গত আগস্টে রাজ্যের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস’ তুলে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
নয়াদিল্লি: ইন্টারনেটের অধিকারও বাক স্বাধীনতারই অংশ। শুক্রবার একথা জানাল সুপ্রিম কোর্ট। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনকে এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা (যার মধ্যে ইন্টারনেট পরিষেবাও রয়েছে) পুনর্বিবেচনা করতে বলল শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, গত আগস্টে রাজ্যের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' তুলে নেওয়ার পর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। জারি রয়েছে অন্যান্য নিষেধাজ্ঞাও। এদিন সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘‘ইন্টারনেট বন্ধ রাখার বিষয়টি অবিলম্বে পুনর্বিবেচনা করতে হবে। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা একমাত্র স্বল্প সময়ের জন্য প্রয়োগ করা যেতে পারে। এবং এটি বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার বিষয়।'' জম্মু ও কাশ্মীরে জারি নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে জমা পড়া পিটিশনের প্রেক্ষিতে একথা বলে সুপ্রিম কোর্ট।
সিএএ, এনপিআর ও এনআরসি অপ্রয়োজনীয়, খোলা চিঠিতে দাবি প্রাক্তন আমলাদের
শীর্ষ আদালত আরও বলে, ‘‘স্বাধীন চলাফেরা, ইন্টারনেট ও মৌলিক স্বাধীনতায় নিষেধাজ্ঞা ক্ষমতার নির্বিচার প্রয়োগ চলতে পারে না।'' বিচারপতি এনভি রামানা বলেন, সংবিধানের ১৯ ধারায় যে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে ইন্টারনেট পরিষেবাও রয়েছে। আদালত এও বলে যে, সমস্ত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জনতাকে জানাতে হবে, যাতে তাকে আইনত চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ মেলে।
জম্মু ও কাশ্মীরে ১৪৪ ধারা জারি করা বা বড় জমায়েতকে নিষিদ্ধ করার নির্দেশেরও সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘‘ভিন্নমতে অবদমিত করে রাখার প্রক্রিয়া হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা যায় না।''
বিদেশি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ, পিডিপি থেকে বহিষ্কৃত আট নেতা
চার্লস ডিকেন্সের কালজয়ী উপন্যাস ‘আ টেল অফ টু সিটিস'-এর উদ্ধৃতি তুলে ধরে বিচারপতি রামানা বলেন, সুরক্ষা ও জনতার স্বাধীনতার মধ্যে সমতা রক্ষা করাই আদালতের উদ্দেশ্য। নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত করার কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, যদি একান্তই কোনও উপায় না থাকে কেবল তখনই নিষেধাজ্ঞা জারি করা যায়।
তিন সদস্যের বেঞ্চ ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত রায়দান স্থগিত রেখেছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘স্পেশাল স্ট্যাটাস' তুলে নিয়ে তাকে দু'টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এরপর থেকেই সেখানে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় বড় জমায়েতে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।