আজ বিকের চারটের সময় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে।
নিউ দিল্লি: অন্তিম যাত্রায় সঙ্গ দিয়েছে অগণিত মানুষ। শুধু ভারতবাসীই নয়, পৃথিবীর বহু দেশের বহু লোক তাঁর মৃত্যুতে শোক স্তব্ধ। সম্ভবত তাঁকেই রাজনীতির ইতিহাসে অজাত শত্রুর আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। সেই কারণেই হয়তো ছুটে এসেছিলেন ভুটানের রাজা সহ বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী, তাঁকে একবার শেষ শ্রদ্ধা অর্পণ করতে।
তিনি কেবল ভারতীয় রাজনীতির ‘ভীষ্ম’ই ছিলেন না। কূটনীতিবিদ্যার একদম শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি হওয়ার পাশাপাশিই তিনি ছিলেন এক কবিও। মে কবি মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া নিয়ে ভয় পান না। কেবল, জীবনের কোন বাঁকটিতে তার সঙ্গে দেখা হবে, সেটি নিয়েই চিন্তিত। যে কবি বলেন, আর যা-ই হোক, যা কিছুই হোক, এগিয়ে চলার গানটিকে থামানো যায় না কখনওই। সেই কবি ও ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রয়াত হয়েছেন গতকাল। গতকাল সন্ধেবেলা থেকেই তাঁর মরদেহ শায়িত ছিল দিল্লির কৃষ্ণ মেনন মার্গের বাংলোতে। আজ সকালে দেহ নিয়ে যাওয়া হল বিজেপির সদর দফতর দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে। সেখান থেকেই অন্তিমযাত্রার উদ্দেশে তাঁকে নিয়ে সেনাবাহিনীর ট্রাক রওনা দেবে বেলা একটা নাগাদ।
কাচের কফিনে শায়িত অটলবিহারী বাজপেয়ীর দেহ। তার ওপর রাখা তেরঙা। অটলবিহারী বাজপেয়ীর মরদেহের উদ্দেশে একের পর এক শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংলহ, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা বাজপেয়ীর বহু পুরনো সতীর্থ লালকৃষ্ণ আডবাণী প্রমুখ।
1980 যে দল গড়ে তুলেছিলেন তিনি, সেই ভারতীয় জনতা পার্টির সদর দফতরেই এখন শায়িত রয়েছে তাঁর দেহ। এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন বহু সাধারণ মানুষ, নেতা, মন্ত্রী, দলমত নির্বিশেষে সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী ও সমর্থকরা।
বেলা একটা নাগাদ তাঁর মরদেহ নিয়ে সেনাবাহিনীর সুসজ্জিত ট্রাকটি রওনা হবে অন্তিমযাত্রার উদ্দেশে। ওই ট্রাকে বাজপেয়ীর আত্মীয়স্বজন ছাড়াও থাকবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ স্বয়ং। দিল্লির বহু রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। স্তব্ধ যান চলাচল। যে যে রাস্তা দিয়ে তাঁর অন্তিমযাত্রা যাবে, সেই সব স্থানেও কড়া পুলিশী নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে শয়ে শয়ে পুলিশ। তাঁর শেষ যাত্রায় হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবে বলে মনে করছে দিল্লি পুলিশ। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে যমুনা নদীর তীরের রাষ্ট্রীয় স্মৃতি সমাধি স্থলে। যেখানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছিল।