Coronavirus: রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ক্রমশই গুরুতর হচ্ছে, উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী
হাইলাইটস
- রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে
- বেডের অভাবে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না রোগীরা, অভিযোগ বিরোধীদলগুলোর
- পূর্ণ সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করুন মুখ্যমন্ত্রী, দাবি বিরোধীদের
কলকাতা: সরকারি অব্যবস্থা এবং অপদার্থতার কারণেই পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) করোনা সংক্রমণ দ্রুতহারে ছড়াচ্ছে, এমনটাই মনে করছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলো। দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে (
Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন ১,৫৮৯ জন, মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। দেখতে দেখতে রাজ্যের মোট ১,০০০ জনের প্রাণ কাড়ল কোভিড- ১৯। সাধারণ মানুষ থেকে রাজ্যের দক্ষ প্রশাসক, করোনার ছোবল থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই। বুধবারই পশ্চিমবঙ্গের করোনা (Covid- 19) সংক্রমণের সাম্প্রতিক চিত্রটি তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান যে, আগামী ২ মাসে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে কোভিড যুদ্ধে প্রাণ হারানো রাজ্য সরকারি কর্মীদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে একটি বিশেষ ব্যাজ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত ১২ জন সরকারি কর্মচারী করোনার কারণে মারা গেছেন।
রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় আরও ১,৫৮৯ জন কোভিড- ১৯ পজিটিভ
এর আগে গত ১২ জুলাই রাজ্যে একদিনের মধ্যে দেড় হাজারেরও বেশি করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল।মাঝে ওই সংক্রমণের হার সামান্য কম থাকলেও বুধবার ফের দাপট দেখিয়েছে কোভিড- ১৯। একদিনের মধ্যে রাজ্যে নতুন করোনা আক্রান্ত ১,৫৮৯ জন।
বিধানসভাতেও করোনার হানা, আক্রান্ত টাইপিস্ট, অন্যান্য কর্মীরা কোয়ারান্টাইন
শুধু তাই নয়, এরাজ্যে করোনা থেকে পুনরুদ্ধারের হারও কমছে। ১ জুলাই যেখানে করোনা পুনরুদ্ধারের হার ছিল ৬৫.৩৫ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে তা কমে ৬০.০৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ১ জুলাই যেখানে করোনা পজিটিভিরে হার ছিল ৩.৮৫ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে সেটি বেড়ে ৫.৩০ শতাংশ হয়েছে।
শুধু সংখ্যাই নয়, আরও উদ্বেগের কারণ হ'ল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির জন্যে একাধিক হাসপাতালে বেডের জন্যে ঘুরতে হচ্ছে, ফলে ভর্তির অপেক্ষায় থাকতে থাকতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের।
কোভিড সঙ্কটের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিরোধী দল বাম ও কংগ্রেস রাজ্য বিধানসভার বাইরে ধরনায় বসার কর্মসূচি নিয়েছিল। কিন্তু বিধানসভার এক কর্মী করোনা পজিটিভ হিসাবে ধরা পড়ায় সেই কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। কেননা আগামী ১০ দিন বন্ধ থাকছে বিধানসভা। তবে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একজন পূর্ণসময়ের জন্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করা উচিত।
তিনি বলেন, "রাজ্যের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন ... তাঁরা যত না করোনা ভাইরাসকে ভয় পাচ্ছেন তার থেকে অনেক বেশি ভয় পাচ্ছেন রাজ্যের অব্যবস্থা দেখে। তাঁরা ভাবছেন যে যদি তাঁদেরও ভবিষ্যতে করোনা টেস্টে সংক্রমণ ধরা পড়ে তবে তারা কি আদৌ কোনও হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন? তাঁরা নিশ্চিত নন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী যা খুশি তাই করছেন। এখন সময় এসে গেছে পশ্চিমবঙ্গে একজন পূর্ণ সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করার। মানুষ জানেন না যে করোনা টেস্ট করতেও বা তাঁরা কোথায় যাবেন।"
এদিকে কোভিড যুদ্ধে সামিল হয়ে প্রাণ হারানো রাজ্য সরকারি কর্মীদের পরিবারপিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বিদ্রূপ করে প্রশ্ন করেন," যাঁদের মৃত্যুর পর মৃতদেহের আর কোনও খোঁজ মেলেনি তাঁদের কীভাবে ক্ষতিপূরণ দেবেন?"
যদিও এর জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "অকারণে এই বিষয় নিয়ে নোংরা রাজনীতি করবেন না। নোংরা রাজনীতি করার এটা সময় নয়" ।