This Article is From Jan 01, 2020

সিএএ নিয়ে মিথ্যা প্রচার, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতায় পথে নামবে বিজেপি

কারণ, ২০২১-এ বিধানসভা ভোটের আগে এই আইন প্রণয়নে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে যথেষ্ট অক্সিজেন দেবে বলে মনে করে তারা।

সিএএ নিয়ে মিথ্যা প্রচার, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরোধিতায় পথে নামবে বিজেপি

বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে মাত্র একটাই পদযাত্রা করেছে

কলকাতা:

উদ্বাস্তুদের কাছে টানতে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) বিরোধিতায় পথে নামছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, অনবরত সিএএ নিয়ে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল। এই রাজনৈতিক কৌশলের বিরোধিতা করে আগামী দিনে একাধিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সে রাজ্যে আয়োজন করা হবে, জানিয়েছে বিজেপি। সূত্রের খবর, তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়, নাগরিক সমাজ আর পড়ুয়াদের সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে যথেষ্ট বিব্রত গেরুয়া শিবির। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দল সে রাজ্যে একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচির আয়োজন করেছে। খোদ দলের সুপ্রিম কলকাতায় এযাবৎকাল ছ'টি পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। প্রয়োজনে "আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে এআরসি (NRC), সিএএ (CAA ) হবে", হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

ফলে তাঁর এই প্রবল বিরোধিতার সামনে রুখে দাঁড়াত পাল্টা পথে নামবে বিজেপি, সে দলের সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। কারণ, ২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে এই আইন প্রণয়নে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে যথেষ্ট অক্সিজেন দেবে বলে মনে করে তারা। 


ঠিক কী কী কর্মসূচি নেওয়া হবে?এ প্রশ্নের জবাবে বিজেপির এক রাজ্য নেতৃত্ব বলেছেন, "মানুষের মন ভয় দূর করতে ও বিভ্রান্তি সরাতে আমরা একাধিক কর্মসূচি নিয়েছি। গোটা এই মাস (জানুয়ারি) জুড়ে আমরা চেষ্টা করব, যত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়। সে ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেতও দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব"। যদিও বিজেপির এই উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, এখন পথে নেমে কিছুই হবে না। ইতিমধ্যে মানুষ পথে নেমে বিভাজনের এই বিল খারিজ করে দিয়েছে বলে সুর চড়িয়েছেন তিনি। 

সংসদে সিএএ বিল পাশ এবং তার আইনে রূপান্তর, এই প্রক্রিয়ার পরে বিজেপি কলকতায় কেন্দ্রীয়  মন্ত্রী জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে একটাই পদযাত্রা করেছে। কিন্তু এবার আরও আঁটঘাট বেঁধে নামতে চাইছেন দিলীপ ঘোষরা। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এনআরসি নিয়ে বিজেপির কর্মসূচিগুলোতে কোনও শব্দ খরচ করা হবে না। যাতে এ নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে বিরোধীরা, সেটাই উদ্দেশ্য।


এবিষয়ে দলের কেন্দ্ৰীয় স্তরের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন," আমরা সিএএ প্রসঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছতে সব দিকে যাব। নিজের ভোটব্যাংকের স্বার্থে মমতা বন্দোপাধ্যায় এই আইনের বিরোধিতা করছেন। আর চাইছেন উদ্বাস্তুরা যাতে নাগরিকত্ব না পায়। কিন্তু আমরা সেটা হতে দেব না, তৃণমূল কংগ্রেসের বিভ্রান্তি ছড়ানোর যে রাজনীতি, তার প্রবল বিরোধিতা করব। আমরা জানি সিএএ'র পক্ষে প্রচুর মানুষ আছেন', এদিন বলেন তিনি। জানা গিয়েছে, বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার এবং রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু, গোটা এই প্রচার কর্মসূচির দায়িত্বে। প্রায় ২ লক্ষ দলীয় কর্মীকে  'ডোর টু ডোর' প্রচারের জন্য প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। সেই প্রশিক্ষিত কর্মীদের মধ্যে থেকে আবার ২০০০০ জনকে ব্যবহার করা হবে বিশেষ এলাকার প্রচারের দায়িত্বভার সামলাতে।তাঁরা মানুষকে সিএএ কিংবা এনআরসি ফর্ম পূরণের পদ্ধতিও শিখিয়ে দেবেন, বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এই কর্মসূচিতে থাকছে সেমিনার, পথনাটিকা, পথসভা, পদযাত্রাও। 


এবিষয়ে সায়ন্তন বসু বলেন, 'আমরা কয়েক কোটি পরিবারের দ্বারস্থ হব। পাশাপাশি উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকাগুলি আমরা চিহ্নিত করেছি। সেই জায়গায় গিয়ে প্রচার হবে।  মানুষকে বলা হবে, এই আইন নাগরিকত্ব কাড়তে না, বরং উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতেই প্রণয়ন করা হচ্ছে। 


দলীয় সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গে ৮০টি বিধানসভা আসন হিন্দু অধ্যুষিত। ওই আসনে বড় জয় পেতেই এবার কোমড় বাঁধছে বিজেপি। তবে, বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিআইএম-এর অভিযোগ, '২০২১ সালের ভোটার আগে তীব্র মেরুকরণের রাজনীতিতে ভোট প্রচার করবে টিএমসি আর বিজেপি। তাই তাঁদের সিএএ আর এনআরসি নিয়ে পক্ষে এবং বিপক্ষের এই লড়াই অশনি সঙ্কেত।'

.