ঝড় থেমে যাবে.... আন্তরিক আশ্বাস (সৌজন্যে ক্যামেলিয়া প্রোডাকশন)
কলকাতা: গোটা টলিপাড়া ঘরবন্দি। গোটা শহর, দেশ, বিশ্ব স্তব্ধ। থমকে গেছে মানব সভ্যতা। কিন্তু ক্যামেরা চলছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে। সমস্ত বিধি-নিষেধের ঘেরাটোপে থেকেই। নতুন বছরে তারই সোনালি ফসল, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাওয়া ‘ঝড় থেমে যাবে একদিন' (Jhar Theme Jaabe)। এই আশ্বাস লকডাউনের শুরু থেকে, মহামারীর এক্কেবারে গোড়ায় রাজ্যবাসীকে দিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই ভরসা ক্যামেরায় বন্দি হয়ে ছড়িয়ে পড়ল পরিচালক অরিন্দম শীল (Arindam Sil) এবং যৌথ প্রযোজক ক্যামেলিয়া প্রোডাকশন আর ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সৌজন্যে।
বোনে বোনে ফোনে ফোনে বদলে দিল জীবন! সৌজন্যে সামান্য 'হিং'
শুনশান রাস্তাঘাট। বর্ধিষ্ণু এলাকার হাইরাইজ আবাসনের ভেতরটা যেন আরও নিস্তব্ধ। দেখলে মনে হবে, রুপোর কাঠি ছুঁইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস নামক জুজু। কিন্তু তা যে নয়, প্রমাণ রুক্মিণী মৈত্রের বিপদে তাঁর পাশে আবাসনের সমস্ত তারকা বাসিন্দা। রুক্মিণীর বাবা (পর্দায়) পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শহরতলিতে একা থাকেন। অসুস্থ। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ওষুধ ফুরিয়ে গেছে তাঁর। রুক্মিণীকে সেকথা ফোনে জানাতেই ভেঙে পড়ে বাবা-মেয়ে দু'জনেই। কীভাবে হবে সমস্যার সমাধান? কীভাবে লকডাউনে বাবার কাছে পৌঁছোবেন তিনি? কাকে কাকে পাশে পেলেন রুক্মিণী তাঁর এই বিপদে? জানতে গেলে দেখতেই হবে ছোট ছবি ‘ঝড় থেমে যাবে একদিন'।
কীভাবে হল গোটাটা? অবশ্যই জানবেন। তার আগে জেনে নিন এই যজ্ঞের ঋত্বিক কে? কোন অনুভূতি থেকে বানানো হল ছোট ছবি? প্রযোজক নীলাঞ্জন বসুর বয়ানে, করোনা মহামারীর এই সঙ্কটে সবার একটাই বীজমন্ত্র, ঝড় থেমে যাবে। সঙ্গে প্রয়াস, বিনোদন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত দৈনিক মজুরিতে কাজ করা অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। সেই লক্ষ্যপূরণে এই ছোট ছবি বানানো। পাশাপাশি, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিল্পকর্মীদের জন্য তৈরি সচেতনতা এবং তহবিল বাড়াতে এই কাজ।
এবার ছবি তৈরির গল্প। অরিন্দম জানালেন, “পুরো ভাবনাটাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুধু ভাবনাই নয়, তিনি একটি গান লিখেছেন যার সুরকার কবীর সুমন। এই ছবিতে সমস্ত টলিপাড়া এক ছাদের নীচে না হয়েও অভিনয় করেছেন সাবলীল ভাবে।” ভিডিওতে রুক্মিণী বিপদে পাশে পেয়েছেন মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, কোয়েল মল্লিক, শুভশ্রী, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, যিশু, দেব, আবির, রুক্মিণী, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। ছবি দেখলেই অনুভব করা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ক্যামেরার মুখোমুখি না হয়ে কতটা কষ্টে টলিউড তারকারা। আবহে বিক্রম ঘোষ। চিত্রনাট্যে পদ্মনাভ দাশগুপ্ত, পরিচালক স্বয়ং।
করোনা আক্রান্তদের পাশে টলিউড, হাত বাড়ালেন রাজ-শুভশ্রী, ইমন, অরিন্দম
ছবির প্রতিটি ধাপ দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন, টুথপিক দিয়ে লিফটের বাটন পুশ করা। কনুইয়ের সাহায্য নিয়ে লিফট ছোঁয়া। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনলাইনে, মুঠোফোনে সমস্ত প্রয়োজন মেটানো। এই শর্ট ফিল্মের মাধ্যমে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা তুলে লকডাউনের জেরে উপার্জন বন্ধ হয়ে যাওয়া টেকনিশিয়ানদের সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন অরিন্দম। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, প্রশাসনের সাহায্যে তাদের নির্দেশ মেনে ফাঁকা রাস্তার ছবি তোলা হয়েছে। কিছু কিছু অংশে সিপিয়া টোন ব্যবহার করায় ছবি যেন আরও জীবন্ত, বাস্তব হয়ে উঠেছে।