এই বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন।
নয়াদিল্লি: কয়েক দশকের পুরানো অযোধ্যা মন্দির-মসজিদ বিবাদে (Ayodhya temple-mosque dispute) যুগান্তকারী রায় দানের পর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ (Chief Justice Ranjan Gogoi) এবং সংবিধান বেঞ্চের তার চারজন সহকর্মী দিল্লির বিখ্যাত তাজ মানসিং হোটেলে (Taj Mansingh hotel) নৈশভোজের পরিকল্পনা করেছেন, বলে সূত্রের খবর। এই বছরই অগাস্টে মধ্যস্থতাকারী প্যানেল কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার পরে বিচারপতি এসএ বোবদে, অশোক ভূষণ, ডিওয়াই চন্দ্রচুড় এবং এসএ নাজিরের সঙ্গে মিলে বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ৪০ দিন ধরে চলা এই মামলার দৈনিক শুনানি বাতিল করেন।
বিতর্কিত জমি দিতে হবে মন্দিরের জন্য, মসজিদের জন্য দেওয়া হবে ৫ একর জমি
আজ, শনিবার ১০৪৫ পৃষ্ঠার ওই রায়ে, শীর্ষ আদালত আদেশ দিয়েছে যে বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রাম মন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্টকে দেওয়া হবে, এবং অযোধ্যায় একটি মসজিদ তৈরির জন্য কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারকে একটি ‘উপযুক্ত' স্থানে পাঁচ একর জমির বরাদ্দ করতে বলা হয়েছে। সংবিধানের এই বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি রঞ্জন গগৈ আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন।
১৯৯২ সালে, উগ্র ডানপন্থীরা বাবরি মসজিদটি ভেঙে ফেলেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল যে, রামের ওই জন্মস্থানে একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এর পরেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান।
অযোধ্যা মামলায় কেন মুসলিমদের আলাদা করে জমি দেওয়া হল? রায়ে কী বলা হয়েছে?
আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে শনিবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানিয়েছে যে, মসজিদের নীচে একটি কাঠামো ছিল। তবে তা মন্দিরের কিনা সেসবের অবশ্য উল্লেখ নেই।
বিচারকরা অবশ্য বলেছেন যে, মসজিদ ধ্বংস করা অবৈধ। রায়ে বলা হয়েছে, “আইন প্রয়োগে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে আদালত যদি মসজিদে প্রার্থনা করা থেকে বঞ্চিত মুসলমানদের অধিকারকে উপেক্ষা করে, তবে ন্যায়বিচারে হবে না।"
অযোধ্যা মামলাটির অন্যতম অংশ মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড এই রায়কে ‘অন্যায্য' বলে অভিহিত করেছে। মুসলিম দলের আইনজীবী জাফরইয়াব জিলানি বলেছেন, “আমরা মনে করি এটি অন্যায্য... আমরা এই ন্যায়বিচারকে মানতে পারছি না। আমরা বিচারের সকল অংশের সমালোচনা করছি না।"
বিগত তিন দশকে এই জমি বিতর্কটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। ১৯৮০-র দশকে বিজেপি ছিল একটি নব্য রাজনৈতিক দল, সেখান থেকে বিজেপিকে দেশের বৃহত্তম দলে পরিণত করতে বড় ভূমিকা রয়েছে এই মামলার।