অসমে (Assam)জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (NRC) চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে গত ৩১ আগস্ট। তাতে দেখা গিয়েছে ১৯ লাখের বেশি মানুষের নাম সেখানে নেই। যাঁদের নাম নাগরিক পঞ্জিতে নেই তাঁদের থাকার জন্য শরণার্থী শিবির (Detention Camp) তৈরি করার কাজ চলছে গুয়াহাটির ১৫০ কিমি পশ্চিমে। জায়গাটির নাম মাটিয়া। এটা অসমের গোয়ালপাড়া জেলার অন্তর্গত। ২.৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে তৈরি হচ্ছে ওই শিবির। আকারে সাতটি ফুটবল মাঠের সমান। এখানে থাকবেন ৩,০০০ মানুষ। ১৫টি চারতলা বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে এখানে। সরকারের আশা, ডিসেম্বরের মধ্যে এই বাড়িগুলির নির্মাণ সম্পূর্ণ করে ফেলা যাবে। আপাতত বৃষ্টির জন্য কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে নির্মাণ কাজ।
এখানে একটি হাসপাতালও থাকবে। থাকবে একটি অডিটোরিয়াম, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি সর্বসাধারণের রান্নাঘর। এছাড়াও ১৮০টি শৌচাগার এখানে থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
‘‘কেবল অসম নয় গোটা দেশেই কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী থাকবে না'': অমিত শাহ
একটি লাল রঙের দেওয়াল দিয়ে এলাকাটি ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বাইরের পাঁচিল ২০ ফুট উঁচু। ভিতরের পাঁচিল ৬ ফুট উঁচু।
তবে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই শিবির কোনও সাধারণ জেলের মতো হবে না। অসমের এক বর্ষীয়ান পুলিশ আধিকারিক এখানে গড়ে তোলা হবে হোস্টেলের মতো ঘর। একটি ঘরে চার থেকে পাঁচ জন শরণার্থী থাকবে। ঘরগুলিতে দরজা থাকবে। থাকবে পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস ঢোকার জায়গা।
শিশুদের সঙ্গে করে যে মহিলারা থাকবেন, তাঁরা বিশেষ যত্ন পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জির বিরোধিতায় কলকাতায় মিছিলে মমতা
সবশুদ্ধ ৪৬ কোটি টাকা খরচ হবে ওই শিবির প্রস্তুত করতে। গত বছর থেকেই এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। অসম পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশন লিমিটেড এটি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, যাঁদের নাম এই তালিকায় নেই তাঁদের এখনই বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হবে না। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তবেই তেমনটা করা হবে। নাগরিক পঞ্জিতে যাঁদের নাম নেই, তাঁরা পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য তাঁরা ৬০ থেকে ১২০ দিন সময় পাবেন।
যদি এরপরও তাঁরা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে না পারেন তবে তাঁদের শরণার্থী শিবিরে যেতে হবে। অসমে মোট ১০টি শরণার্থী শিবির তৈরি করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
অসমে নাগরিক পঞ্জির গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এই রাজ্যে আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানিয়ে।
(তথ্য সহায়তা: রয়টার্স)