হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপাতে তৈরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
নয়াদিল্লি:
মহারাষ্ট্র (Maharashtra) ও হরিয়ানায় (Haryana) বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly elections) তারিখ শনিবার ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ২১ অক্টোবর ওই নির্বাচনের দিন স্থির হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। গত মে মাসে লোকসভা নির্বাচনে জিতে এনডিএ জোটের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর এটাই দেশের প্রথম নির্বাচন। দু’ রাজ্য মিলিয়ে প্রায় ১১ কোটি মানুষ এই নির্বাচনে অংশ নেবেন। তিন তালাক বিল পাস করা, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা ও অসমের নাগরিক পঞ্জি প্রকাশের মতো সিদ্ধান্তের পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। হরিয়ানায় নির্বাচনি প্রচার শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ‘‘যে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা আপনাদের ভালর জন্যই। তিন তালাক, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার প্রয়াস, জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ কিংবা জল সমস্যা মানুষ এখন সমস্যার সমাধানের দিকে তাকাচ্ছে।’’
Assembly Elections 2019: রইল ১০ টি তথ্য
হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে বিজেপি নির্ভর করবে সেই ‘মোদি ম্যাজিক'-এর উপরে। ২০১৪ বা ২০১৯ লোকসভায় এই ম্যাজিকই জিতিয়েছে বিজেপিকে। বিরোধীরা ভেবেছিল এই ম্যাজিক বেশিদিন প্রভাব ফেলতে পারবে না। তারা দেখেছিল মোদির সভার সংখ্যাও কমছে। কিন্তু ২০১৪ সালে মোদি ৪০০-র বেশি সভা করার পর বিজেপি পেয়েছিল ২৮২টি আসন। কিন্তু ২০১৯-এ মোদি কেবল ১৪৪টি সভাই করেছিলেন। বিজেপি আগের বারের আসন সংখ্যাকে ছাপিয়ে পৌঁছয় ৩০৩-এ।
জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির দাবি বিজেপি এবারের লোকসভার নির্বাচনি প্রচারে করেছিল। ক্ষমতায় আসার পরেই তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। দুই রাজ্যেই এই ইস্যুকে প্রচারের কাজে লাগাবে গেরুয়া শিবির। নাসিক ও রোহতকে এরই মধ্যে নরেন্দ্র মোদি সেই ইস্যুর কথা বলেছেন। জানিয়েছেন, কাশ্মীর আবার স্বর্গ হয়ে উঠছে। যদিও কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বাল বলেছেন, কৃষির সমস্যা ও বেকারত্বকে ভুলে মানুষ এই সব ইস্যুতে মন দেবে না।
‘তিন তালাক বিল'ও এই দুই রাজ্যের নির্বাচনে হাতিয়ার হবে বিজেপির। এবং এটি মানুষকে প্রভাবিত করতেও পারে। সংসদে উত্তপ্ত বাদানুবাদের পরে এই বিল পাস হয়। যদিও জোটসঙ্গী নীতিশ কুমার জনতা দল (ইউনাইটেড) ও তামিলনাডুর শাসক দল এআইডিএমকে বিলের সমর্থন না করে ওয়াক আউট করেছিল।
এছাড়াও অসমের নাগরিক পঞ্জিও বড় ফ্যাক্টর হতে পারে নির্বাচনে। হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক নেতারা এই ধরনের নাগরিক তালিকার কথা বলেছেন। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার এমন কথা বলেছেন আগেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, সারা দেশেই নাগরিক উঞ্জি হবে।
রাহুল গান্ধি কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এই প্রথম কংগ্রেস নির্বাচনে লড়বে। দলের অন্তর্বর্তী সভাপতি সনিয়া গান্ধি চেষ্টা করছেন পরপর দু'টি লোকসভায় শোচনীয় ব্যর্থতার পর দলকে আবার লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনতে। বিজেপি কিন্তু সনিয়ার প্রত্যাবর্তনের সমালোচনা করে প্রচারে কংগ্রেসের বিরোধিতা করবে। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নরেন্দ্র মোদি বারবার বলেছেন, কংগ্রেস নেহরু-গান্ধির বাইরে বেরোতে পারে না।
অর্থনীতির অবনতি নিঃসন্দেহে বিরোধীদের প্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও বেকারত্বও একটা ইস্যু, যেটা বিজেপিকে অস্বস্তিতে ফেলবে। কংগ্রেস গত কয়েক সপ্তাহে এই ইস্যুতে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করেছে। দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও তারা এই বিরোধিতা করবে।
Post a comment