কেউ কেউ দেখতে পেয়েছিলেন যে, লেভেল ক্রসিং-টা বন্ধ ছিল।
নিউ দিল্লি: বিজয়া দশমী ও দশেরার সন্ধেতে গোটা দেশ সাক্ষী হয়ে রইল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার। ঘটনাটি পাঞ্জাবের অমৃতসরের জোধা ফাটকের। দশেরা উপলক্ষে রাবণের কুশপুতুল পোড়াতে ব্যস্ত ছিল কয়েকশো মানুষ। অতি উৎসাহ, আনন্দ ও বাজি ফাটানোর মাঝে তারা বুঝতে পারেনি যে কখন চলে এসেছিল কাছের রেললাইনের ওপর। সেই না বুঝতে পারাটাই কাল হল। চলন্ত ট্রেন পিষে দিল ষাটজন মানুষকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই খবর। প্রতি বছরের দশেরার মতোই এই বছরটিতেও কুড়ি ফুট লম্বা রাবণের কুশপুতুল গড়া হয়েছিল পোড়ানোর জন্য। ওই বিশাল কুশপুতুলের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার জন্য বহু মানুষ চলে আসেন একটু দূরের রেললাইনে। সন্ধে ছ'টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট নাগাদ আগুন দিয়ে দেওয়া হয় রাবণের কুশপুতুলে। সঙ্গে সঙ্গেই আকাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। চারিদিকে তখন এক অসীম অন্ধকার। ওই বিশাল কুশপুতুলে আগুন ধরানোর পর তা যাতে কোনওভাবেই তাদের গায়ে এসে না পড়ে সেই ভয়ে উপস্থিত মানুষজন হুড়োহুড়ি করে দৌড়তে থাকেন রেললাইনের দিকে। কেউ কেউ অবশ্য দেখতে পেয়েছিলেন, যে, লেভেল ক্রসিং-টা বন্ধ রয়েছে। ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, খুব শীঘ্রই সেখান দিয়ে একটি ট্রেন যাবে।
কিছু বুঝে ওঠার আগে দ্রুতগতির ট্রেনটি এসে পড়ে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে 60 জন। 72 জনেরও বেশি গুরুতর জখম।
জলন্ধর থেকে আসা ট্রেনটির অবিরাম হর্নের শব্দও ঢাকা পড়ে গিয়েছিল বাজির শব্দে। কেউ শুনতে পায়নি সেই সতর্কবাণী। ফলাফল, এতগুলো জলজ্যান্ত প্রাণের এক লহমায় শেষ হয়ে যাওয়া।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকদের জানান, কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ট্রেনটি চলে এসেছিল। কী হচ্ছে, তা ভালো করে বুঝতে পারার আগেই অসংখ্য মানুষকে পিষে দিয়ে বেরিয়ে যায় সেটি।
মাত্র দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড সময় নিয়েছিল ট্রেনটি এলাকাটি পেরোতে। তার মধ্যেই এতগুলো দেহকে গাদাগাদি করে পিষে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে দেয় তা।
এই ঘটনার পর, আপাতত জলন্ধর-অমৃতসর বিভাগে ট্রেন চলাচল স্থগিত রয়েছে।