সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এদিন ছিল শুনানির তৃতীয় দিন।
নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) অযোধ্যার (Ayodhya) রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা চলাকালীন ‘রামলীলা বিরাজমান' দলের কাছে জানতে চাইল কী করে এই কেসে দেবতার জন্মস্থানকে ‘‘বিচারশীল ব্যক্তি'' হিসেবে ধরা হবে। সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে এদিন ছিল শুনানির তৃতীয় দিন। আদালত জানায়, হিন্দু দেবতাদের ‘বিচারশীল ব্যক্তি' হিসেবে ধরা হয় আইনে। এর ফলে তাদের সম্পত্তি থাকতে পারে বা তারা মামলা করতে পারে। পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী কে পরাশরণ, যিনি ‘রামলীলা বিরাজমান'-এর আইনজীবী, তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘জন্মস্থান' কী করে একজন পক্ষ হিসেবে মামলা করতে পারে।
ব্যর্থ অযোধ্যা মধ্যস্থতা, ৬ অগাস্ট থেকে দৈনিক শুনানি শুরু, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘‘কী করে জন্মস্থানকে বিচারশীল ব্যক্তি হিসেবে ধরা হতে পারে। এখনও পর্যন্ত দেবতাদের তা ধরা হয়েছে।''
এর উত্তরে পরাশরণ বলেন, ‘‘হিন্দু ধর্মে দেবতাদের ক্ষেত্রে কোনও জায়গাকেই পুজোর জন্য পবিত্র স্থান ধরা হবে তা নয়। নদী ও সূর্যকেও হিন্দুরা পুজো করে। এবং জন্মস্থানকেও বিচারশীল ব্যক্তি হিসেবে দেখা যেতে পারে।''
অযোধ্যা মামলায় ভগবান রামের জন্মস্থানকেও একটি পক্ষ হিসেবে দেখা গিয়েছে। পরে বেঞ্চ জানায়, ‘‘উত্তরাখণ্ড হাই কোর্ট জানিয়েছে, নদীদেরও বিচারশীল ব্যক্তি হিসেবে মামলায় একটি পক্ষ হিসেবে দেখা যেতে পারে।''
এরপর বেঞ্চ পরাশরণকে অন্য ইস্যুর বিষয়েও উপস্থাপনা করতে বলা হয়।
জন্মভূমির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে পরাশরণ সংস্কৃত একটি শ্লোক বলেন, ‘‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী।'' তারপর তিনি জানান, জন্মস্থান স্বর্গের চেয়েও মহান।
মুসলিমদের পক্ষে আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান বলেন, দু'টি ভিন্ন মামলা করেছে ‘রামলীলা বিরাজমান' এবং ‘নির্মোহী আখড়া' পরস্পর বিবদমান এবং একজনকে অনুমতি দিলে অন্যজনও তা পাবে।
তিনি প্রস্তাব দেন মুসলিম পক্ষকে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হোক এবং ওই দুই মামলার ক্ষেত্রে একটিকে আইনত সুযোগ দেওয়া হোক।
২০১০ এলাহাবাদ হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চোদ্দোটি আবেদন জমা পড়েছে। এর ফলে চারটি মামলা রুজু হয়েছে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছিল, ২.৭৭ একরের অযোধ্যার জমিটি তিনটি পক্ষকে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। সেই তিনটি পক্ষ হল রামলীলা বিরাজমান, নির্মোহী আখড়া এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ, যেটি ষোড়শ শতকে শিয়া মুসলিম মির বাকি নির্মাণ করিয়েছিলেন, সেটি ভেঙে দেওয়া হয়।