IAF পাঁচটি স্পাইস 2000 বোমা নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তানের বালাকোট জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে
হাইলাইটস
- জৈশ-এ-মোহাম্মদ-এর জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে ফেব্রুয়ারিতে হামলা হয়
- পুলবামা জঙ্গি হামলায় ভারতের ৪০ জন জওয়ান প্রাণ হারায়
- পাইলটরা জানিয়েছেন এই মিশন অসফল হওয়ার কোনো জায়গা ছিল না
গোয়ালিওর: ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বালাকোটের কাছে জৈশ-এ-মোহাম্মদ-এর জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে যারা হামলা চালিয়েছিলেন তাদের মধ্যেই স্কোয়াড্রন লিডার জানিয়েছেন যে ''আমরা এই মিশনে যাওয়ার আগে বেশ কিছু সিগারেট খেয়ে ফেলেছিলাম।''সেই সাথে তিনি জানান, ''আমরা সকলেই জানতাম যে, আমরা কোন মিশনে যাচ্ছি, তাই আমাদের মানসিক চাপও কম ছিল না।''
দুটি মিরাজ 2000 লড়াকু বিমানের পাইলটের মধ্যে একজন ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার, এই মিশনে তার ভূমিকা সম্পর্কে তিনি NDTV -র কাছে জানিয়েছেন। ১৯৭১ সালের পরে এইবার একটা নির্দিষ্ট হামলার উদ্দেশ্য নিয়ে পাকিস্তানের ভেতরে প্রবেশ করে ভারতীয় বায়ুসেনা।
NDTV -র কাছে তারা অনুরোধ করেছিলেন যেন, তাদের নাম কোনো ভাবেই সমানে না আসে। তাই এখানে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
অপর একজন স্কোয়াড্রন লিডার জানা যে, ''এই সম্পূর্ণ মিশন শেষ হতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লেগে গেছিল।'' এই দুই পাইলট নিজেদের লক্ষ্য অনুসারে স্পাইস 2000 স্যাটেলাইট গাইডেড বোমা নিক্ষেপ করেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি, ভারতীয় বায়ু সেনা (IAF) ১২ মিরাজ 2000 জেট নিযুক্ত করে। দুটি ভিন্ন ধরণের ইজরাইলী অস্ত্রের সাহায্যে জঙ্গিদের সুবিধা শেষ করে দেওয়াই ছিল ওনাদের লক্ষ্য। যাতে নিজেদের লক্ষ্যের গভীরে প্রবেশ করা যায়, সেই কথা মাথায় রেখেই স্পাইস 2000 এর গঠন করা হয়েছিল। নিজেদের লক্ষ্যে সফল হয়ে, যাতে তার ভিডিও করে তা পাঠানো যায়, সেই সমস্ত সুবিধা এখানে ছিল। সেখানে যে সমস্ত সুবিধা ছিল, তা শেষ করে দেওয়ার জন্যই অস্ত্রের প্রয়োগ করা হয়েছিল এবং প্ৰমাণ হিসাবে পাওয়া গেছে IAF -এর হামলার ভিডিও। ফেব্রুয়ারি মাসেই পুলবামা জঙ্গি হামলায় ভারতের ৪০ জন জওয়ান প্রাণ হারায়। কেউ পুলবামা হামলার সাথে যারা জড়িত তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার সংকল্প করেছিল ভারত।
ভারতীয় বায়ু সেনার মিরাজ 2000 -এর নিচে লাগানো স্পাইস 2000 উপগ্রহের সাহায্যে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
'লো ক্লাউড বেস' IAF হামলার দিনে 'ক্রিস্টল ম্যাজ' হাতিয়ার লঞ্চ হতে দেয়নি। যদিও যে ছয়টি লড়াকু বিমান এই কাজে লাগানো হয়েছিল তার মধ্যে পাঁচটি থেকে স্পাইস 2000 বোমা লঞ্চ করার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সাথে প্রতিটি বিমানই ছিল সশস্ত্র।
তবে ভারতীয় বায়ু সেনাদের এই হামলা কতটা প্রভাব ফেলতে পেরেছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন ওঠে। তখনই অন্য মিরাজের পাইলট জানান যে, '' 2000 যে নিজের লক্ষ্য সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে, তা নিয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই। '' স্যাটেলাইট ইমেজিং কম্পানি DigitalGlobe-র তোলা ছবি বহু আন্তর্জাতিক সাইটে দেখানো হয়েছে। তাতে এই জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গঠন দেখানো হয়। একজন পাইলট জানিয়েছেন, ''স্যাটেলাইট ইমেজরির রিজোলিউশন-এর সাহায্যে যা দেখানো হয়েছে, সেটিকে অস্ত্রের প্রবেশ বিন্দু হিসাবে সঠিক রূপে দেখানো সম্ভব হয়নি।'' তিনি জানিয়েছে, ''স্পাইস 2000 নিজের লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে না। হয়তো ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ছাদ কতটা বিধ্বস্ত হয়েছে, তা গোপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। ''
IAF -এর তরফ থেকে স্পাইস 2000 যে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছে, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই হামলার ৪৩ দিন বাদে এই হামলার যে ছবি সম্মুখে আসে তাতে জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কোনো হোস্টেল দেখা যায়নি।
এই মিশন প্রায় দু ঘন্টা ধরে চলে, এটি কি ছিল তাদের জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ মিশন, এই প্রশ্নের উত্তরে একজন পাইলট জানান, ''তা একটা মুহূর্ত বলে মনে হয়েছিল। কারণ আমাদের হাতে ছিল অনেক কাজ।'' এই ঘটনার পরে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া কি হবে, তাও ছিল একটা বিরাট প্রশ্ন। যদিও পাইলটরা জানিয়েছেন যে, এই বিষয়টি পাকিস্তানী রেডারের নজরে আসেনি।