পরে পুরনো হয়ে সেই রথ ভেঙে গেলে ১২৯২ সনে নতুন রথ বানিয়ে দেন শ্যামবাজারের দেওয়ান কৃষ্ণরাম বসু। এই রথ সম্পূর্ণ লোহার তৈরি। রথটি তৈরি করে দেয় তৎকালীন মার্টিনবার্ন কোম্পানি। ৫০ ফুট উঁচু এই রথের ৯টি চুড়ো, ১২টি চাকা। ওজন ১২৫ টন। রথের সামনে তামার দু-টি ঘোড়া আর কাঠের দু-টি রাজহাঁস আছে।
এই রথ তৈরি করতে তখনকার দিনে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। এই রথে চড়েই জগন্নাথ দেব তাঁর ভাই-বোনদের নিয়ে মামারবাড়ি যান। একসপ্তাহ পরে উল্টোরথের দিনে তিন দেব-দেবী রথ ফিরে আসে নিজের জায়গায়।
Click for more
trending news