আইনজীবী অরুণ জেটলি পরে রাজনীতিবিদ হন, প্রত্যেক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক ছিল।
হাইলাইটস
- ৬৬ বছর বয়সে প্রয়াত দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
- শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৯ লোকসভা ভোটে লড়েননি অরুণ জেটলি।
- শাসক,বিরোধী সব রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল জেটলির।
নয়াদিল্লি: প্রথম মোদি মন্ত্রিসভার (Modi's Government) দ্বিতীয় ইন্দ্রপতন। প্রয়াত দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি (Arun Jaitley)। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। ৬৬ বছর বয়সে দিল্লির এইমস হাসপাতালে শনিবার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। চলতি মাসেই চলে গিয়েছেন প্রথম মোদি মন্ত্রিসভার বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ (Sushma Swaraj)। এদিন অরুণ জেটলি। দুজনেই ছিলেন আইনজীবী। পরে তাঁরা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেন। একাধারে বাগ্মী, যুক্তিবাদী ও রাজনীতিবিদ হিসাবে দেশের শাসক বিরোদী সহ রাজনৈতিক দলের নেতাদেরই শ্রদ্ধা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। দলের মধ্যে হোক বা বাইরে, জেটলি পরিচিত ছিলেন মোদি সরকারের ‘মুশকিল আসান' হিসেবে। বিশ্লেষকরা তাঁকে বলতেন, বিজেপি সরকারের ‘ultimate backroom strategist'।
Arun Jaitley Death: প্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৬
শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৯ লোকসভা ভোটে অংশ নেননি অরুণ জেটলি। প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি দিয়ে সেকথা জানিয়েও ছিলেন তিনি। তবে, দেশব্যাপী গেরুয়া ঝড়ের পর প্রধানমন্ত্রী মোদিকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি তিনি। জেটলির তরফে প্রতিশ্রুতি ছিল, সক্রিয়ভাবে সব সময় না পারলেও প্রয়োজনে দেশের কাজ, সরকারকে সাহায্য করায় তিনি সব সময় প্রস্তুত থাকবেন।
গত কয়েকমাস ধরেই শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। কিডনির সমস্যায় কাবু হয়ে পড়েন তিনি। গত মে মাসে তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। চিকিৎসার কারণে বেশ কয়েক মাস অর্থমন্ত্রকে যেতে পারেননি। অন্তবর্তী বাজেটও পেশ করা থেকে বিরত ছিলেন। তবে, ২০১৪ সালের পর থেকে রাজনীতি ও অর্থনীতিতে মোদি সরকারের মেরুদণ্ডের কাজ করতেন তিনি।
PM's Tribute To Arun Jaitley: "রাজনৈতিক মহামানব, বৌদ্ধিক বিবেচক"; মোদির শ্রদ্ধাঞ্জলি
প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই প্রধানমন্ত্রী মোদি, অরুণ জেটলিকে অর্থ প্রতিরক্ষা ও তথ্য-সম্প্রচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দফতরের দায়িত্ব দেন। যা সাফল্যের সঙ্গে পালন করেন তিনি। পরে অর্থ দফতরের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলেচ্ছেন একাই।
গত ৯ অগস্ট সকালে শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে এইমসে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কার্ডিওলজি বিভাগে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল তাঁর। পরদিন ১০ অগস্ট এইমস শেষ বারের মতো মেডিকেল বুলেটিন প্রকাশ করে জানিয়েছিল, শারীরবৃত্তীয় ভাবে উনি স্থিতিশীল রয়েছেন। তার পর আর এইমসের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। সে দিন থেকেই লাইফ সাপোর্টে তথা ভেন্টিলেশনে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী।
৯ অগস্ট ছিল শনিবার। আজ ২৪ অগস্ট আর এক শনিবার। টানা পনেরো দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বিজেপি তথা সর্বভারতীয় রাজনীতির এই খোশ মেজাজের নেতা।
পাঞ্জাবি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অরুণ জেটলি। দিল্লির প্রখ্যাত শ্রীরাম কলেজ থেকে স্নাতক। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের হয়ে তাঁর প্রথম রাজনীতিতে হাতেখড়ি। পরে যোগ দেন বিজেপিতে। ইন্দিরা গান্ধির প্রধানমন্ত্রীত্বে জরুরী অবস্থার সময়ে কারাবন্ধিও হয়েছেন জেটলি। সেই সময় জয় প্রকাশ নারায়ণের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন তিনি।
পরে বিজেপির অভ্যন্তরে লালকৃষ্ণ আদাবনির ঘনিষ্ট হিসাবে নাম উঠে আসে অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজের। পরে অবশ্য মোদিরও কাছের মানুষ হিসাবে পরিচিতি পান তিনি। ২০১৪ সালে প্রবল মোদি হাওয়ায় অমৃতসর লোকসভা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও জিততে পারনেনি প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ। রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে মন্ত্রিসভায় সামিল করা হয় অরুণ জেটলিকে।
রাজনীতির পাশাপাশি ক্রিকেট অনুরাগী বলেও জেটলির খ্যাতি ছিল। দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রদান হিসাবেও কাজ করেছেন এই রাজনীতিবিদ।