Read in English
This Article is From Aug 23, 2019

Amazon জ্বলছে, কিন্তু ব্রাজিলের অতীতই সামনের পথ দেখাতে পারে

কুণ্ডলী পাকাতে থাকা ধোঁয়ার মেঘ আরও একবার জমা হয়েছে Brazil-এর আকাশে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বাস্তবকে।

Advertisement
ওয়ার্ল্ড (c) 2019 The Washington PostTranslated By

এবছর আমাজনে রেকর্ড সংখ্যক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।

১৬ বছর আগে এক ঘর্মাক্ত দিনে Amazon অরণ্যের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে বায়ুসেবনের উদ্দেশ্যে বসেছিলাম একটা আধপোড়া কাঠের গুঁড়িতে। আকাশে ধোঁয়া কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছিল। জড়ো হচ্ছিল আকাশের কোণে। দূর থেকে কাঠ চেরার শব্দ আসছিল। আমরা জানতামও না, এমন জায়গায় এমন সময়ে এসে হাজির হয়েছি যেখানে আমাজনের অরণ্যকে ধ্বংস করা শুরু হয়েছে। ২০০৩ সালের জুলাই মাসে আমরা উপস্থিত ছিলাম Brazil-এর মাতো গ্রোসোতে। এই সপ্তাহে সেই মুহূর্তটার কথা আবার মন‌ে পড়ে গেল, যখন খবর পাওয়া গেল এবছর আমাজনে রেকর্ড সংখ্যক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। শুকনো আবহাওয়া এবং ইচ্ছাকৃত দুই কারণেই আগুন লাগছে।

কুণ্ডলী পাকাতে থাকা ধোঁয়ার মেঘ আরও একবার জমা হয়েছে আকাশে। ক্ষমতায় থাকা দল সরকারি বিজ্ঞানীদের আক্রমণ করছে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে উপগ্রহের তোলা ছবির বাস্তবকে। কিন্তু ব্রাজিলের নিজের অতীত থেকে পাওয়া শিক্ষাই তুলে ধরছে এই ধরনের তথ্যের উপকারিতা। এবং এটাই সামনের পথ দেখাতে পারে।

জল বৃদ্ধি পাচ্ছে: ২০৫০ সালের মধ্যে তলিয়ে যেতে পারে এই দেশের রাজধানী

Advertisement

২০০৩ সালে আমরা একটা মিশনে ছিলাম ব্রাজিলের মহাকাশ সংস্থা INPE-র সঙ্গে, যেটা ছিল মার্কিন ও ব্রাজিলিয়ান বিজ্ঞানীদের একটা যুগ্ম মিশন। লক্ষ্য ছিল আমাজনের জঙ্গলে কী করে বিপুল পরিমাণে কার্বণ জমা হচ্ছে যা থেকে বায়ুমণ্ডলে প্রভূত তাপের সৃষ্টি হয়েছে। এবং গাছেরা জল থেকে মেঘের আবর্তন ঘটায় যা জঙ্গল ও জল‌ের শস্যকে অনেক দূর পর্যন্ত বজায় রাখে।

এই বিষয়ে মাথা ঘামানোর আগে ব্রাজিলের সহকর্মীদের কম্পিউটারে সম্প্রতি উৎক্ষেপিত এক উপগ্রহ, যা প্রতিদিন জঙ্গলের ছবি পাঠায় তা দেখা শুরু হল। এই নতুন তথ্য থেকে আশা জাগছিল, সম্ভবত জঙ্গলে গাছ কাটা এবং INPE-র সেটা সনাক্ত করা যে ঠিক কোথায় এই অরণ্য ধ্বংসের কাজটি হচ্ছে তা বের করে ফেলা যাবে। পুরনো উপগ্রহগুলির ক্ষেত্রে, ঘটনা এবং তথ্য কয়েক সপ্তাহ বা মাসাধিক কালের পুরনো হত।

Advertisement

পেটে প্লাস্টিক! দিনের শেষে ঘুমের দেশে চলে গেল 'শিশু' মরিয়ম

অ্যাসগরিদমকে কি বিশ্বাস করতে পারি? একমাত্র উপায় হল নিজেরা গিয়ে দেখা। সেইমতো একটা ম্যাপ তৈরি করা হল নিরীক্ষণের জন্য। বহু নদী ও দোদুল্যমান কাঠের ব্রিজ পেরিয়ে আমরা এগিয়ে চললাম। কতবার টায়ার বদলাতে হল। বালির মধ্যে গাড়িকে ঠেলে নিয়ে যেতে হল। তারপর আমরা ম্যাপে দাগানো একটা জায়গায় পৌঁছলাম। নিশ্চিত ভাবেই দু'টো ট্র্যাক্টর ও চার মাঝের মোটা চেনের সাহায্যে গাছ কাটা হচ্ছিল। দ্বিতীয় জায়গাটায় বহু মৃত গাছের সারি। তৃতীয় স্থানেও অরণ্য ধ্বংসের ফলে সৃষ্টি হওয়া চিহ্ন রয়েছে। অ্যালগরিদম সঠিক ভাবেই চিহ্নিত করতে পেরেছিল।

Advertisement

গাছের গুঁড়িতে বসে আমরা একে অপরের দিকে হতাশার সঙ্গে তাকাচ্ছিলাম। অ্যালগরিদমের নিখুঁত পর্যবেক্ষণ দেখে আমরা চমকে গিয়েছিলাম। কিন্তু ক্রুদ্ধ হচ্ছিলাম এর অর্থ বুঝতে পেরে। গবাদি পশুর মাংস ও দ্রুত উৎপন্ন উদ্ভিদ ইউরোপ ও এশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে। উপগ্রহের পাঠানো ছবি বৃহৎ চিত্রটা তুলে ধরেছিল। আমাদের চোখের সামনে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে আমাজন।

আমাদের ব্রাজিলিয়ান সহকর্মীরা তাঁদের টেকনিক্যাল দক্ষতা ও নিষ্ঠাকে কাজে লাগিয়ে এগোতে চাইছিল। দশক পেরিয়ে ব্রাজিলের সরকারের কাছে বিশ্বের সেরা পদ্ধতি রয়েছে এই জঙ্গলগুলিকে নিরীক্ষণ করার। INPE-র হিসেব জঙ্গলের পরিবর্তনকে চিহ্নিত করতে অব্যর্থ। উপগ্রহের ছবি, পদ্ধতি ও ফ‌লাফল সকলের সঙ্গেই শেয়ার করা হয়। তাঁদের কাজ পার্থক্যটা তৈরি করেছে। তথ্য একা একা জঙ্গলকে রক্ষা করতে পারবে না। কিন্তু তথ্য ছাড়া সেরা পদ্ধতিও কাজে আসবে না।

Advertisement

পরবর্তী বছরগুলোতে জঙ্গল কেটে ফেলার পরিমাণ দ্রুত বেড়েছে সরকারের নীতির ফলে। অরণ্যকে বাঁচানোর ক্লান্তিকর চেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সুপরিচালিত উপায়ে চারণভূমি ও ক্ষেত্রে আরও বেশি করে গবাদি পশুর মাংস ও দ্রুত উৎপাদনশীল উদ্ভিদ উৎপন্ন করা হচ্ছে নিষেধাজ্ঞাকে অবহেলা করে। ব্রাজিল হয়ে উঠেছে অন্য দেশের কাছে এক উজ্জ্বল উদাহরণ, যেকানে উষ্ণ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অরণ্য রয়েছে। উপগ্রহের মাধ্যমে অরণ্য ধ্বংসের ছবি তোলা এখন একটা বার্ষিক নিয়মরক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে।

কিন্তু রাজনৈতিক বায়ু পরিবর্তনের হাত ধরে ব্রাজিলের সাফল্যের খতিয়ান তার ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে। অরণ্য ধ্বংসের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। INPE-র ব্যবস্থা ও অন্যান্য সূত্র থেকে তা পরিষ্কার। ব্রাজি‌লের রাষ্ট্রপতি বোলসোনারো এই সব তথ্য পছন্দ করছেন না। পৃথিবীর দামি ধাতু নিষ্কাশন, বিরাট পরিকাঠামো গড়ে তোলার কথা অস্বীকার করে তিনি সত্যিটাকে মিথ্যে বলে চা‌লাতে চাইছে। তবে এটার জন্য বহু মূল্য চোকাতে হচ্ছে।

Advertisement

গাছের গুঁড়িতে বসে থাকার সেই সময়টা থেকে এগিয়ে গিয়ে ব্রাজিল বিশ্বকে দেখিয়েছে ক্ষয়ক্ষতিকে সামলানো যেতে পারে। কিন্তু দ্রুত লাভের চক্করে পড়ে থাকা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সামনে আমাদের গ্রহের মহামূল্যবান সম্পত্তি এই বৃক্ষেরা নিরাপদ নয়। আমাদের  INPE-র সহকর্মীদের মতো প্রতিভাবান মানুষদের কঠোর শ্রম ও কারিগরি দক্ষতায় সাফল্য আসে বহু বছর পেরিয়ে। করাতের শব্দ পাওয়া গেলে আমাদের সেই সত্যিটার সামনে দাঁড়াতে হবেই— অরণ্য ধ্বংসের যে সত্যি ছবি পৃথিবীর সাম‌নে তুলে ধরছে উপগ্রহ।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
Advertisement