বিজেপির বিরূদ্ধে, অবৈধ কয়লাখনির মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতিকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ করল কংগ্রেস
বেঙ্গালুরু:
কর্নাটক ভোটের মাত্র দু’দিন আগে, কংগ্রেস একটি ভিডিও প্রকাশ করল। যেখানে দেখা যাচ্ছে, অবৈধ কয়লা খাদানের মামলায় অভিযুক্ত রেড্ডি ব্রাদার্সের পক্ষে বিচারের মোড় ঘোরানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির জামাইয়ের সঙ্গে ঘুষের অর্থ নিয়ে সন্ধি করছেন বিজেপি প্রার্থী বি শ্রীরামুলু।
এই ভিডিও সম্বন্ধে গতকাল অমিত শাহ নির্বাচনী প্রচার-প্রক্রিয়ার অন্তিমলগ্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান যে, “ভিডিওটি ফেক। এতে একদমই বিশ্বাস করবেন না আপনারা”।
তার আগে, একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস 2010-এ শুট করা ভিডিওটি প্রকাশ করে। যেখানে দেখা যায়, শ্রীরামুলু এবং আরও চারজন ‘দালাল’-এর সঙ্গে বসে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণনের জামাই শ্রীরঞ্জন ওবুলাপুরম মাইনিং কোম্পানির বিরূদ্ধে মামলায় সংস্থার মালিক জনার্দন রেড্ডিকে বাঁচানোর জন্য ঘুষের অর্থ নিয়ে আলোচনা করছেন।
এনডিটিভি এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি।
এই শ্রীরামুলুকেই বাদামি বিধানসভা কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরূদ্ধে প্রার্থী করেছে বিজেপি। কংগ্রেস অভিযোগ করে, অন্ধ্র-কর্নাটক সীমান্তে অবৈধ কয়লাখাদানের দায়ে অভিযুক্ত জনার্দন রেড্ডিকে বাঁচানোর জন্য কয়েক কোটি টাকা ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব রাখেন।
2009 সালে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার অনন্তপুরে জনার্দন রেড্ডির সংস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। তিনমাস বাদে, 2010-এর ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট সরকারের আবেদন খারিজ করে দেয়। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার তারপর মামলাটি করে সুপ্রিম কোর্টে।
10 মে, 20110-এ জনার্দন রেড্ডির পক্ষে রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ঠিক তার পরেরদিনই অবসর নেন প্রধান বিচারপতি কে জি বালাকৃষ্ণন।
2008-এ কর্নাটকে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী হন রেড্ডি। বছরখানেক বাদেই লোকায়ুক্তের রিপোর্টে অভিযুক্ত হওয়ার পর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। 2011 সালে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
কংগ্রেস প্রশ্ন তোলে, সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে রেড্ডির সংস্থাকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারে।
কংগ্রেস অভিযোগ করে যে, 2010-এর জানুয়ারি থেকে মে’র মধ্যে কোনও একটা সময় প্রায় 500 কোটি টাকার ঘুষ নিয়ে কথা হয় এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে “100 কোটি টাকা দেওয়া হয়”।
যদিও, ভিডিওটি কে বা কারা শুট করেছে, তা জানা যায়নি। কংগ্রেসের দাবি অনুযায়ী, ভিডিওটি শুট করা হয়, কারণ, “ঘুষের টাকা নিয়ে আলোচনাটি ফলপ্রসু হচ্ছিল না”।
তাঁর নামে ওঠা এই অভিযোগ অস্বীকার করে শ্রীরঞ্জন এনডিটিভিকে বলেন, “এটি পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। কংগ্রেস ভিডিওটি প্রকাশ করতে এত দেরি করল কেন, তারা এতদিন যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনই তো করতে পারত”।
কংগ্রেসের আক্রমণের লক্ষ্য এখন জামিনে ছাড়া পাওয়া জনার্দন রেড্ডির দুই ভাই, যাঁরা এবারের নির্বাচনে বিজেপির দুই প্রার্থীও।
ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করা বিজেপি প্রধানকে উত্তরে একটি কথাই বলছে কংগ্রেস- তাহলে তদন্ত হোক।
“ভিডিওটি ফেক, তা উনি ( অমিত শাহ ) কী করে বলতে পারছেন? উনি কি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ”? প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও।