This Article is From Aug 06, 2019

জম্মু কাশ্মীরের ভাগ হওয়ার পর, দার্জিলিংকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি পাহাড়ের দলগুলির

১৯৮৬ গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় থেকেই, সংবিধানের ৬ তম অনুচ্ছেদ এবং পৃথক রাজ্যের দাবি পাহাড়ের অন্যতম ইস্যু।

জম্মু কাশ্মীরের ভাগ হওয়ার পর, দার্জিলিংকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি পাহাড়ের দলগুলির

পৃথক রাজ্যের দাবিতে একদশকে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে পাহাড়।

কলকাতা/দার্জিলিং:

জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি রাজ্যটিকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তাতেই আশার আলো দেখছে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি। দার্জিলিং কে বিধানসভাসহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানিয়েছে তারা। দার্জিলিং-এর বিজেপি সাংসদ রাজু ভিস্তের জানান, তিনি আশাবাদী, প্রতিশ্রুতিমতো ২০১৪-এর মধ্যে “স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান” করবে গেরুয়া শিবির। যদিও, বাংলাকে ভাগ করার কোনওরকম পদক্ষেপের বিরোধিতা করা হবহে বলে জানিয়েছে  রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার জম্মু কাশ্মীর থেকে ৩৭০ নম্বর ধারা প্রত্যাহার করে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।

"বাড়ির মধ্য়েই আটক আমি, মিথ্যা বলছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী": ফারুক আবদুল্লা

জম্মু কাশ্মীরকে ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি বিধানসভাযুক্ত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং লাদাক কে বিধানসভাবিহীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।

বিমল গুরুং-এর নেতৃত্বাধীন গোর্খাজনমুক্তি মোর্চার তরফে বলা হয়েছে, পাহাড়ে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা পালন করুক বিজেপি। পৃথক রাজ্যের দাবিতে প্রায় একদশক ধরে উত্তপ্ত পাহাড়।

দলীয় সুপ্রিমো বিমল গুরুংকে উদ্ধৃত করে মোর্চা নেতা রোশন গিরি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, “কয়েক বছর ধরে, আমরা পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবি জানাচ্ছি।বিজেপিও তাদের ইস্তেহারে স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল”। তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি, বিধানসভাসহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করার এটাই সঠিক সময়। আমরা খুব দ্রুতই এটা নিয় বিক্ষোভ করব”।

‘‘আমি চিকিৎসক নই'': ফারুক আবদুল্লা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে অমিত শাহ

১৯৮৬ গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনের সময় থেকেই, সংবিধানের ৬ তম অনুচ্ছেদ এবং পৃথক রাজ্যের দাবি পাহাড়ের অন্যতম ইস্যু। ২০১৭-এর জুনে পাহাড়ে এনিয়ে ব্যাপক আন্দোলন হয়, যার ফলে ১০৪ দিন বনধ্ পালন করা হয়।  বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ এবং নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয় সেই আন্দোলনে। দার্জিলিং কে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি জানায় গোর্খাজনমুক্তি মোর্চা, তাকে সমর্থন করে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট। তাদের মতে, এটাই একমাত্র সমাধানের রাস্তা।

সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জিএনএলএফ নেতা এনভি ছেত্রী বলেন, “পৃথক রাজ্য করাটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া, তবে আমরা মনে করি বিধানসভাসহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত সমস্ত রাজ্যবাসী গ্রহণ করবে”। তিনি আরও বলেন, “পাহাড়ের বর্তমান প্রশাসক, জিটিএ, এটা করতে ব্যার্থ”।

পাহাড়ের অন্যান্য ছোটো সংগঠনগুলোর থেকেও সমর্থন পেয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিএনএলএফ। পাহাড়ের সমস্ত রাজনৈতিক দলের মতামতকেই তিনি সম্মান  করেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি সাংসজদ রাজু ভিস্ত। সমাধানের ক্ষেত্রে সমস্ত উপায় নিয়েই আলোচনা হবে বলেও জানান তিনি।

সংসদে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বলতে গিয়ে কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেললেন অধীর চৌধুরী

বিষয়টি মুখ খুলতে চাননি অনেক বিজেপি নেতাই। তবে তাঁরা জানান, কয়েক দশকের সমস্যার সমাধান করবে বিজেপি। একসময়ে, গোর্খাল্যান্ডের পৃথ রাজ্যের দাবি নিয়ে নরম অবস্থান ছিল বিজেপির। এখন এলাকায় গণতন্ত্র ফেরানোর ওপরে জোর দিয়েছ তারা এবং “পুলিশি সন্ত্রাসযুক্ত অঞ্চল” থেকে তাকে মুক্ত করতে চায় তারা। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, এর শুরু হয়েছে ২০১৭-এ।

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র থেকে রেকর্ড ভোটের ব্যাবধানে জয়লাভ করেন রাজু ভিস্ত। তাঁকে সমর্থন করেন বিমল গুরুং এবং পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলি।

জম্মু কাশ্মীরকে ভাগ করার বিলের তীব্র বিরোধিতা করবে তৃণমূল: মমতা

তবে তৃণমূল সমর্থিত গোর্খাজনমুক্তি মোর্চার অপর অংশ, বিধানসভাসহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, গত বছরে পাহাড়ের মানুষকে “পৃথক রাজ্যের ললিপপ” দেখিয়ে “বোকা” বানিয়েছে বিজেপি। তৃণমূল সমর্থিত মোর্চা নেতা বিনয় তামাং বলেন, “পাহাড়ের সমস্যার সমাধানে, বিজেপি বা বিমল গুরুং সচেতন নয়। নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে তারা তাদের ব্যবহার করতে চায়”।

১৯৮০ সালে প্রথমবার পৃথক রাজ্যের দাবি ওঠে, ১৯৮৬ তে জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং-এর নেতৃত্বে পাহাড়ে ব্যাপক আন্দোলন হয়। প্রায় ৪৩ দিন ধরে চলা সেই আন্দোলনে ১,২০০ জনের মৃত্যু হয়। ১৯৮৮ তে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর হস্তক্ষেপে তৈরি হয় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল।

পরে ২০০৭-এ গোর্খাজনমুক্তি মোর্চা তৈরি হওয়ার পর, পাহাড়ের সেই দাবি আবারও গতি পায়। ২০১১ বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর, বিমল গুরুংকে প্রধান করে পাহাড়ে তৈরি করা হয় জিটিএ। তবে পাহাড়ে শান্তি ক্ষণস্থায়ী হয়, পৃথক রাজ্যের দাবিতে প্রথমে ২০১৩ এবং পরে ২০১৭-এ বিমল গুরুং এর নেতৃত্বে পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন হয়। তাদের অভিযোগ, গোর্খাদের পরিচয় “মুছে ফেলতে” চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.