প্রতি বছর পঞ্চাঙ্গ অনুসারে মাঘ মাসের শুক্ল পক্ষে পঞ্চমী তিথিতে খুবই আনন্দের সাথে বসন্ত পঞ্চমী (Basant Panchami 2019) পালন করা হয়।একে মাঘ পঞ্চমী (Magh Panchami) ও বলা হয়। এই বসন্ত ঋতুতেই গাছে গাছে মুকুলের সঞ্চার ঘটে। প্রকৃতি সেজে ওঠে বিভিন্ন ফুলের সাজে। ক্ষেতে দেখা যায় হলুদ সরষে ফুলের চাদর। কোকিলের মিষ্টি সুর ভরিয়ে তোলে পৃথিবীকে। এই বছর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধার সাথে ১০ ই ফেব্রুয়ারি বসন্ত পঞ্চমীর (Vasant Panchami 2019) উৎসব পালন করা হবে।.
শ্রীকৃষ্ণ বরপ্রদান করেছিলেন
এই তিথিতে প্রায় সারা ভারত জুড়ে বিদ্যা ও বুদ্ধির দেবী সরস্বতীর আরাধনা করা হয়।পুরাণে বর্ণিত একটি কাহিনী অনুসারে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেবী সরস্বতীর ওপর সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে বর প্রদান করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে, বসন্ত পঞ্চমীর দিনে তাঁর আরাধনা করা হবে। ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দিক থেকে সমস্ত বাচ্চাদের বিদ্যার জন্য এই দিনটিকে বিশেষ শুভ বলে মনে করা হয়। সেই কারণে এই দিনে বাচ্চাদের হাতেখড়ি দেওয়ানো হয়। বাচ্চাদের প্রথম অক্ষর লিখতে শেখানো হয়। অন্ধ্রপ্রদেশে একে বিদ্যারম্ভের অনুষ্ঠান বলে মনে করা হয়। সেই কারনে সরস্বতী পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়।
কেন পরবেন হলুদ পোশাক
বসন্ত পঞ্চমীর দিনে যুবক-যুবতী ও মহিলাদের হলুদ রঙের পোশাক পরা উচিত।ভারতের বিভিন্ন গ্রামের পুরুষেরা এই দিন হলুদ রঙের পাগড়ি বাঁধে। হিন্দু সংস্কৃতি অনুসারে হলুদ রঙকে খুবই শুভ রঙ বলে মনে করা হয়। এই রঙ সমৃদ্ধি, উর্জা এবং সৌম্য উষ্মের প্রতীক।একে বাসন্তী রঙও বলা হয়। ভারতে যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ পত্রে সবার আগে হলুদ লাগানো হয়।
হোলি, ভারতের কয়েকটি বড়ো পর্বের মধ্যে একটি, বসন্ত পঞ্চমীর দিন থেকেই এর আনুষ্ঠানিক সূত্রপাত ঘটে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে আজকের দিনে অনেকেই একে অপরকে আবির লাগায়।দলের আগের দিন যে হলিকা দহন বা নেড়া পোড়া করা হয়, তার জন্য এই দিন থেকেই লাঠি-পিতা জোগাড় করার কাজ শুরু হয়ে যায়। ভারতের অনেক স্থানে এই দিনে ঘুড়িও ওড়ানো হয়। যদিও ঘুড়ির সাথে বসন্ত পঞ্চমীর কোনো সম্পর্ক নেই, তবে যেহেতু পরিবেশের আবহাওয়া খুব ভালো থাকে, সেই কারণেই এইদিনে ঘুড়ি উড়িয়ে আনন্দ করা হয়।
ভারতের যেকোনো অনুষ্ঠানই খাওয়া দাওয়া ছাড়া অসম্পূর্ণ। বসন্ত পঞ্চমীর দিনে বিশেষ কিছু মিষ্টি ও রান্নার আয়োজন করা হয়। বাংলার প্রায় বেশির ভাগ ঘরেই নলেন গুড়ের নাড়ু ও গোটা সিদ্ধের ধুম দেখা যায়।পাঞ্জাবিরা এইদিনে সর্ষে শাক ও ভুট্টার আটা থেকে তৈরী রুটি খায়। সেই সাথে পোলাও বানানো হয়।