This Article is From Dec 29, 2018

অন্য প্রেমের গল্প- ৭২ বছর পরে ফের স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ ১৯৪৬ এর কৃষক আন্দোলনের নেতার

তবু চোখ ভিজে যায়। কুয়াশার মধ্যে ৭২ বছর পর যখন কেউ কাউকে ফিরে পান, তখন আনন্দে মাঝে মাঝে কাঁদতেও হয়।

অন্য প্রেমের গল্প- ৭২ বছর পরে ফের স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ ১৯৪৬ এর কৃষক আন্দোলনের নেতার

বিবাহের মাত্র দশ মাস পার করেই, নারায়ণান ও তাঁর বাবা থালিয়ান রমন নাম্বিয়ার, যিনি কাভুম্বাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যান

কান্নুর:

“জীবন গিয়েছে চলে কুড়ি কুড়ি বছরের পার-

তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!.......

কুড়ি বছর পরে সেই কুয়াশাই পাই যদি হঠাৎ তোমারে!”

২০ বছরে জীবন কতখানি গতি পায়? কতখানিই বা স্তব্ধ হয়? অনেকখানি....আর যদি সময়টা হয় ৭২ বছর? ৭২ বছর ধরে কি অপেক্ষা বেঁচে থাকে? মানুষের প্রতি মানুষের প্রেম, অথমা স্নেহ, বা সামান্যটুকু স্মৃতিও বেছে থাকে? ১৯৪৬ সালের পর যদি ফের প্রিয় মানুষের সঙ্গে ২০১৮ সালে দেখা হয়ে যায়? তাকে অলৌকিক বলা চলে না কি অপার্থিব? একি মুহূর্ত নাকি, আসলে এটাই জীবন!

১৯৪৬ সাল, স্বাধীনতার ঠিক আগের বছরে কেরলের কাভুম্বাইয়ের গ্রামে সহিংস কৃষক সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য জেলে যান ই কে নারায়ণান নাম্বিয়ার। ৭২ বছর পরে, প্রৌঢ় এই মানুষের সাথে আবার দেখা হয়ে গিয়েছে তাঁর প্রথম স্ত্রীর। এমন মোলাকাতে চোখের জলই তো একমাত্র ভাষা। শান্তভাবে বসে চোখের জল মোছা ছাড়া ৮৯ বছরের সারদা আর ৯৩ বছরের নারায়ণানের আর কীই বা করার আছে?

ত্রিপুরায় বিদ্যুতের খুঁটির নীচ থেকে বেরোল আগ্নেয়গিরির লাভা জাতীয় পদার্থ, আতঙ্কে গ্রামবাসী

কারো বিরুদ্ধে কোনো রাগ পুষে নেই সারদা। ৭২ বছরের দীর্ঘতম সময়ের অচেনা বাঁকে প্রথম স্বামীকে খুঁজে পেয়ে সারদা বলেন, “আমি কারো উপর তো রেগে নেই!”

“তাহলে চুপ কেন?” যেন কথা কও, কথা কও বলে ওঠে চতুর্পার্শ্ব? “কিছু বলছ না কেন তবে?" নারায়ণন বলে চলেন। শান্তভাবে মাথা নত করে বসে থাকেন বলিরেখাময় চোখের দুই কোটর।

বিয়ের সময় ১৩ বছর বয়স ছিল সারদার। নারায়ণানের তখন ১৭।

বিবাহের মাত্র দশ মাস পার করেই, নারায়ণান ও তাঁর বাবা থালিয়ান রমন নাম্বিয়ার, যিনি কাভুম্বাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন, আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যান। সহিংস আন্দোলনে যোগ দেওয়ার অভিযোগে দুই মাস পর তাঁরা ধরা পড়েন।

রমণ ও নারায়ণানের সন্ধানে যখন তখন সারদার ঘরে ঢুকে পড়ত মালাবার স্পেশ্যাল পুলিশ। নাবালিকা বধূটিকে তাই পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাপের বাড়িতে। নারায়ণনের ভাগ্নে মধু কুমার সাংবাদিকদের বলেন, "তাঁদের ঘর ভাংচুর করে আগুনে পুড়িয়েও দেওয়া হয়।”

আট বছরের জন্য নারায়ণানকে কারাগারে পাঠানো হয়। কন্নুর, ভিয়য়ুর ও সালেমে তিনটি কারাগারে তিনি দফায় দফায় থাকেন। মধু কুমার বলেন, “তাঁর বাবাকে সালেমের কারাগারেই ১৯৫০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি গুলি করে হত্যা করা হয় এবং কৃষক সংগ্রামের জীবন্ত কিংবদন্তী নারায়ণানের শরীরের ২২ টি বুলেট শেল ঢুকে যায়, যার মধ্যে তিনটি সরানো যায় নি।”

নববর্ষেই ফল ঘোষণার সম্ভাবনা; রবিবার হাসিনা ও হোসেনের লড়াইয়ে প্রস্তুত বাংলাদেশ

কয়েক বছর পর, সারদার পরিবার মেয়েকে অন্য এক ব্যক্তির কাছে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৫৭ সালে মুক্তি পাওয়ার পর নারায়ণানও আবার বিয়ে করেন।

অনেক বছর পর, সারদার পুত্র ভার্গবন, পেশায় জৈব কৃষক, নারায়ণানের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেলেন হঠাতই । যখন তাঁদের পারিবারিক ইতিহাস নিয়ে আলোচনা চলছিল, তখনই তিনি বুঝতে পারেন দুই পরিবারের সম্পর্ক রয়েছে। তারপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এত কাল পরে এই দম্পতির আবার যদি দেখা করানো যায়?

একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়, বিপত্নীক নারায়ণান, তাঁর কিছু আত্মীয়ের সাথে পারসীনিকাদাভুতে ভার্গবনের বাড়িতে সারদাকে দেখতে আসেন। প্রথমদিকে, ভার্গবন বলেন, তাঁর মা বাইরে বেরিয়ে এসে নারায়ণানের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হন না, কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ পর তিনি রাজি হয়ে যান। ৭২ বছর পরে ফের উস্কে ওঠে এককালের স্মৃতি, দশ মাসের সংসার যাপনের কিছুই কি মনে পড়ে আর? তবু চোখ ভিজে যায়। কুয়াশার মধ্যে ৭২ বছর পর যখন কেউ কাউকে ফিরে পান, তখন আনন্দে মাঝে মাঝে কাঁদতেও হয়।

ভার্গবনের পরিবার নারায়ণনের জন্য একটি 'সাদ্য' (দুপুরে বিস্তারিত খাবার) আয়োজন করেন এবং দুই পরিবার শীঘ্রই ফের দেখা করার প্রতিশ্রুতি দেন। সারদাও ৩০ বছর আগে বিধবা হন। তাঁর ছয় সন্তানের মধ্যে মাত্র চারজন জীবিত। নারায়ণানের কন্যা শান্তা কাভুম্বাই, "ডিসেম্বর ৩০" নামে কাভুম্বাই কৃষক সংগ্রামের উপর একটি উপন্যাসও লিখেছেন।

এলিয়েন দেখতে পেয়েছেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রীকে মেল, এক ব্যক্তির

১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে এই জেলার কাভুম্বাই গ্রামের লোকেরা 'পুনাম' চাষের দাবি তোলে ধরল। এটি স্থানান্তর কৃষির একটি প্রকার। আন্দোলন দমনে পুলিশ নামলে কৃষকদের সশস্ত্র বাহিনী তা প্রতিরোধ করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাঁচজন কৃষক মারাও যান।



(এনডিটিভি এই খবর সম্পাদনা করেনি, এটি সিন্ডিকেট ফিড থেকে সরাসরি প্রকাশ করা হয়েছে।)
.