এনসেফেলাইটিসে ১০০ শিশুর মৃত্যু নিয়ে বৈঠকে ক্রিকেট নিয়ে প্রশ্ন করে সামলোচিত মঙ্গল পাণ্ডে
হাইলাইটস
- মজফফরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডে
- এনসেফেলিয়ায় ১০০ শিশুমৃত্যু নিয়ে আলোচনা করেন তিনি
- সেখানেই তিনি প্রশ্ন করেন, কটা উইকেট পড়ল!
মুজাফফরপুর: গত দু-সপ্তাহের মধ্যে এনকেফেলাইটিসে (Encephalitis) শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ১০০-রও বেশি। এই নিয়ে সম্প্রতি মুজফফরপুরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষ বর্ধনের সভাপতিত্বে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে ও বিহারের (Bihar Minister) স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডে (Mangal Pandey) এক সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন। বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে উঠে আসে শিশুমৃত্যুর মতো মর্মান্তিক ঘটনাও। আলোচনা করা হয়. কী পদক্ষেপ নিলে ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেন চিকিৎসকরা: ১০টি তথ্য
সম্মেলনের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয় নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আচমকা বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, "কটা উইকেট পড়ল?" অর্থাত, শিশুমৃত্যুর মতো বিষয় নিয়ে আলোচনার সময়েই তিনি ভারত-পাক বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচ থেকে দূরে সরে থাকতে পারেননি। যদিও সঙ্গে সঙ্গেই জবাব পান মঙ্গল, চারটে উইকেট পড়েছে। তবে এই ফুটেজ ভাইরাল হতেই বয়ে গিয়েছে সমালোচনার ঝড়। গত দু-সপ্তাহে যে রাজ্যে ১০০ শিশু সংক্রমণে মারা যায় সেই রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে কি তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভারত-পাক ম্যাচ! প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
ঘটনার পরেই সরব হয়ে ওঠেন বিরোধী দলের নেতারা। আরজেডি, কংগ্রেস, হিন্দুস্থান আওয়াম মোর্চা এবং বাম দলের নেতা-মন্ত্রীরা এরপরেই মঙ্গল পাণ্ডের পদত্যাগ দাবি করতে থাকেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অমানবিক এবং সংবেদনহীন বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, হর্ষ বর্ধন যখন শিশুমৃত্যু নিয়ে চিন্তিত তখন সেই বৈঠকে বসে ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে কী করে চিন্তা করছিলেন মঙ্গল পাণ্ডে!
হ্যামের মুখপাত্র দানীশ রিজওয়াল এবং কংগ্রসের মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালাও একই সুরে টুইটারে লেখেন, এই ধরনের আচরণ কোনও মন্ত্রীর থেকে আশা করা যায় না।
তৃণমূলের আরও এক বিধায়ক, ১৫ কাউন্সিলর যোগ দিলেন বিজেপিতে
মঙ্গল পাণ্ডের আগে অন্য একটি বৈঠকে ঘুমন্ত অশ্বিনী কুমার চৌবের একটি ছবি ইতিমধ্যেই শোরগোল ফেলেছে রাজনৈতিক মহলে। তারপরেই মঙ্গেল পাণ্ডের এই মন্তব্য, স্বাভাবিকভাবেই আগুনে ঘি ঢেলেছে। পরে যদিও এবিষয়ে অশ্বিনীর সাফাই, তিনি ঘুমিয়ে পড়েননি। গভীর চিন্তায় মগ্ন ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ দিনে মুজফফরপুরে ১০০ জনেরও বেশি শিশু মারা গেছে এনকেফেলাইটিসে। ৩০০-রও বেশি রোগী ভর্তি একাধিক স্থানীয় হাসপাতালে। সরকারি তথ্য বলছে, ইতিমধ্যেই ৮৩ জন শিশু শ্রীকৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বিহারের কেজরিওয়াল হাসপাতালে।
প্রসঙ্গত, এনকেফেলাইটিসে একটি ভাইরাল রোগ। যা হলে রোগীদের মধ্যে প্রচণ্ড জ্বর, মাথাব্যথা এবং ফ্লু-এর সমস্ত লক্ষণগুলি দেখা দেয়। রাষ্ট্র স্বাস্থ্য বিভাগ হিপোগ্লাইসমিয়া এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, এই রোগে রক্তে চিনির মাত্রা অত্যধিক পরিমাণে কমে যাওয়াই মৃত্যুর প্রধান কারণ।
ভবিষ্যতে এনসেফেলাইটিস মারাত্মক আকার ধারণ করতে না পারে তার জন্য এক বছরের মধ্যে একটি পৃথক গবেষণাগার তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেন্দ্র।