যা নিয়ে চাপানউতোর চলছিল এতদিন, তা এবারে পেয়ে গেল খোদ সরকারের শিলমোহর! গত শুক্রবার রাজস্থানের আলোয়ারের গ্রামে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে আহত রাকবারখানের মৃত্যু পুলিশি হেফাজতেই হয়েছে বলে আজ সাফ জানিয়ে দিলেন রাজস্থানের পুলিশমন্ত্রী।
তিনঘন্টা দেরি করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়েযাওয়ার কথা এনডিটিভি'র রিপোর্টে প্রকাশ্যে আসার পরই এই নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। রাজস্থান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনাটি নিয়ে অবিলম্বে তদন্ত শুরু করাহবে। "যে প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে, তা থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, মৃত্যু হয়েছে পুলিশি হেফাজতেই। যে অমূল্য সময় নষ্ট করা হয়েছে, সেটাই এই মৃত্যুর আসল কারণ হয়েদাঁড়িয়েছে", গুলাব চাঁদ কাটারিয়া এই কথা জানান। " তদন্ত করে আমরা জানতে পেরেছি, আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে গরুগুলিকে গোয়ালে রেখে আসা হয়। এটাএকেবারেই করা উচিত ছিল না", বলেন মন্ত্রী। যদিও, পুলিশি হেফাজতে অত্যাচারের ফলেই রাকবরের মৃত্যু হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান।
গত শুক্রবার রাতে গরুচোর সন্দেহে রাকবর খান এবং তার বন্ধু আসলামকে আক্রমণ করে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তাঁর বন্ধু পালিয়ে গেলেও রাকবর পালিয়ে যেতে পারেননি। তাঁকেপাথর ও লাঠি দিয়ে গণপ্রহার করা হয়। 28 বছর বয়সী রাকবরকে উদ্ধার করার তিনঘন্টা বাদে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। ওই সময়ের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতালে তাঁকেনিয়ে যাওয়ার আগে পুলিশ প্রথমে গোয়ালে গিয়ে গরুগুলিকে রেখে আসে। তারপর থানায় যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে চা খাওয়ার জন্য মাঝরাস্তায় দাঁড়ায়।
পুলিশকে প্রথম যিনি ওই গণপ্রহারের খবর দিয়েছিলেন, সেই নওল কিশোরই তাদের সঙ্গে ছিলেন বাকিটা সময়। তিনিই একটি ছবি সামনে এনেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আহত রাকবর খান পুলিশের গাড়িতে বসে আছেন।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, শরীরে বিবিধ ক্ষতের কারণেই রাকবরের মৃত্যু হয়। "শরীরের বহু আঘাতের চিহ্ন ছিল। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয় তাঁর", বলেন রাজীব গুপ্ত। ময়নাতদন্ত যে চিকিৎসকরা করেছিলেন, তিনি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। মারের চোটে গোটা শরীরের সাত থেকে আটটি হাড় ভেঙে গিয়েছিল। রাকবরের ভাই বলেন, এতভয়ঙ্করভাবে মারা হয়েছিল রাকবরকে যে, তাঁর ঘাড়টিও ভেঙে গিয়েছিল।