পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৭-এ দুলালচন্দ্র পালকে বিদেশী বলে ঘোষণা করা হয়
গুয়াহাটি: অসমে চারদিন ধরে এক মৃত ব্যক্তির দেহ নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত। অসমের (Assam) তেজপুরে ডিনেটশন ক্যাম্পে (Detention Camp) থাকা অবস্থায় রবিবার বিদেশী ঘোষিত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভারতীয় নাগরিক বলে ঘোষণা না করা পর্যন্ত দেহ নেবেন না তাঁরা। অসুস্থ থাকার পর, গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় শোণিতপুরের আলিসিঙ্গা গ্রামের (Alisinga village) বাসিন্দা বছর ৬৫-এর দুলালচন্দ্র পালের। দুলালচন্দ্র পালের (Dulal Chandra Paul) মৃত্যুতে রাস্তা অবরোধ করে ধরনা দেন দশহাজারের বেশী মানুষ, তারপরেই তদন্তের নির্দেশ দেয় অসম সরকার।
বিদেশী ঘোষিত ব্যক্তির মৃত্যু অসমে, দেহ নিতে অস্বীকার পরিবারের
ফোনে মৃত দুলালচন্দ্র পালের বড় ছেলে আশিস NDTV কে বলেন, “রাজ্য সরকার যেহেতু তাঁকে বিদেশী বলে ঘোষণা করেছে, ফলে তাঁর দেহ বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। একমাত্র যদি সরকার বিবৃতি জারি করে ঘোষণা করে যে, তিনি বিদেশী নন. ভারতীয় নাগরিক, তাহলেই আমরা দেহ নেব”।
পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৭-এ দুলালচন্দ্র পালকে বিদেশী বলে ঘোষণা করা হয়, মানসিক অস্থির থাকা সত্ত্বেও তাঁকে বিদেশী বলে ঘোষণা করা হয়।
দেহ ফিরিয়ে নিতে পরিবার ও গ্রামবাসীদের রাজি করানোর জন্য, গত চারদিন ধরে, তাঁর বাড়িতে একাধিকবার প্রতিনিধি পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার, যদিও এখনও পর্যন্ত অনুরোধে সাড়া দেননি তাঁরা।
অসমের নাগরিকপঞ্জী অভ্যন্তরীণ বিষয়, চোখ খোলা রাখছি, বলল বাংলাদেশ
শোণিতপুরের ডেপুটি কমিশনার মানবেন্দ্র প্রতাপ সিং NDTV কে বলেন, “তাঁকে বিদেশী ঘোষণা করেছে ট্রাইবুনাল, ফলে তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনা করা প্রশাসনের আওতার বাইরে। যদি তাঁরা ট্রাইবুনালের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যেতে চান, আমরা তাকে আইনিভাবে সাহায্য করতে পারি। আমরা এই বিষয়টিতে উন্নতি চাই”।
আধিকারিকদের সূত্রের খবর, ডায়াবেটিস এবং সাইক্রাটিকের চিকিৎসা চলছিল দুলালচন্দ্র পালের, ১১ অক্টোবর তাঁর পরীক্ষা করেন তেজপুর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা, সেদিনই তাঁকে ডিনেটশন সেন্টারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবার এবং গ্রামবাসীদের দাবি, দেহ ফিরিয়ে দিতে সঙ্গে একটি নথি নিয়ে আসেন জেলের আধিকারিকরা, সেখানে তাঁকে “বিদেশী বলে ঘোষণা” করা হয়েছে এবং ঠিকানার জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে।
অনলাইনে প্রকাশিত অসমের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক তালিকা, ঠাঁই ৩.৩০ কোটি আবেদনকারীর
তাঁর ছেলে বলেন, “তাঁরা খুব ভালভাবেই ঠিকানা জানতেন, তারপরেও জায়গাটি খালি রাখা হয়েছে। আমাদের মনে হয়, তাঁরা বাংলাদেশের কোনও ঠিকানা দিতে পারতেন। যদি তিনি বাংলাদেশীই হন, কেন আমাদের কাছে আনা হয়েছে? তাঁদের, দেহ বাংলাদেশে পাঠানো উচিত”।
আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশাসনের তরফে আরও দু একদিন অপেক্ষা করার পরিকল্পনা রয়েছে, কীভাবে দেহের সৎকার্য করা যায় তা ভেবে দেখা হচ্ছে।
আজকের গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি দেখতে ক্লিক করুন:
অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (National Register of Citizens) থেকে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে, নভেম্বরে ট্রাইবুনালে আবেদনের সময় শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে।