সংস্থার দাবি নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়াতেই বাদ পড়েছে নাম।
কলকাতা: অসমে 40 লাখ মানুষের নাম নাগরিকত্বের খসড়া তালিকা থেকে বাদ পরার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, এভাবে নিজের দেশের মধ্যেই নাগরিকদের উদ্বাস্তু করে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, এই গোটা ব্যাপারটাই করা হয়েছে ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে। যারা বিজেপিকে ভোট দেবে না, বেছে বেছেও তাদের নামই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অফ সিটিজেন বা এনআরসির তৈরি এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে 40 লাখ মানুষের নাম। সংস্থার দাবি নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়াতেই নাম বাদ পড়েছে । তবে প্রশাসন জানিয়েছে এটি একটি খসড়া তালিকা মাত্র। এর ভিত্তিতে কাউকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে না। পড়তে হবে না কোনও শাস্তির মুখেও। উল্টে যাঁদের নাম নেই তাঁরা আবেদন করতে পারবেন। উপযুক্ত তথ্য থাকলে তালিকায় নাম তুলতে কোনও সমস্যা হবে না।
এক ধাক্কায় এত মানুষের নাম বাদ হয়ে যাওয়ায় রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করেছে। সংসদে এ নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। তাছাড়া দীর্ঘ প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, অসম নিয়ে রাজনীতি না করে মানুষের কথা ভাবুন । কেন্দ্র মানুষের ভালো চাইলে এটা হত না। আমি নিজে দিল্লি যাচ্ছি। সেখানে এই ব্যাপারটা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় চাইব। এভাবে তালিকা করে নিজের দেশের মধ্যেই নাগরিকদের উদ্বাস্তু করে দেওয়া হল। বাঙালি, অহমিয়া, বিহারি, হিন্দু- মুসলমান সকলেই ভারতীয়। আমরা অসমবাসীর পাশে আছি। সে রাজ্যে সংসদীয় দল পাঠাচ্ছি। দরকার হলে আমি নিজেও যাব। তাঁর অভিযোগ বাদ পড়া তালিকায় বাঙালি এবং এ রাজ্যেরও কিছু মানুষ আছেন। তাঁদের কাছে আধার কার্ড থেকে শুরু করে পাসপোর্ট আছে তবু বাদ গিয়েছে নাম। মমতার মতে, এটা আসলে বাঙালি খেদাও অভিযান। তিনি বলেন, নেট পরিষেবা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে বলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
অন্যদিকে এদিন অসম এবং বাংলার মানুষের জন্য সংসদে বিল আনার দাবিও করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি জানিয়েদেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন এ ব্যাপারে অন্য কয়েকটি দলের সঙ্গে কথা বলছেন। মানে বোঝাই যাচ্ছে এই তালিকাকে সামনে রেখে ফের একবার বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার কাজ শুরু করবে তৃণমূল।