Assembly Election Results 2019: সকাল ৮ টা থেকে শুরু দুই রাজ্যে নির্বাচনের ভোট গণনা (পিটিআই)
নয়া দিল্লি:
আগামী পাঁচ বছরের জন্য মহারাষ্ট্র (maharashtra election results) বিধানসভা ফের একবার বিজেপি-শিবসেনা জোটের দখলে আসতে চললেও হরিয়ানায় (haryana election results) শক্ত লড়াইয়ের সম্মুখীন নরেন্দ্র মোদির দল। সেখানে যা অবস্থা তাতে দুশ্যান্ত চৌতলার জেজেপি তাসের টেক্কা হয়ে যেতে পারে। ওই দুই রাজ্যেই বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয় ঠিক সকাল আটটায়। এখনও পর্যন্ত দুই রাজ্যেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তার মধ্যে মহারাষ্ট্রে বিরাট আসনে এগিয়ে গেরুয়া দল। বর্তমানে দুই রাজ্যেই শাসন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। মহারাষ্ট্র শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে দ্বিতীয় মেয়াদেও সেখানে ফিরতে চাইছে গেরুয়া দল। বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্যে মহারাষ্ট্রে শরদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ছে কংগ্রেস। এক্সিট পোল অনুযায়ী অবশ্য দুটি রাজ্যেই বিজেপির জয়ের পূর্বাভাস মিলেছে। তবে এক্সিট পোলের ভাবনা ভুলও হতে পারে। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ ও নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধিকরণের মতো বিষয়কে হাতিয়ার করেই প্রচার করে বিজেপি। এই দুই রাজ্যে ভোটের ফলাফল (assembly election results) বের হলে বোঝা যাবে যে আদৌ সাধারণ মানুষ নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই দুই নীতির সমর্থন করছেন কিনা। এদিকে ১৮ টি রাজ্যে উপনির্বাচনের ভোট গণনাও আজ অনুষ্ঠিত হবে।
এখানে মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা নির্বাচনের ফলাফলের সেরা ১০ আপডেট রয়েছে
মহারাষ্ট্রে বিজেপি এবং শিবসেনা জোট ২৮৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৫০ আসনে এগিয়ে রয়েছে। কংগ্রেস এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) ৯৪ টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে গেলে পেতে হবে মোট ১৪৫ টি আসন।
হরিয়ানায়, বিজেপি ৯০ টি আসনের মধ্যে আপাতত ৪০ টিতে এগিয়ে রয়েছে এবং কংগ্রেস ৩১টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্যে যে কোনও দলকে পেতে হবে ৪৬ টি আসন।এখানে মনোহর লাল খাট্টারের সরকারের ৪ মন্ত্রী, রাজ্য বিজেপি প্রধান সুভাষ বার্নালা এবং বিধানসভার স্পিকার কানওয়ার পাল গুর্জার পিছিয়ে আছেন বলে জানা গেছে। বার্নালা ইতিমধ্যে পদত্যাগ করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
১১ টি এক্সিট পোলে ইঙ্গিত, বিজেপি-শিবসেনা জোট মহারাষ্ট্রে ২১১ টি আসন পেতে পারে, ওদিকে কংগ্রেস এবং শরদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি জোট বেঁধে পেতে পারে ৬৪ টি আসন। যেখানে গতবার তাঁরা পেয়েছিল ৫৬টি আসন। এবার তাঁদের আসন সংখ্যা বাড়ার সম্ভাবনা।
সোমবার উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৮ টি রাজ্যের ৫১ টি বিধানসভা আসন এবং দুটি লোকসভা আসনেও। সেই কেন্দ্রগুলিরও ভোট গণনা অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার। বিজেপি এবং তার মিত্রদের এই বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে প্রায় ৩০ টি আসন ছিল, আর কংগ্রেসের ছিল ১২ টি। বাকী গুলি আঞ্চলিক দলগুলির।
উত্তর প্রদেশেও ভোট গণনা অনুষ্ঠিত হবে, যেটাকে অনেকেই ছোটখাটো বিধানসভা নির্বাচন হিসাবেই দেখছে। কেননা এখানে ১১ টি আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়, পাশাপাশি গুজরাট (৬টি আসন), বিহার (৫ টি আসন), আসাম ও পাঞ্জাব (প্রত্যেকে ৪ টি আসন), কেরালায় ৫ টি আসন রয়েছে আসন), সিকিম (৩ টি আসন), রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ এবং তামিলনাড়ু (প্রত্যেকে ২ টি আসন) এবং অরুণাচল প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, পুডুচেরি, মেঘালয় এবং তেলঙ্গানার একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ হয়।
গত পাঁচ বছরে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে নানা সময়ে বিজেপির মতবিরোধ হলেও এই নির্বাচনেও তাঁরা শিবসেনার সঙ্গেই জোট বেঁধে লড়েছে। ২০১৪ সালে যখন দুটি দলের মধ্যে অল্প সময়ের এক বিচ্ছেদ হয়েছিল তখন দুই দলের কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সফল হয়নি। শিবসেনা সেই সময় রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতি বিরুদ্ধে প্রচুর সমালোচনা করে।
এবার, শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে ৫০:৫০ আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দিলেও তাঁদেরকে বেশ কয়েকটি কম আসনই দেওয়া হয়েছে। যদিও এই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে যে বিজেপি-শিবসেনা জোট জয় পেলে শিবসেনার থেকেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হবে। পাশাপাশি বিজেপি এও ঘোষণা করেছে, সেখানে জয় পেলে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকারই সেখানে ফের সরকার গড়বেন।
মহারাষ্ট্রে উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শিবসেনা প্রার্থী হবেন সম্ভবত আদিত্য ঠাকরে, যিনি তাঁর দাদু বাল ঠাকরের দল গঠনের পর থেকে তাঁর পরিবারের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি হিসাবে কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
বিরোধীরা একাধিক স্থানীয় ইস্যু যেমন বেকারত্ব, কৃষির সংকট, কৃষকদের আত্মহত্যা এবং অর্থনীতির মন্দার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করে নির্বাচনী প্রচারে, যেখানে জাতীয় ইস্যুগুলি তুলে ধরে প্রচার চালায় বিজেপি। এই নির্বাচনের ফলাফল থেকে বোঝা যাবে যে ভোটাররা স্থানীয় ইস্যু নাকি জাতীয় ইস্যু, কোনটার উপর ভিত্তি করে তাঁদের ভোট দিয়েছেন।
বিরোধী দল, বিশেষত কংগ্রেসের জন্যে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা তাঁরা ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই করছে। লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবি এবং দলের শীর্ষ পদ থেকে রাহুল গান্ধি সরে যাওয়ার পরে নেতৃত্বের পরবর্তী পরিস্থিতিতে সংকট দেখা দিয়েছে, যদিও আপাতত তা অস্থায়ী ভাবে সামাল দিচ্ছেন সনিয়া গান্ধি। বিজেপি মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় প্রচারের জন্য একের পর এক হেভিওয়েট নেতা নিয়ে এসেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি ১৬ টি সমাবেশ এবং অমিত শাহ ২৫ সমাবেশ করেছেন। সেখানে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি মাত্র ৭টি সমাবেশ করেন। তাঁর মা তথা কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধি কোনও সমাবেশই করেননি। হরিয়ানায় তাঁর সমাবেশ বাতিল হলে সেখানে সমাবেশ করেন রাহুল গান্ধি।
Post a comment