Assam CAB protest: বিক্ষোভকারীদের থামাতে কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে পুলিশ, করা হয় লাঠিচার্জও
হাইলাইটস
- নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তাল অসম
- গুয়াহাটি বিমানবন্দরে আটকে পড়েন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল
- বুধবার রাজ্যসভাতেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ করেন অমিত শাহ
গুয়াহাটি: অসমের (Assam) ১০টি জেলায় আজ সন্ধে থেকে বন্ধ রাখা হচ্ছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা, নাগরিকত্ব বিলের (Citizenship Amendment Bill) প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন বহু মানুষ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় বিক্ষোভকারীদের, সেনাবাহিনীকে রাস্তায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অসম অধিগ্রহণ ১৯৮৫ এর প্রতিবাদে ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। গুয়াহাটি বিমানবন্দরে আটকে পড়েন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল, এদিন যখন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল আটকে পড়েন, সেই সময় রাজ্যসভায় বিতর্ক চলছিল নাগরিকত্ব বিল নিয়ে। সোমবার বিলটি লোকসভায় পাশ হয়। কোনওরকমে মুখ্যমন্ত্রীকে শহরের ভিতর দিয়ে নিয়ে যান তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা।
কোনও দল বা ছাত্র সংগঠনই বনধ্ ডাকেনি, সচিবালয়ের সামনে রাজ্যে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভরত ছাত্ররা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে পলিশ, এছাড়াও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। ছাত্রনেতা জানিয়েছেন, সচিবালয়ের সামনে পুলিশের পদক্ষেপে আহত হন বহু বিক্ষোভকারী। আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ব্যবহার করা হয় জল কামান।
সমস্ত আধিকারিক ও পুলিশ আধিকারিকরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, তবে বে-সরকারি কারণে, গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় এবং জোরহাটের মতো এলাকায় কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংবাদসংস্থা পিটিআই।
সচিবালয় ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে পড়ুয়াদের একটি বড় অংশ, এবং জিএস রোডে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ফলে পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় পুলিশ।
পিটিআই জানিয়েছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের জন্য তৈরি করা মঞ্চও ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সরকারি ব্যানার এবং পোস্টার ভেঙে দেওয়া হয় এভং সচিবালয়ের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এক ছাত্রনেতাকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, “এটি সর্বানন্দ সোনোওয়ালের নেতৃত্বাধীন একটি বর্বরের সরকার। নাগরিকত্ব বিল খারিজ না করা পর্যন্ত আমরা কোনও চাপের সামনে মাথা নত করব না”।
ডিব্রুগড়ে নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়., পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পাথর ছোঁড়ায় এক সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
সকাল থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে জোরহাট, গোলাঘাট, তিনসুকিয়া, বঙ্গাইগাঁও, নওগাঁও শোণিতপুর সহ বিভিন্ন জেলায়।
মুখ্যমন্ত্রীর শহর চাবুয়ায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে একটি মোটরসাইকেল রালিও করা হয়।
লোকসভায় সহজেই পাস হয়ে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। এবার রাজ্যসভায় এই বিল পাস করাতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই বিল নিয়েই প্রতিবাদ-আন্দোলন শুরু হয় গোটা অসম জুড়ে।
বুধবার বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করার সময়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শহ বলেন যে, তিনি উত্তর-পূর্বের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, এই বিল প্রায় গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে না। সেই কারণেই তিনি প্রতিবাদকারীদের ওই বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।
নাগরিকত্ব বিল নিয়ে প্রতিবাদ ত্রিপুরা ও অসমে, মোতায়েন সেনা
নাগরিকত্ব বিলের খসড়ায় অসম, ত্রিপুরা, মেঘালয় ও মিজোরামের জনজাতি অঞ্চলকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবুও উত্তর-পূর্ব ভারতের বহু অঞ্চলে এই বিল নিয়ে প্রতিবাদ শুরু হয়ে গিয়েছে।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের বৈঠকের জন্যে নির্মিত মঞ্চতেও ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীর। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির বিজ্ঞাপন দেওয়া হোর্ডিংস এবং ব্যানারগুলি টেনে নামিয়ে সচিবালয়ের সামনে আগুন ধরিয়ে দেয় তাঁরা।
"এই সরকার আসলে সর্বানন্দ সোনোওয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্বর সরকার। সিএবি বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করবো না". পিটিআইকে জানান এক আন্দোলনকারী ছাত্র।
"মুসলিমদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই": নাগরিকত্ব বিল প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় অমিত শাহ
বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ডিব্রুগড় পুলিশেরও সংঘর্ষও বাঁধে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে রবারের বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাসের গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরে আহত হন একজন সাংবাদিক।
বুধবার সকাল থেকেই অসমের জোড়হাট, গোলাঘাট, তিনসুকিয়া, শিবসাগর, বনগাইগাঁও, নাগাঁও, সোনিতপুর ও আরও অনেক জেলা থেকে বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়।
নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের নিজের শহর ছাবুয়াতে একটি বাইক মিছিলও করা হয়।
বুধবারের পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছে গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, কটন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয়।
দেখুন আজকের গুরুত্বপূর্ণ খবর: