তাঁর পক্ষে ৩০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি শচীন পাইলটের (ফাইল ছবি)
নয়াদিল্লি:
মধ্যপ্রদেশ হাতছাড়া হওয়ার তিনমাস পর, দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলটের বিদ্রোহে এবার রাজস্থানও হাতছাড়া হতে চলেছে রাজস্থান। সোমবার দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত, যদিও নিজের পক্ষে ৩০ জন বিধায়কের সমর্থন দাবি করে, বৈঠকে গড়হাজির থাকছেন শচীন পাইলট। ফলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার পর এবার তাঁর চলে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। এখনও পর্যন্ত গান্ধি পরিবারের কারও সঙ্গেই তাঁর কথা হয়নি। বিজেপির সঙ্গে আলোচনার কথা উড়িয়ে দেননি পাইলট ঘনিষ্ঠরা, তবে সেভাবে কার্যকর আলোচনা হয়নি বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।
দেখুন ১০ তথ্য:
শচীন পাইলটের দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, “আগামিকাল কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে থাকছেন না উপমুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা শচীন পাইলট। তিনি জানিয়েছেন, ৩০ জন দলীয় বিধায়ক এবং কয়েকজন নির্দল বিধায়ক তাঁকে সমর্থন প্রকাশ করায় অশোক গেহলত সরকার সংখ্যালঘু”।
নিজের বাসভবনে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত। সোমবার আরও একটি বৈঠক হবে। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহল জানায়, শচীন পাইলটলকে বৈঠকে যোগদানের আমন্ত্রণ জানানো হয়, তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এদিন সন্ধ্যায় শনিবার দিল্লিতে থাকা তিনজন বিধায়ককে তলব করে কংগ্রেস, তাঁরা শচীন পাইলট ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনজনেই জানিয়েছেন, অশোক গেহলত সরকারের সঙ্গে রয়েছেন তাঁরা। এর আগে NDTV কে রোহিত ভোরা জানান, “ব্যক্তিগত” কাজেই তাঁর দিল্লি সফর এবং বাকি দুজনের নিজস্ব কাজ রয়েছে।
রাজ্যসভা নির্বাচনে সময়, সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্তের অভিযোগে শচীন পাইলটকে তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়, ফলে সেটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে ওঠে। নিজের ব্লগে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং সাংবাদিক জাভেদ আনসারি লেখেন, “কেউ নিজের ঘর ছাড়তে চান না, তবে এই ধরণের অপমানও চলতে পারে না। আমার বিধায়ক এবং সমর্থকরা খুবই দুঃখিত এবং আমায় তাঁদের কথা শুনতে হবে', এদিন সন্ধ্যায় তিনি আমায় ফোনে জানিয়েছেন”।
সূত্রের খবর, শচীন পাইলটকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়ে অশোক গেহলতের ওপর অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তারফলে ক্ষমতায় থাকা রাজ্যটিতে দল বিপাকে পড়েছে। দলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, “মধ্যপ্রদেশের মতো পরিস্থিতি আর আমরা হতে দেব না, তা নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী”।
সূত্রের খবর, সংখ্যা এবং অভ্যন্তরীণ কারণে শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ দেওয়ার প্রস্তাবের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। সরকার গড়তে দলের আরও ৩৫ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রীত্ত্বের পদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দাবিদার দলের সেখানকার অন্যতম মুখ বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
অশোক গেহলত উল্লেখ করেন যে, জিজ্ঞাসাবাদেন জন্য তাঁকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশকে সাহায্য করা তাঁদের কর্তব্য। তাঁকে উদ্ধৃত করে একটি সূত্র জানিয়েছে, “কেউ আইনের ঊর্দ্ধে নন”। তাঁর মন্তব্যকে লোকদেখানো বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শচীন পাইলটের অনুগামীরা, তাঁদের দাবি, স্বরাষ্ট্র দফতর নিয়ন্ত্রণ করেন অশোক গেহলত।
২০১৮ সালে দল ক্ষমতায় আসার পর, মুখ্যমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদার ছিলেন শচীন পাইলট। তাঁকে দেওয়া হয় উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ।
২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পায় ১০৭টি আসন, ১২ জন নির্দল বিধায়কের সমর্থনও যায় কংগ্রেসের পক্ষেই। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় লোকদল, সিপিএম, এবং ভারতীয় ট্রাইব্যাল পার্টি অশোক গেহলতকে সমর্থন জানায়। অশোক গেহলতের দাবি, দলের বিধায়কদের শিবির বদলের জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছে বিজেপি।
মার্চে ২২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ফলে কমল নাথ সরকারের পতন হয়। রবিবার জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া টুইট, “আমার সহকর্মী শচীন পাইলটের জন্য দুঃখ, তাঁকে একপেশে করা হয়েছে এবং তাঁকে হেনস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত। প্রতিভা এবং ক্ষমতা দেখিয়েও দলের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে পারেননি সেভাবে”।
Post a comment