Doctor strike: বাংলার চিকিৎসকদের সমর্থনে প্রতিবাদে সামিল দেশের অন্য প্রান্তের চিকিৎসকরাও
নয়াদিল্লি:
পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ও প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়ে নয়াদিল্লি, মুম্বই ও হায়দরাবাদের চিকিৎসকরা একদিনের কর্মবিরতির (Doctor strike) ডাক দিয়েছেন। নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এর চিকিৎসক দেখা গিয়েছে হেলমেট ও ব্যান্ডেজ পরিহিত অবস্থায় রোগী দেখতে আসতে। মঙ্গলবার থেকে বাংলার চিকিৎসকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। এক রোগীর আত্মীয়স্বজনের হাতে এক জুনিয়র চিকিৎসকের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে তাঁরা ওই ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারিকে না মেনে চিকিৎসকদের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যতক্ষণ না তাঁরা নিরাপত্তা পাচ্ছেন, তাঁরা কাজে ফিরবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ওই ধর্মঘটে ইন্ধন জোগানের জন্য দায়ী করেছেন। অভিযোগ এনেছেন, তারা ‘হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি’ করছে।
রইল চিকিৎসকদের প্রতিবাদের ১০টি আপডেট:
AIIMS -এর রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন-এর তরফ থেকে সারা দেশের চিকিৎসকদের প্রতীকী ধর্মঘটে সামিল হওয়ার ডাক দিয়েছে।
AIIMS-এর মেডিক্যাল সুপারিটেন্ডেন্ট ডিকে শর্মা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘এমার্জেন্সি পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে। রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা এমার্জেন্সি পরিষেবা দেবেন অন্যদিনের মতোই।'' তিনি বলেন, প্রসূতি বিভাগেও সব স্বাভাবিক থাকবে। তবে আউটডোর বিভাগ ও ডায়াগনস্টিক বিভাগের পরিষেবা আজ প্রধানত বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (IMA) তরফ থেকে তাদের সমস্ত শাখার সদস্যদের প্রতিবাদে সামিল হতে ও কালো ব্যাজ পরে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকদের প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করতে নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি এই ধরনের হিংসা রদে কোনও কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছেও আবেদন জানিয়েছে তারা।
দিল্লি মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনও রাজ্যব্যাপী চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
AIIMS-এ আসা এক রোগীর আত্মীয় জানিয়েছেন, ‘‘আমার মায়ের ডায়ালিসিস আজ হওয়ার কথা। আমাদের বলা হল চলে যেতে এবং অন্য কোথাও থেকে এটা করিয়ে নিতে।''
মহারাষ্ট্র অ্যাসোসিয়েশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টরস-ও আজ রাজ্য জুড়ে একদিনে ধর্মঘট ডেকেছে। ওই অ্যাসোসিয়েশনের এক চিকিৎসক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আমরা আজ সকাল আটটা থেকে বিকে পাঁচটা পর্যন্ত আউটডোর পরিষেবা ও পড়াসোনা বিষয়ক পরিষেবা বন্ধ রেখেছি। এমার্জেন্সি পরিষেবা বিঘ্নিত হবে না।''
হায়দরাবাদে চিকিৎসকরা নিজামস ইনস্টিটিউট অপ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ একটি প্রতিবাদ সবার আয়োজন করেছেন।
সোমবার থেকে চলা জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্মঘটের ফলে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। গত চার দিন ধরে এমার্জেন্সি বিভাগ, আউটডোর বিভাগ ও প্যাথলজিক্যাল বিভাগের পরিষেবা মিলছে না। পাওয়া যাচ্ছে না ব্যক্তিগত চিকিৎসা পরিষেবাও।
কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কাজে ফিরতে। যে চিকিৎসকরা কাজে ফিরতে চান না, তাঁরা হস্টেল ছেড়ে দিন এই আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওরা বহিরাগত। সরকার ওদের কোনওভাবেই সমর্থন করবে না। যে চিকিৎসকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন আমি তাঁদের নিন্দা করছি। কাজের সময় পুলিশ কর্মীরা মারা যান। কিন্তু পুলিশরা তো ধর্মঘটে বসেন না।'' তিনি বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে ওই ধর্মঘটে ইন্ধন জোগানের জন্য দায়ী করেছেন। অভিযোগ এনেছেন, তারা ‘হিন্দু-মুসলিম রাজনীতি' করছে।
রোগীর আত্মীয়দের হাতে চিকিৎসকদের নিগ্রহের ঘটনা গোটা দেশেরই এক নিয়মিত ঘটনা। এপ্রিলে নয়াদিল্লির RML Hospital-এ এক রোগীর আত্মীয়ের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় এক মহিলা চিকিৎসককে চড় মারার জন্য। মাসের গোড়ায় এক সতেরো বছরের কিশোর ও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। মহারাষ্ট্রের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরটির বাবা মারা গেলে এক চিকিৎসককে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে তারও তার বন্ধুর বিরুদ্ধে।
Post a comment