Assam NRC:"আমরা খসড়া তালিকা করার পরেই এনআরসি নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেছি," বলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
গুয়াহাটি: অসমের এনআরসি (NRC) তালিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীরাও। অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধীকরণ বা এনআরসি -র তালিকাটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের (Assam) বৈধ বাসিন্দাদের চিহ্নিত করা এবং অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাতিল করতে কতটা সমর্থ হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। প্রবীণ এই নেতা (Himanta Biswa Sarma) এই ইঙ্গিতও দেন যে, এই তালিকা প্রকৃত অর্থেই কতটা বিদেশিদের হাত থেকে অসমকে মুক্তি পেতে সহায়তা করবে সে বিষয়ে সন্দেহ আছে তাঁর। "আমরা খসড়া তালিকার ঠিক পরেই এনআরসি-র বর্তমান রূপ নিয়ে আশা হারিয়ে ফেলেছি। যখন এত সংখ্যক প্রকৃত ভারতীয়রাই তালিকার বাইরে থাকেন, তখন আপনি কীভাবে দাবি করতে পারেন যে এই নাগরিক তালিকা অসমিয়া সমাজের মঙ্গল করবে" সাংবাদিকদের উদ্দেশে এ কথা বলেন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
"দক্ষিণ সলমারা ও ধুবরির মতো বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে মানুষের বাদ পড়ার হার সর্বনিম্ন অথচ ভূমিপুত্র জেলায় প্রচুর মানুষের নাম বাদ। এটি কীভাবে হতে পারে? আমরা আর এই এনআরসি তে আগ্রহী নই," বলেন তিনি ।
Assam NRC: “আমরা কি থাকবো?” নাগরিক তালিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন-অপেক্ষা
হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন "এনআরসি কোনও বাংলাদেশিকে বহিষ্কারের জন্য কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নয় ... কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন এবং আপনি বিজেপি আমলে এমন অনেক ফাইনাল দেখতে পাবেন"।
চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হলে প্রায় ৪১ লক্ষ লোককে ওই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য জুড়ে কয়েক হাজার আধাসামরিক বাহিনী এবং পুলিশ মোতায়েন করে অসমের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
কেন্দ্র অবশ্য বলেছে যে যাঁদের নাম চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় স্থান পাবে না সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এখনই বিদেশি ঘোষণা করা যাবে না। এনআরসির বাইরে থাকা প্রতিটি ব্যক্তি বিদেশি ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারেন এবং আবেদন করার সময়সীমা ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে।
বিশ্বশর্মা বলেন: "আমরা কেবল শান্তিপূর্ণভাবে, ভালভাবে এই এনআরসি তালিকা করার কাজ শেষ করতে চাই এবং আমরা এটি নিশ্চিতভাবেই করব, তবে এই এনআরসি আমাদের বিদেশিদের হাত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করবে না।"
অসম NRC-এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ আজ, নজরে ৪১ লক্ষের ভবিষ্যত: ১০ টি তথ্য
তিনি বলেন, ইতিমধ্যে অসম সরকার ও কেন্দ্র দু'দিক থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের মোকাবিলার নতুন কৌশল নিয়ে আলোচনা করছে। "দিশপুর ও দিল্লিতে আমরা ইতিমধ্যেই কীভাবে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন করতে পারি সে সম্পর্কে নতুন কৌশল নিতে শুরু করেছি এবং আমরা নতুন পরিকল্পনাও নিয়ে আসব"। তবে বিপুল সংখ্যক বাঙালি হিন্দুকে এনআরসি থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বহু বিজেপি নেতাও।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৯৫১ সালে অসমে প্রথম প্রকাশিত এনআরসিতেই আপডেট করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে অসমে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে যারা পৃথকভাবে ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের পরে বাংলাদেশ থেকে এই রাজ্যে প্রবেশ করেছেন তাদের আলাদা করা হচ্ছে।