This Article is From Sep 03, 2019

Assam NRC List: ফৌজি গ্রামে তালিকা থেকে বাদ পড়লেন দেশের সুরক্ষায় নিযুক্ত জওয়ানরাই!

আসামের বারপেটা জেলার একটি গ্রাম ফৌজি গাঁও বা প্রতিরক্ষা কর্মীদের গ্রাম হিসাবেই পরিচিত। এই গ্রামে প্রায় ২০০ পরিবার বাস করে, যাদের মধ্যে ২০ জনেরও বেশি মানুষ সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীতে নিযুক্ত

Assam NRC List: ফৌজি গ্রামে তালিকা থেকে বাদ পড়লেন দেশের সুরক্ষায় নিযুক্ত জওয়ানরাই!

National Registry of Citizens: এই গ্রামের বহু জওয়ানের নাম এনআরসি (NRC) তালিকা থেকে হাওয়া

বারপেটা/ আসাম:

সীমান্তে তাঁদের পরিচয় দেশের রক্ষক বলে। আর ঘরে? ঘরের মাটিতে তাঁদের নাগরিক বলে মানতেই চাইছে না কেন্দ্র সরকার! আসামের বারপেটা জেলার (Barpeta district) একটি গ্রাম ফৌজি গাঁও (Fauji Gaon) বা প্রতিরক্ষা কর্মীদের গ্রাম হিসাবেই পরিচিত। এই গ্রামে প্রায় ২০০ পরিবার বাস করে, যাদের মধ্যে ২০ জনেরও বেশি মানুষ সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীতে নিযুক্ত রয়েছেন। কিন্তু দেশের সেবা করলেও আদতে এঁদের অনেককেই অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। মোদি সরকার সেনাকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গর্ব করে থাকলেও, শনিবার প্রকাশিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (NRC list) অন্তত জওয়ানদের ক্ষেত্রেও এমনই বিচার করেছে। এই গ্রামের বহু জওয়ানের নাম ৩১ অগাস্ট প্রকাশিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (National Registry of Citizens) বা এনআরসি (NRC) তালিকা থেকে হাওয়া। 

NRC তালিকায় নাম নেই বিরোধী দলের বিধায়কের

দিলবর হুসেনের পরিবারের কিছু সদস্যও এনআরসি তালিকায় (NRC list) তাঁদের নাম খুঁজে পাননি। দিলবর হুসেন সেনাবাহিনীতে কাজ করছেন, তার ছোট ভাই মিজানুর আলি সিআইএসএফ-এ রয়েছেন। দিলবর হুসেন এবং মিজানুর আলি দুই জওয়ানের নামই নাগরিকদের তালিকায় আসেনি। তবে তালিকায় সাইদুল ইসলামের নাম রয়েছে। সাইদুল ইসলাম দিলবর হুসেনেরই বড় ভাই। তিনি সেনাবাহিনীর সুবেদার এবং কারগিল যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।

নাগরিকত্ব তালিকা সম্পর্কে দিলবর হুসেন বলছিলেন, “আমরা শত্রুদের সঙ্গে লড়াই করি। আমরা আমাদের সেনা পরিবারকে প্রথম বলে বিবেচনা করি। তবে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরে আমরা গভীরভাবে হতাশ হয়ে পড়েছি। সীমান্তে আমরা দেশের সেনাবাহিনীর জওয়ান, আর এখন এখানে আমাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে লড়াই করতে হচ্ছে।" 

Assam Citizens' List: "ভারত কি ধর্মশালা নাকি!": শরণার্থী প্রসঙ্গে বিজেপির হিমন্ত বিশ্ব শর্মা

সিআরএসএফ জওয়ান মিজানুর আলি এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। “যাচাইয়ের সময় আধিকারিকরা বলেন যে আমি একজন অনুপ্রবেশকারী এবং ২০০৩ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এটা কীভাবে সম্ভব? জেলা পুলিশ সুপার আমার সিআইএসএফ-এ যোগদান করার সময়ই আমার যোগ্যতা যাচাই করেছিলেন।"

জওয়ান অজিত আলির ক্ষেত্রেও অবস্থা একই। প্রথম এবং দ্বিতীয় তালিকাতেও নেই তাঁর নাম এবং চূড়ান্ত তালিকা তৈরি গয়ে গেলেও এই জওয়ানের নাম নেই সেই তালিকায়। নিজের পরিবারের কথা বলতে গিয়ে অজিত জানান, বাড়িতে সকলেই রয়েছেন গভীর উদ্বেগে। তিনি বলেন, “চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরে আমার বাবা কেঁদে ফেলেছিলেন। আমার পরিবার মুখে বলছে না ঠিকই, তবে ওরা একরকম ভেবেই নিয়েছেন যে তাঁদের আর এই দেশের নাগরিক ভাবা হচ্ছে না। তাঁদের কী করা উচিত? আমরা কি সীমান্তে শত্রুদের সাথে লড়াই করব নাকি ঘরে বসে সমস্যার সমাধান করব।”

গ্রামের সমস্ত মানুষই চান এই সমস্যাটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করা হোক। সকলেই মনে করেন জওয়ানরা এই গ্রামের গর্ব। গ্রামবাসী বাবুল খান বলেন, “এটি ফৌজিদেরই একটি গ্রাম। নাম কেন বাদ পড়েছে তা আমরা জানি না। এখনই সরকারকে ওদের জন্য তাত্ক্ষণিকভাবে কিছু করা উচিত।”

.