অমিত শাহর (Amit Shah) টুইটের পর দেশের অন্য বহু রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও দেখা গিয়েছে অসন্তোষ।
হিন্দি দিবসে বিজেপি (BJP) সভাপতি অমিত শাহর (Amit Shah) টুইটের পর দেশের অন্য বহু রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গেও দেখা গিয়েছে অসন্তোষ। শাসক দল তৃণমূলের (TMC) তরফে হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ তোলা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে অমিতের টুইটের ফলে তৈরি হওয়া বিতর্কে খানিক অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপি। এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘আসলে আমরা একে সরাসরি সমর্থন বা বিরোধিতা কোনওটাই করতে পারছি না। যদি সমর্থন করি, তাহলে আমাদের দেগে দেওয়া হবে বাঙালি ও বাংলা ভাষা বিরোধী বলে। এর ফলে রাজ্যে আমাদের ক্রমশ বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা প্রভাবিত হবে। পাশাপাশি অমিত শাহজির মন্তব্যের বিরোধিতা করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।''
অমিত শাহর হিন্দি নিয়ে মন্তব্যের প্রতিবাদে মুখর বাংলার বিশিষ্টরা
গত শনিবার হিন্দি ভাষা দিবসে অমিত শাহ তাঁর টুইটে লেখেন, ‘‘বর্তমানে যদি এমন একটিও ভাষা থাকে যা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে, তবে তা হল হিন্দি ভাষা। এই ভাষাটি ভারতের সর্বাধিক ব্যবহৃত এবং সহজবোধ্য ভাষা।'' হিন্দিকে দেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার প্রস্তাব রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাজ্যের আর এক সিনিয়র বিজেপি নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা বাংলায় আসন পেয়েছি প্রথম ছ'টি দফায়। কিন্তু সপ্তম দফার ভোট থেকে আমরা একটাও আসন জিততে পারিনি বাঙালি-অবাঙালি ইস্যুর কারণে।'' ১৪ মে তৃণমূল অভিযোগ আনে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দিয়েছে বিজেপি সমর্থকরা। তাঁর মতে, এই ভাঙচুরকে বাংলার সংস্কৃতির উপরে আঘাত বলে প্রতিবাদে মুখর হয় শাসক তৃণমূল। সেটাই ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় ভোট না পাওয়ার, মত গেরুয়া শিবিরের ওই নেতার।
‘‘কোনও শাহ, সুলতান পারবেন না'': হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে কমল হাসানের প্রতিবাদ
রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ পিটিআইকে জানান, ‘‘এর মধ্যে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। উনি (অমিত শাহ) কেবল বলেছিলেন, একটি ভাষা থাকা উচিত যেটি ভারতের পরিচয়কে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে ও দেশকে একজোট করবে। উনি অন্য ভাষার বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। বিরোধীরা এটাকে ইস্যু বানিয়ে তুলতে চাইছে।''
বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহাও দিলীপ ঘোষের মতোই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। বিজেপি না বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে, না বাংলা সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। বরং তৃণমূল উর্দুকে বাংলার সীমান্ত অঞ্চলে চাপিয়ে দিতে চাইছে মুসলিম সম্প্রদায়কে তুষ্ট করতে।''
তৃণমূল অমিত শাহর মন্তব্যের পর জানিয়েছে, ‘‘ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে।'' জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ‘‘তৃণমূল বাংলায় এসব করতে দেবে না।''
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান করি। আমরা অনেক ভাষা শিখতে পারি। কিন্তু আমাদের মাতৃভাষাকে ভোলা উচিত নয়। বিজেপি দেশে হিন্দির চাপিয়ে দিচ্ছে। আমাদের এর প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গর্বিত।''
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পায় ২২টি আসন। বিজেপি পায় ১৮টি আসন। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ৩৪টি আসন। আর বিজেপি পেয়েছিল ২টি আসন।
আপাতত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে দু'দলই।
(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)