ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন
হাইলাইটস
- ১৯ বছর পর ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরলেন আজহারউদ্দিন
- ১০০ ভোটের ব্যবধানে জিতে এইচসিএ-র সভাপতি হলেন আজহার
- ক্রিকেটের উন্নতিতেই কাজ করে যেতে চান প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক
ক্রিকেটে তাঁর নির্বাসন এবং নির্বাচনের মধ্যে ব্যবধান ১৯ বছরের। মাঝে যদিও লোকসভা নির্বাচনে লড়েছেন। জিতেছেন। হেরেছেনও। কিন্তু ক্রিকেটের নির্বাচনে জয় এই প্রথম। আর প্রথম জয়েই হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। অথচ গত ১৯ বছর তাঁর কেটেছে নানা টানাপড়েনের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত আবার ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফিরে এলেন Mohammad Azharuddin। ২০০০ সালে ম্যাচ গড়াপেটায় নাম জড়িয়ে আজীবন নির্বাসনের মুখে পড়তে হয় Indian Cricket Team -এর এক সময়ের সফলতম এই অধিনায়ককে। তার পর থেকে শুধুই ‘যুদ্ধ''। ব্যক্তিগত জীবনেও নানা ওঠা-পড়া। বাইক দুর্ঘটনায় হারাতে হয়েছে ছোট ছেলেকে। তার পরেও নিজেকে গুটিয়ে ফেলেননি। ক্রিকেট মাঠের লড়াই-মানসিকতাকে সঙ্গী করেই নির্বাসনের বিরুদ্ধে যুঝে গিয়েছেন। তাঁর ফলও পেয়েছেন। প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এখন তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি। সদ্য হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (HCA) সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। দায়িত্ব পেয়েই জানিয়েছেন, নতুন করে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে চান— ক্রিকেটের স্বার্থে, ক্রিকেটের উন্নতিতে। একান্ত সাক্ষাৎকারে সদর্পে বলেও দিলেন, ‘‘ক্রিকেট ছেড়ে আমি কখনও থাকিনি, থাকবও না।''
প্রশ্ন: অনেক শুভেচ্ছা, ক্রিকেটে ফিরে আসার জন্য?
আজহার: অসংখ্য ধন্যবাদ।
প্রশ্ন: এটাকে কি আপনার ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফেরা বলবেন?
আজহার: সেটা আপনি বলতেই পারেন। তবে, আমি কিন্তু সব সময় ক্রিকেটের সঙ্গেই ছিলাম। অ্যাসোসিয়েশনে যেতাম। খেলা দেখতাম। ক্রিকেটের উন্নতিতে কিছু করার থাকলে উপদেশও দিতাম (হাসি)।
প্রশ্ন: বিপুল ভোটে জিতে হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হয়েছেন, এটাই কি প্রত্যাশা ছিল?
আজহার: সত্যিই অনেকটা বড় মার্জিন (১৭৩-৭৩)। যে কোনও নির্বাচনের ফলই আন্দাজ করা ভীষণ মুশকিলের। আপনি আশা করতে পারেন, জিতবেন। আমি এই ফলে খুব খুশি।
প্রশ্ন: ২০০০ থেকে ২০১৯ একটা দীর্ঘ সময়, ক্রিকেটকে কতটা মিস করেছেন?
আজহার: আগেই বললাম যে, আমি ক্রিকেটের বাইরে কখনওই ছিলাম না। বিদেশ থেকে ক্রিকেটাররা আসতেন আমার কাছে কোচিং নিতে। নিয়মিত কোচিং করিয়েছি। আর অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে তো ছিলামই। কিন্তু এটা ঠিক যে, সে সবই ছিল বেসরকারি ভাবে। এখন সবটাই অফিসিয়াল। আমি ভীষণ খুশি।
প্রশ্ন: এক জন ক্রিকেটারকে সব সময় ডোমেস্টিক ক্রিকেট খেলেই জাতীয় দলে জায়গা করে নিতে হয়। আপনার ক্ষেত্রেও কী এটা ডোমেস্টিক পর্যায়ের শুরু? এর পর বিসিসিআই? ক্যাপ্টেনের মতো দলকে নেতৃত্ব দিতে চাইবেন?
আজহার: ভীষণ কঠিন প্রশ্ন... (একটু থেমে প্রশ্নটা আরও এক বার শুনতে চাইলেন)। ক্রিকেটের স্বার্থে অবশ্যই চাইব।
প্রশ্ন: ক্রিকেটার হিসেবে ১৯ বছর আগে জীবন থেমেছিল। তার পর সরাসরি কর্মকর্তা। হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসেবে আপনার পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
আজহার: আমার লক্ষ্য সব সময় একটাই থেকেছে— আগে, এখনও... ক্রিকেটের উন্নতি করা। এ বারও সেটাই করতে চাই। এটাই একমাত্র লক্ষ্য।
সদ্য হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছিল প্রচণ্ড ব্যস্ততা। তার মধ্যেই টেক্সট করা গেল— কথা বলতে চাই। বেশ কিছু ক্ষণ পর জবাব এল। ফোন করতে টানা রিং হয়ে গেল। ধরলেন না। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে নিজেই ফোন করে বললেন, ‘‘বলুন।'' সাক্ষাৎকারের মাঝেই অন্যদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। ধন্যবাদ বলে রেখেও দিলেন একটা সময়। জানিয়ে দিলেন আর সময় নেই। তিনি যে মহম্মদ আজহারউদ্দিন। তিনি যে সব সময়েই ব্যতিক্রম।