This Article is From Jun 26, 2018

অকালে কলকাতার যমজ ভাইবোনের প্রাণ কেড়ে নিলো মন্দারমনি সমুদ্র সৈকত

যমজ ভাইবোনের মৃত্যু মন্দারমনি সমুদ্র সইকতের নিরাপত্তাকে এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক ব্যর্থটাকে আবারও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

ওই যমজ ভাইবোন কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী

কলকাতা:

কলকাতা থেকে 150 কিলোমিটার দূরে মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে কলকাতার দুই যমজ ভাইবোন তলিয়ে গেল। মন্দারমনি সমুদ্র সইকত অত্যান্ত বিখ্যাত হলেও গত কয়েক বছরে ঘাতক হয়ে উঠেছে।

শেষবার 2017 সালের মে মাসে হাওড়ার দুই যুবক সেখানে তলিয়ে যায়। এই যমজ ভাইবোনের মৃত্যু মন্দারমনি সমুদ্র সইকতের নিরাপত্তাকে এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনিক ব্যর্থটাকে আবারও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।   

2016 সালের সেপ্টেম্বর মাসে, তিনজন আইটি প্রফেশনাল মন্দারমনিতে তলিয়ে যায়।  

এই ঘটনার ঠিক একমাস আগে অগাস্ট মাসে মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে বেআইনিভাবে গাড়ি চালিয়ে রেস করার সময় সংঘর্ষে তিন ছাত্রের মৃত্যু হয়। ভারতে একমাত্র মোটরেবল সৈকত হল মন্দারমনি।

2016 সালের মে মাসে, এক ব্যক্তি সমুদ্র সৈকতে বেআইনিভাবে নিজের গাড়ি চালাবার সময় গাড়ি উল্টে গিয়ে মারা যান।

2015 সালের জুন মাসে, মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে একজন ট্যুরিস্ট প্যারাসেলিং করার সময় 100 ফুট উঁচু ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগে মারা যান। যে জিপের সঙ্গে তিনি বাঁধা ছিলেন, সেটিও সমুদ্র সৈকতের দিকে তীব্র বেগে ধেয়ে আসছিল বলে জানা গিয়েছিল। প্যারাসিলিং কোম্পানি বেসরকারি উদ্যোগে চলছিল বলে জানা গিয়েছিল।

জলে বিভিন্ন খেলাধূলা, হোটেল এবং যেভাবে মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে গাড়ি চলাচল করে সমস্তটাই কোস্টাল রেগুলেশন জোনের আইন বিরুদ্ধে ঘটে।  

ওই যমজ ভাই বোন কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী।

অর্কপ্রভ চক্রবর্তী ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র এবং আলোলিকা বাংলা সাহিত্যের ছাত্রী। তাঁরা মালদার বাসিন্দা। মা, বাবাকে না জানিয়ে তাঁরা মন্দারমনি ঘুরতে গিয়েছিলেন।

রবিবার, এই যমজ ভাইবোন এবং তাঁদের আরও দুই বন্ধু সকাল এগারোটা নাগাদ সমুদ্রের ধারে উপস্থিত হয়। তাঁদের চারজনের মধ্যে একজন মেয়ে জলে নামেনি। বাকী তিনজন জলে নামে এবং প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশের বক্তব্য অনুসারে হঠাৎ আসা একটা ঢেউয়ে তাঁরা নিমেষে তলিয়ে যায়।

স্থানীয় মাঝি এবং একটা বেসরকারি জলজ বিভিন্ন খেলাধূলার দলের বিভিন্ন সদস্যরা মিলে তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে গেলে যমজ দুই ভাইবোনকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশীরভাগ ট্যুরিস্ট অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় জলে নামার ফলেই দুর্ঘটনা বেশী ঘটে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে ওই ভাইবোনের কারও শরীরেই অ্যালকোহল পাওয়া যায়নি।   

মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে এই বছর প্রথম এই ভাইবোনের প্রাণ হারালেও, প্রতিবেশী দিঘার সমুদ্র সৈকতে এই মাসে কমপক্ষে চার জন ট্যুরিস্টের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

দুটো ভিন্ন মৃত্যুর ঘটনায় দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, থার্মোকল ভর্তি বৃহদাকৃতি বেলুন দিয়ে ট্যুরিস্টরা কতদুর পর্যন্ত যেতে পারবে তার সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। বেলুনের সীমা পেরিয়ে গেলে ট্যুরিস্টদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে নতুন নিয়মে জানানো হয়েছে।

কিন্তু এই প্ল্যান কার্যকর করার জন্য ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্টে দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর এবং মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতে সুরক্ষা খাতে 77 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।  

45টা বেলুনের জন্য খরচ হবে মোট 46 লাখ টাকা। এবং 20 ফুট লম্বা এবং 54 ইঞ্চি ব্যাসের হলুদ এই বেলুন সমুদ্রের মাঝ বরাবর সীমানা নির্দেশের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে।

সেগুলো যদি ইতিমধ্যে যথাস্থানে থাকতো, এই যমজ ভাইবোনকে হয়তো অকালে এই ভাবে মারা যেতে হত না।

.