আপাতত এই বিষয়ে মুখ বন্ধ 'জল' শোভনের (ফাইল ছবি)
কলকাতা: 'দিদি' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ভাইফোঁটা নিতে গিয়েছিলেন 'আদরের কানন' শোভন চট্টোপাধ্যায়। পরের দিন থেকেই নাকি তাঁকে ফের ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ("Y-plus" category security) দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। এই গুঞ্জনে আপাতত তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। শাসকদলের (Trinamool Congress) নেতা-মন্ত্রীদের মতে, ঘরে ফেরার পুরস্কার হিসেবে এই বিশেষ নিরাপত্তা পেতে চলেছেন প্রাক্তন মেয়র। তবে কাননে পদ্ম ফুটবে না ঘাসফুল, তা নিয়ে এখনও কোনও উচ্চবাচ্য করেননি শোভন (BJP leader Sovan Chatterjee)।
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বিধানসভা উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ করানোর দাবি বিজেপির
এবিষয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, সদ্য সদ্য জঙ্গি হামলায় জম্মু ও কাশ্মীরে বাংলার পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শোভনও তৃণমূল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের কর্মী বা শ্রমিক। তাই হয়ত বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবে সরকার এই বিশেষ নিরাপত্তার আয়োজন করেছে। তবে শাসকদল এবং বিরোধী শিবির শোভনের অবস্থান নিয়ে দো-টানায় ভুগলেও রাজ্যের খাদ্যসরবরাহ মন্ত্রী এবং প্রবীণ তৃণমূল মেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, শোভনের ঘরে ফিরছেন। এব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। প্রসঙ্গত, ১৪ অগাস্ট বিজেপি-তে যোগদানের পর রাজ্যের দেওয়া এই বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শোভন। বদলে কেন্দ্রের কাছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি করেছিলেন তিনি। কিন্তু, শোভনের আবেদনে কর্ণপাত করেনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক। এরপরেই ভাইফোঁটা মিটতে তিনি ফিরে পান তাঁর ছেড়ে যাওয়া ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এদিকে দিদির হাতে ভাইফোঁটা নেওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়ালেও কিছু তৃণমূল নেতা অবশ্য সেই জল্পনা নস্যাৎ করে বলেছেন, উৎসবের সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই। তবে ১৪ অগাস্টে শোভন-বৈশাখে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিলেও সেখানকার কোনও অনুষ্ঠান বা কাজে তাঁদের অংশ নিতে দেখা যায়নি। একথাও অস্বীকার করতে পারছে না শাসকদল। এমনকি, সেপ্টেম্বরে বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা কলকাতায় এলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করেননি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র।
রাজ্যের আগামী উপ নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, আবেদন রাজ্যপালের
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই নাকি নানাভাবে অপমানিত তাঁর ভাই কানন। একাধিকবার শোভন নাকি একথা জানিয়েওছেন। মমতার এই কথায় সায় রয়েছে দলের বাকি নেতাদেরও। তাঁদের কথায়, শোভন বারেবারে তাঁদের কাছে ঘরে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, বিজেপি-তে যোগ দিয়ে তিনি ভালো নেই। তাই দিদির হাতে ফোঁটা নিয়ে সেই শুভ কাজে ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টাকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই। যদিও বিজেপি-ত্যাগের কথা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে জানাননি শোভন।
এপ্রসঙ্গে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বরাবরই স্নেহের পাত্র ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজনীতিতে হাতেখড়ি, তাঁর উত্থান---সব বিষয়েই রয়েছে দিদি-র হাত। লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই সুম্পর্কে কালো ছায়া ফেলেছিল একাধিক ঘটনা। তারপরেই ২০১৯-র নভেম্বরে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।