কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের বিধায়কদের গণইস্তফা
হাইলাইটস
- ১২ জুলাই বিধানসভার অধিবেশন শুরু হবে
- কংগ্রেস-জেডিএস জোটের মোট ১৪ জন বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন
- অ-বিজেপি সরকারগুলির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি, অভিযোগ কংগ্রেসের
বেঙ্গালুরু: বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলির সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছে বিজেপি (BJP), কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের (Congress-JDS coalition) ১১ জন বিধায়কের ইস্তফার ( resigned) পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge) ।বিজেপির বিরুদ্ধে শনিবার রাতে ওই বিধায়কদের প্রাইভেট জেটে করে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার এবং সেখানে একটি পাঁচতারা হোটেলে তাঁদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।এখনও পর্যন্ত শাসক জোটের ১৪ বিধায়কের(MLA) ইস্তফা দেওয়ার খবর মিলেছে।লোকসভা নির্বাচনের পর জনতা দল সেকুলারের প্রধান তথা কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারাস্বামীর (HD Kumaraswamy) ব্যক্তিগত সফরে আমেরিকা রওনা হওয়ার পরেই ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে দলের মধ্যেকার এই সাম্প্রতিক সঙ্কটের খবর পেয়ে খুব তাড়াতাড়ি আমেরিকা থেকে বেঙ্গালুরু ফিরে আসছেন কর্নাটক মুখ্যমন্ত্রী,তাঁর সঙ্গে ফিরছেন সফরসঙ্গী প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডুরাও।
‘‘অ-বিজেপি সরকারগুলির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। আঞ্চলিক দলগুলিকে দুর্বল করে দিতে চাইছে তাঁরা। দুর্ভাগ্যের বিষয়, প্রত্যক্ষ ভাবে কেন্দ্রীয় সরকার এই অশান্তিতে জড়িত, যা একেবারেই ঠিক নয়...''কংগ্রেস-জনতা দল সেকুলারের জোটে এই সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন খাড়গে।
অভিযোগ উঠেছে যে একটি বিশেষ বিমানে করে ওই বিধায়কদের উড়িয়ে নিয়ে গেছে বিজেপি। যদিও দলের বিধায়কদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা বলে দাবি করেন প্রবীণ ওই কংগ্রেস নেতা।“১২ জুলাইয়ে আমাদের কাছে ছবিটি স্পষ্ট হবে”,বলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
তাঁকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে এই জল্পনাও উড়িয়ে দেন খাড়গে।“আমাদের মধ্যে বিভেদ করার জন্যে এই ধরণের ভুলভাল খবর সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে”,সাফ জানান তিনি।
সোমবার দুপুরে কংগ্রেসের দুই বিধায়কের পদত্যাগের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই শনিবার আরও ৮ জন কংগ্রেস বিধায়ক ও ৩ জনতা দলের বিধায়ক বিধানসভার অধ্যক্ষের কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দেন। মুম্বইয়ে উড়ে যাওয়ার আগে ওই ১১ জন বিধায়কই রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এইচ বিশ্বনাথ, জেডিএস বিধায়ক যিনি ইতিমধ্যেই বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতে তাঁর পদত্যাগপত্র তুলে দিয়েছেন, জানা গেছে, ঠিক তাঁর দুদিন আগেই তিনি জেডিএসের রাজ্য সভাপতির পর থেকেও ইস্তফা দেন।
এই পদত্যাগপত্রগুলি গৃহীত হলে কর্নাটকের বর্তমান জোট সরকার আর সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে না।
কর্নাটক বিধানসভার ২২৪টি আসনের মধ্যে ১১৮ টি আসন কংগ্রেস ও জেডিএস সেকুলার জোটের অধীনে, যাঁর মধ্যে রয়েছেন একজন বিএসপি ও নির্দল সদস্যও।এই সংখ্যা ১০৫ এর নিচে নেমে গেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে তাঁরা। কেননা তখন বিজেপি ১০৫ বিধায়ক নিয়ে সরকার গড়ার আবেদন জানাবে।
আগেই কর্ণাটকে বিজেপির প্রধান বিএস ইয়েদুরাপ্পা আভাষ দিয়েছিলেন যে, লোকসভা নির্বাচনের পরেই এই সরকারের পতন ঘটবে। তাঁর এই পূর্বাভাসকেই হাতিয়ার করেই কংগ্রেস-বিজেপি জোট অভিযোগ করেছে যে এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে।
“এইচডি কুমারাস্বামী এবং সিদ্দারামাইয়া কি বলছেন তাঁর কোনও জবাব আমি দিতে চাই না।আমি এই গোটা ব্যাপারের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়িত নই”, এএনআইকে জানিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।
শনিবারের এই গণইস্তফার পরেই জরুরি বৈঠক ডাকেন কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা ও কংগ্রেস নেতা শিবকুমার। রবিবার সকালে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বেণুগোপাল একটি হোটেলে শীর্ষ কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সিদ্দারামাইয়া, এশওয়ার খন্দকার, এম বি পাটিল, ডি কে শিবকুমার সহ অন্যান্যরা।