মলডোয় চলছে সামরিক পর্যায়ের বৈঠক। (ফাইল ছবি)
নয়াদিল্লি: মলডোয় চলছে পঞ্চম দফার সামরিক বৈঠক। উপলক্ষ্য ইন্দো-চিন সীমান্তে (Tension in Indo-China border) এলএসি বরাবর স্থিতাবস্থা ফেরানো। সীমান্ত (LAC) থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে আসতে বদ্ধপরিকর। এই উদ্যোগে সহমতে পৌঁছতে চলছে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। কর্নেল পদমর্যাদার এই বৈঠকের মধ্যেও উদ্বেগ ভারতীয় শিবিরে। প্যাংগং লেকের এখনও লালফৌজের নজরদারি বোট চোখে পড়েছে। তেমনই শীতের পোশাক সংগ্রহের একটা হিড়িক চলছে সীমান্তে। আর এটা চিনা সেনার অন্যতম বড় উদ্যোগ।
ফিঙ্গার-৫ এলাকায় চিন সেনার উপস্থিতির ছবি।
ইন্দো-চিন সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে ফের আলোচনায় বসেছে দুই দেশ। বিতর্কিত এলাকা থেকে সরে আসার যে প্রক্রিয়া, সেটা শেষ করতেই এই কূটনৈতিক উদ্যোগ। রবিবার এমন খবর দিয়েছে সেনার একটি সূত্র। এদিন ১১টা নাগাদ মলডোয় কমান্ডার পদের এই বৈঠক শুরু হয়েছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চিন ভূখণ্ডে হবে এই বৈঠক। গত মার্চ মাসের পর থেকে এটি পঞ্চম বৈঠক। যে বৈঠকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নির্দিষ্ট দূরত্বে সরতে আলোচনা হয়েছে দু'পক্ষের। এদিকে, লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে দুই দেশের তরফ থেকেই সহমত হয়ে বিতর্কিত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে এই অভিযোগ করা হয় যে, লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পুরোপুরি সেনা সরায়নি চিন। যদিও, বুধবার, চিনের বিদেশমন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানান, দুই দেশের তরফ থেকেই নিজেদের সেনাবাহিনীকে গালওয়ান উপত্যকা, হট স্প্রিংস এবং কনকা পাস ও পাংগং হ্রদ এই তিনটি জায়গা থেকে পুরোপুরি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
যদিও চিনের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি এপ্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন যে, সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের বিষয়ে দুই দেশই সম্মতি দিলেও এখনও পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ হয়নি। চিন এখনও তাদের সব সেনা সরায়নি বলেই অভিযোগ করেন তিনি।
ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কথা বলার সময় অনুরাগ শ্রীবাস্তব আবারও দু'দেশের মধ্যে সামরিক ও কূটনৈতিক আলোচনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে একথাও মনে করিয়ে দেন যে সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার উপরই নির্ভর করছে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়টি।
অথচ দু'দিন আগেই চিনের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে, সীমান্তের বেশিরভাগ জায়গায় বিতর্কিত অংশ থেকে দুই দেশের পক্ষ থেকে সেনা প্রত্যাহারের কাজ শেষ হয়েছে। শি জিনপিংয়ের দেশ আরও বলে যে স্থলভাগে পরিস্থিতি ক্রমশই স্বাভাবিক হচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন যে, প্রয়োজনে দুই দেশের সেনাবাহিনীর সামরিক কর্তারা খুব তাড়াতাড়ি আরও একবার বৈঠক করবেন এবং সেনা সরানোর বিষয়টি সম্পন্ন করার জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং হবে তা নিয়েও আলোচনা করবেন। তিনি এও বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই বারবার উল্লেখ করেছি যে সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখাই আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি।"