এখানে রইল রামমন্দির-বাবরি মসজিদ মামলা সম্পর্কিত ১০টি তথ্য:
১৫২৮ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ তৈরি হয়। হিন্দু সংগঠনের দাবি, একটি মন্দির ধ্বংস করে তার জায়গায় মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে। ১৮৫৩ সালে প্রথমবার এই জায়গাটিকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়। ১৮৫৯ সালে ইংরেজ প্রশাসন ওই জায়গাটিতে হিন্দু এবং মুসলিমদের প্রার্থনা জন্য ফেন্স লাগিয়ে দেয়, প্রায় ৯০ বছর ধরে এটি ছিল। ১৯৪৯ সালে প্রথমবার জায়গাটিকে নিয়ে মামলা হয় মসজিদের পাশে ভগবান রামচন্দ্রের মূর্তি লাগানোর পর।
১৯৮৪ তে রামমন্দির নির্মাণের জন্য একটি কমিটি তৈরি করে হিন্দু সংগঠন। তিন বছর পর, পাঁচ দশক পর মসজিদের গেট খোলার নির্দেশ দেয় জেলা আদালত, এবং “বিতর্কিত নির্মাণের” পাশে হিন্দুদের প্রার্থনার অনুমতি দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালে মন্দির নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় “বিতর্কিত নির্মাণ” সংলগ্ন জায়গায়।
.১৯৯০-এ তৎকালীন বিজেপি সভাপতি লালকৃষ্ণ আডবানি ওই জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের জন্য সমর্থন চেয়ে দেশজুড়ে রথযাত্রা বের করেন। বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার অভিযোগ ওঠে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে।
১৯৯২-এর ৬ ডিসেম্বর, হিন্দু সংগঠনের কর্মীরা মসজিদটি ভেঙে দেন। দেশজুড়ে তৈরি হয় সাম্প্রদায়িক হিংসা। ধ্বংসের ১০দিন পর, লিবারহেন কমিশন তৈরি করা হয় ঘটনারতদন্তে। ২০০৯-এ কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। তাতে নাম ছিল একে আডবানি, অটলবিহারী বাজপেয়ি এবং অন্যান্য বিজেপি নেতাদের, প্রায় ১৭ বছর পর শুরু হয় তদন্ত।
২০০৩ এর সেপ্টেম্বরে, একটি আদালত জানায় যে, সাতজন হিন্দু নেতা, তারমধ্যে কয়েকজন বিজেপি নেতা, বাবরি মসজিদ ধ্বংসে জন্য বিচারবিভাগের সামনে আসতে হবে। তবে তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী আডবানির বিরুদ্ধে কোনও চার্জ আনা হয়নি। এক বছর পর, উত্তরপ্রদেশের একটি আদালত জানায়, আদালতের দেওয়া ছাড় পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
বিজেপি নেতা মুরলি মনোহর জোশী এবং উমা ভারতী বিরুদ্ধে মামলার শুনানি শুরু করে লখনউ আদালত। জুনমাসে, মামলার শুনানি করা বিচারকদের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রায়দানের জন্য ৯ মাসের সময়সীমা দেওয়া হয়।
২০০২-এর এপ্রিলে, এলাহাবাদ হাইকোর্টের ৩ বিচারপতির বেঞ্চ, কার হাতে জায়গাটি থাকবে সেই মামলার শুনানি শুরু করে। ২০১০ এর সেপ্টেম্বরে, রায়দান করে এলাবাহাদ হাইকোর্টট। সেখানে বলা হয়, বাবরি মসজিদকে তিনভাগে ভাগ করা হবে, একটি যাবে নির্মোহি আখরা, একটি রামলালা এবং অপরটি থাকবে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের। একমাসের মধ্যে, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় হিন্দু ও মুসলিম সংগঠন।
২০১১ এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বেশীদিন নয়, শীর্ষ আদালত জানায়, এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় আশ্চর্যজনক।
সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তিন সদস্যের দল মধ্যস্থতায় ব্যর্থ হওয়ার পর, ৬ অগস্ট দৈনিক শুনানি শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
৪০দিন শুনানির পর, ১৬ অগস্ট দৈনিক শুনানি শেষ হয়। রায়দান স্থগিত করে দেওয়া হয় এবং ১৭ নভেম্বরের মধ্যে রায়দান হবে বলে জানানো হয়, সেদিন অবসর নেবেন প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনি পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের প্রধান।