মাঝরাতে পাস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ১০ তথ্য
লোকসভায় বিলটি পাস হওয়ার পরে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘‘আনন্দিত যে লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল, ২০১৯ পাস হয়ে গেল সমৃদ্ধশালী ও ব্যাপক বিতর্কের মধ্যে। যে সাংসদরা ও দলগুলি এই বিলকে সমর্থন করেছেন আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। এই বিল ভারতের শতাব্দী প্রাচীন আত্মীকরণের তত্ত্ব ও মানবতাবাদী মূল্যবোধের অনুসারী।''
এর আগে অধিবেশনের শুরুতে অমিত শাহ জানান, এই বিল থেকে মুসলিম বা উত্তর-পূর্ব ভারতের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেননা এই বিলের লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের সাহায্য করা। তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ কোটি এমন মানুষেরা ঘর, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে বঞ্চিত হয়ে ভুগছে।''
এই বিল মুসলিম-বিরোধী, একথাও মানতে চাননি অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, কারণ তাঁরা সেখানে সংখ্যালঘু নয়। বিষয়টা এতটাই সরল। ''
কেন্দ্র ভারতকে ‘‘হিন্দু পাকিস্তান'' বানাতে চাইছে, একথাও উড়িয়ে দেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘এটা ভুল কথা। ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা ৯.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪.২ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ২৩ শতাংশ থেকে কমতে কমতে ৩.৭ শতাংশ হয়েছে।''
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ব্যাখ্যা করে জানান, উত্তর-পূর্বের বহু অংশকে এই বিলের বাইরে রাখা হয়েছে তাদের আপত্তির কথা মাথায় রেখে। ওই অঞ্চলে চলতে থাকা প্রতিবাদের প্রেক্ষিতেই এইকথা বলেন তিনি। ওই অঞ্চলের মানুষের দাবি, এই বিলের ফলে তাঁদের পরিচয় বিপন্ন হবে।
বিরোধীরা মুসলিমদের বৈষম্য নিয়ে কথা তুললে অমিত শাহ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কোনও ধর্মের মানুষেরই ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।''
বিতর্কে অমিত শাহ বলেন, এই বিলের সহ্গে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এনআরসি আনব এবং স্বচ্ছতার সঙ্গেই আনব। এনআরসি হবে। যখন এনআরসি হবে সমস্ত অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত হবে।''
জোটসঙ্গী থেকে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠা শিবসেনাও প্রথমে বিল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বিলটিকে সমর্থন জানায়।
কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করেছে। দলের নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘এই বিল সংবিধানবিরোধী। সংবিধানের সারমর্ম এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রস্তাবিত আদর্শের বিরোধী।'' তাঁর দলীয় সতীর্থ শশী থারুর বলেন, বিজেপির চিন্তাভাবনা পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আলি জিন্নার মতোই।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা রয়েছে, এদেশে গত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর বসবাস করলেই কেউ এদেশের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারে। সংশোধনী বিলে এই সময়সীমাকে অ-মুসলিমদের জন্য পাঁচ বছর করতে চাওয়া হয়েছে।