আমফানের মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য।
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমফান (Cyclone Ampun)। আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল রাজ্যের ৩ লক্ষ মানুষকে। তাঁদের মধ্যে ২ লক্ষ মানুষ দক্ষিণ ২৪ পরগনার। বাকিদের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুরের যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৪০ হাজার ও ১০ হাজার। সবাইকে বুধবার সকাল থেকে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুর্যোগ কেটে যাওয়া পর্যন্ত বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সারা রাত নিজের অফিসেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিনই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং সুপার সাইক্লোন আমফানের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এই সুপার সাইক্লোনে বৃহৎ আকারে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সোমবার এটি সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়েছিল এবং মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এটি পারাদ্বীপের ওড়িশা উপকূল থেকে প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার দূরে এবং রাজ্যের দিঘা থেকে ৬৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল।
গত দুই দশকে বঙ্গোপসাগরের উপর দ্বিতীয় সুপার সাইক্লোন হতে চলেছে। বুধবার যখন এটি রাজ্যে আঘাত করবে, আমফানের গতি থাকবে ১৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
আবহাওয়া অফিস মঙ্গল ও বুধবার বাংলা ও ওড়িশার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। উপকূলীয় ওড়িশায় ইতিমধ্যেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে যা আজ রাতের মধ্যে আরও তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সিকিম, অসম এবং মেঘালয়ের অংশেও আগামীকাল এবং বৃহস্পতিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার সমুদ্রের দিকে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের মতে এই ঝড়ের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা। আমফানের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি এবং নদিয়া জেলার। কাঁচা ঘর, পুরনো পাকা বাড়ি, উড়ন্ত জিনিস, রেল ও সড়ক যোগোযোগ, ফসল, বাগান, নারকেল গাছ সহ সব ধরনের বড় গাছ, বড় জাহাজ, নৌকা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও তারের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে এই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে।
ওড়িশায় এই ঝড় মূলত জগৎসিংহপুর, কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, বালাসোর, জাজপুর, ময়ূরভঞ্জ এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাবে।